টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে বাসাইলের পরাজিত সদস্য প্রার্থী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের বিতরণকৃত টাকা ফেরত দিতে শুরু করেছেন ভোটাররা।
মূলত, মঙ্গলবার সকালে ভোটের আগে বিতরণকৃত টাকা ফেরত চেয়ে রফিকুল ইসলাম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলে, তা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর থেকেই পরাজিত ওই প্রার্থীকে টাকা গ্রহণকারী ভোটাররা তাদের নাম প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করতে থাকেন। বুধবার (১৯ অক্টোবর) নিজ উদ্যোগে তারা টাকা ফেরত দিতে শুরু করেন।
সূত্রমতে, ১১নং ওয়ার্ড (বাসাইল) সদস্য পদপ্রার্থী মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ভোটের পূর্বে উপজেলার ফুলকি ইউপির ৮, হাবলা ইউপির ৫, পৌরসভার ৫, সদর ইউপির ১১, কাউলজানী ইউপির ৯, কাঞ্চনপুর ইউপির ৫ ও কাশিল ইউপির ৭ জনকে টাকা প্রদান করেন। এদের প্রত্যেক ভোটারকে ১০ থেকে ৩০ হাজার টাকা করে মোট ১০ লাখ টাকা বিতরণ করেন ওই পরাজিত প্রার্থী। এদের মধ্যে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হওয়ার পর হাবলা, সদর, কাঞ্চনপুর, কাউলজানী ও ফুলকি ইউপির অন্তত সাতজন ভোটার ২ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন। আগামী দুই দিনের মধ্যে ভোটাররা টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নাম প্রকাশ না করতে অনুরোধ করেছেন।
ভোটের আগে কেন টাকা বিতরণ করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে পরাজিত প্রার্থী রফিকুল ইসলাম বলেন, ভোটাররাই টাকা দাবি করছিলেন। তাই নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার লোভে ভোটারদের মাঝে টাকা বিতরণ করেছিলাম। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হওয়ার পর সকলেই টাকা ফেরত দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. ওমর ফারুক বলেন, ভোট কেনা জঘন্য অপরাধ। অন্যের অধিকার টাকা দিয়ে কিনে নেওয়া মানুষের মানবিক সত্তাকে হরণ করার শামিল। ভোট কেনাবেচায় আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকায় দিন দিন এমন অপরাধের প্রবণতা বাড়ছে।
উল্লেখ, টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ নির্বাচন ১১নং ওয়ার্ড বাসাইলে মোট ভোটার ছিল ৯৪ জন। পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে ৩ প্রার্থীরই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। উক্ত সদস্য পদে মো. নাছির খান ৫৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছে, নিকটতম প্রার্থী মোহাম্মদ হোসাইন খান পেয়েছেন ২১ ভোট, মিজানুর রহমান খান পেয়েছেন ১১ ভোট, মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম পেয়েছেন ৭ ভোট ও আতিকুর রহমান কোনো ভোটই পায়নি।