Home > জাতীয় > সারাদেশ > পুত্রবধূর স্পর্শকাতর স্থানে শ্বশুরের হাত, অতঃপর…

পুত্রবধূর স্পর্শকাতর স্থানে শ্বশুরের হাত, অতঃপর…

শ্বশুরের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তুলেছেন এক পুত্রবধূ। ঘটনাটি ঘটেছে নওগাঁয়। অভিযুক্ত শ্বশুরের নাম আলাউদ্দিন। সে তিলকপুর ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের মৃত জসিম উদ্দিনের ছেলে।

এ ঘটনায় গত ৯ ডিসেম্বর সদর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়ন গ্রাম আদালতে ভুক্তভোগী ওই পুত্রবধূ বাদী হয়ে আলাউদ্দিনের (৬০) বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিবাদী মামলাটি শুনানির জন্য সময় চেয়ে আবেদন করেছেন। ভুক্তভোগী পুত্রবধূ বর্তমানে তার খালার বাড়িতে অবস্থান করছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ছয় বছর আগে আলাউদ্দিনের ছেলে আলামিনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে ওই নারীর বিয়ে হয়। তাদের সংসারে আলফিয়া আকতার নামে পাঁচ বছরের এক মেয়ে রয়েছে। সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে গত তিন বছর আগে আলামিন বাহরাইনে পাড়ি জমান। আলামিন বিদেশ যাওয়ার পর থেকে তার স্ত্রীর ওপর তার বাবা আলাউদ্দিনের কুনজর পড়ে। গত ৩/৪ মাস আগে শাশুড়ি আছিয়া বেগম বাড়িতে না থাকার সুযোগে রাতে শ্বশুর আলাউদ্দিন পুত্রবধূর ঘরে প্রবেশ করে। এরপর শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে যৌন নিপীড়ন করে। এ সময় চিৎকার করলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যায় শ্বশুর।

পরে বিষয়টি শাশুড়ি এবং দুই নদনকে জানালে তারা উল্টো তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। ওই নারী তার স্বামী আলামিনকে বিষয়টি জানালে শাশুড়ি মোবাইল ফোন কেড়ে নেন। এরপর থেকে তার স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ থাকে।

ওই নারী তার নানির মোবাইল ফোন নিয়ে এসে গোপনে নিজের কাছে রেখে দেন স্বামীকে প্রমাণস্বরূপ রেকর্ডিং শুনানোর জন্য। একদিন বাড়িতে কেউ না থাকায় শ্বশুর তাকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন অনৈতিক কথা বলেন। এ সময় তার মোবাইলে কথাগুলো রেকর্ড করে রাখেন ওই নারী। রেকর্ডসহ মোবাইল ফোনটি তার নানির বাড়িতে রেখে আসেন। তবে তার অজান্তে রেকর্ডটি প্রকাশ হয়ে যায় এবং এলাকায় তা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে গত ২৭ নভেম্বর সালিশ হয়। সালিশে মাহাবুব, রিপন ও রফিকুলসহ কয়েকজন নেতৃত্ব দেন। সালিশে মাতব্বরা রায় দেন- গৃহবধূকে তার শ্বশুর পাঁচ কাঠা জমি কবলা করে দেবেন এবং স্বামী দেশে না আসা পর্যন্ত তার শাশুড়ির কাছে থাকবেন। এমন রায়ে এলাকাবাসী উত্তেজতি হয় এবং সালিশ পণ্ড হয়ে যায়। ফলে প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় তিলকপুর ইউনিয়নে গ্রাম আদালতে ভুক্তভোগী পুত্রবধূ তার শ্বশুর আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

ভুক্তভোগী পুত্রবধূ বলেন, আমি আমার স্বামীর সাংসার করতে চাই। কিন্তু ঘটনার পর থেকে শাশুড়ি বিভিন্নভাবে কটু কথা বলছেন। উপযুক্ত শাস্তি চাই, যেন অন্য কোনো শ্বশুর তাদের ছেলের বউদের যৌন হেনস্তা ও কটু কথা বলতে না পারে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আলাউদ্দিন বলেন, আমি অসুস্থ ছিলাম। ছেলের বউকে কি বলেছি না বলেছি আমার মনে নেই।

তিলকপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, এ ব্যাপারে গ্রাম আদালতে মামলা হয়েছে। শুনানির জন্য বিবাদীকে নোটিশ করা হয়েছিল। বিবাদী সময় বৃদ্ধির জন্য ১৭ ডিসেম্বর একটি আবেদন করেছেন। দুই পক্ষের শুনানির পর যদি প্রকৃত সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে মামলাটি গ্রাম আদালতে রাখবো না, ঊর্ধ্বতন আদালতে পাঠিয়ে দিব।