Home > রাজনীতি > আ.লীগের এমপির পিএস বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক!

আ.লীগের এমপির পিএস বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক!

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এবাদুল করিম বুলবুলের একান্ত সচিব (পিএস) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন স্থানীয় বিএনপি নেতা মুক্তার হোসেন শিকদার। যার প্রভাবে অতিষ্ঠ সেখানকার আওয়ামী লীগ নেতারা। কিন্তু পিএস মুক্তার এমপি বুলবুলের আস্থাভাজন হওয়ার কারণে কেউ প্রকাশ্যে কথা বলতে আগ্রহী না।

সূত্র জানিয়েছে, জেলার নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক মুক্তার হোসেন শিকদার। বিএনপি জোট সরকারের আমলে স্থানীয় সলিমগঞ্জ ইউপিতে শিকদার খ্যাত এই মুক্তার হোসেন শিকদার। তার নিয়ন্ত্রণে ছিল পুরো নবীনগর পশ্চিম অঞ্চলে বিএনপি। শিকদারের প্রভাবে সেই সময়ে জিম্মি ছিল স্থানীয় বিএনপি। আর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা শিকার হয়েছিলেন মিথ্যা মামলা আর হয়রানির। নবীনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নানের স্নেহধন্য ছিল এই মুক্তার শিকদার। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে পরিবর্তন করে ফেলেন তিনি।

বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনের এমপি এবাদুল করিম বুলবুলের রাজনৈতিক সচিব (পিএস) হওয়ার সুবাদে মুক্তার হোসেন শিকদার এখন নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের একজন।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, এমপি এবাদুল করিম বুলবুল একজন ব্যবসায়ী ও ধর্মীয় ব্যক্তি হওয়ার সুবাদে তাকে ব্যবহার করে এই মুক্তার হোসেন শিকদার নবীনগরে নিয়োগ বাণিজ্য, টিআর কাবিখাসহ উন্নয়ন বরাদ্দ, ডিও লেটার, কমিটি বাণিজ্যসহ সবকিছু নিজ হাতে নিয়ন্ত্রণ করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা।

স্থানীয় এমপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের যোগাযোগ করতে গেলে শিকদারের অনুমতি ছাড়া মিলে না সাক্ষাৎ। এই বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে এমপি বুলবুলের কাছ থেকে মাইনাস রাজনীতির শিকার হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, মুক্তার হোসেন শিকদার সত্যিই ভাগ্যবান। বিএনপির আমলে আমরা তার হাতে মিথ্যা মামলা আর হয়রানি এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছি। এখন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও তার সুদৃষ্টি ছাড়া কিছুই হয় না। মুক্তার এখনও আওয়ামী লীগে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করেননি বলে জানান তারা।

নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা জাকির হোসেন বলেন, মুক্তার বিএনপি রাজনীতিতে জড়িত ছিল। এখন আওয়ামী লীগে যোগদান করেছে কী না আমার জানা নেই।

মুক্তার হোসেন শিকদারের রাজনীতির গুরু নবীনগর উপজেলা বিএনপি সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান। তার হাত ধরেই বিএনপি রাজনীতি করে ছিল মুক্তার। তবে আবদুল মান্নান জানান, মুক্তার আমার একনিষ্ঠ সমর্থক ছিল। পাশাপাশি বিএনপিতে সে একজন নিবেদিত ভালো সংগঠক ছিল।

এ ব্যাপারে মুক্তার হোসেন মোবাইলে গণমাধ্যমকে জানান, তিনি ৯১ সালের আগে বিএনপি করতেন। ৯১ সালের পর থেকে তিনি আওয়ামী লীগ করেন। তবে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগদান করেননি। এমপি এবাদুল করিম বুলবুলের পিএস হিসেবে যোগদান করেন। এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, প্রতিপক্ষ লোকজন এমন অভিযোগ করেই থাকে।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার-৫ (নবীনগর) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় এমপি এবাদুল করিম বুলবুল বলেন, মুক্তার হোসেন শিকদার আমার রাজনৈতিক সচিব (পিএস)। আগে বিএনপির রাজনীতিতে ছিল এখন তিনি আমার সঙ্গে আছেন। এছাড়া তার ভাই স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বলে তিনি দাবি করেন।