গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র হিসেবে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হওয়ায় জাহাঙ্গীর আলমকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করলো আওয়ামী লীগ। সোমবার (১৫ মে) আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সই এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, আ.লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ সংগঠনের গঠনতন্ত্রের বিধি মোতাবেক গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে। এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এর আগে রবিবার (১৪ মে) আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে দ্বিতীয়বারের মতো দলীয় সিদ্ধান্ত আমান্য করায় জাহাঙ্গীর আলমকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছিল। বৈঠক সূত্রমতে, গাজীপুরসহ আসন্ন পাঁচ সিটি নির্বাচন নিয়ে বৈঠকে বিস্তর আলোচনা হয়। বিশেষ করে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে আবারও দলীয় ভঙ্গের বিষয়টি গুরুত্ব পায় আলোচনায়।
নেতারা বলেন, জাহাঙ্গীর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে কটূক্তি করে আগে দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার হয়েছিলেন। পরে ক্ষমা চাওয়ায় তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু আবার দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন, মাকেও প্রার্থী করেছেন। নিজের মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় যে ভাষায় কথা বলেছেন, তাতে দলীয় শঙ্খলা ভঙ্গ হয়েছে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও নিজ জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে নিয়ে গাজীপুর সিটির তৎকালীন মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বিতর্কিত বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এর জেরে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয় তাকে। পরে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। ২০১৮ সালের নির্বাচনে নৌকার টিকিটে নির্বাচিত হওয়া জাহাঙ্গীর আলম মেয়র পদ থেকেও সাময়িক বরখাস্ত হন। সেই আদেশ এখনও প্রত্যাহার হয়নি।
এবার গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকার টিকিট পেয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খান। তিনি গাজীপুর সিটি করপোরেশন গঠন হওয়ার পর প্রথম নির্বাচনে (২০১৩ সাল) আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আলোচনায় আসেন জাহাঙ্গীর আলম। তখন নির্বাচনে জয়লাভ করেন বিএনপির (প্রয়াত) নেতা এম এ মান্নান।
এবারের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। মনোনয়নপত্র বৈধ করতে হাইকোর্টে তার রিট আবেদনও খারিজ হয়ে গেছে। তবে তার মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে ইসি।