ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভবনে নিজ কক্ষে রোববার হামলার শিকার হন সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর ও তার সঙ্গীরা । গুরুতর আহত অবস্থায় বর্তমানে তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
নুরদের ওপর হামলার পর সাংবাদিকদের জিএস গোলাম রাব্বানী বলেছিলেন, ‘নুর আহত নাকি মারা গেছে– ডাজ নট ম্যাটার। তাকে আর ডাকসুতে ঢুকতে দেয়া হবে না।’ এ মন্তব্যের পর ব্যাপক সমালোচনায় পড়তে হয়েছে ছাত্রলীগের সাবেক এই সাধারণ সম্পাদককে।
তবে ঘটনার একদিন পর সুর পাল্টালেন তিনি। এমন মন্তব্যের জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাব্বানী। একই সঙ্গে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও আহবান জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার রাতে গোলাম রাব্বানী তার ভেরিফাইড ফেসবুক আইডি থেকে একটি স্ট্যাটাস দেন। নিচে স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো–আমি চোখের সমস্যার কারণে বিগত এক সপ্তাহ যাবত বাসাতেই অবস্থান করছি। গতকাল দুপুর পৌনে একটার দিকে আমাদের ডাকসুর ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে কথোপকথন থেকে জানতে পারি ভিপি নুর গ্রুপের সাথে মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের সদস্যদের মারামারি চলছে।
নুরের সাথে থাকা ৫০-৬০ জন বহিরাগত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ডাকসু ভবনের প্রবেশ গেটে ও ভিতরে অবস্থান নিয়েছে এবং আমাদের ডাকসুর আন্তর্জাতিক সম্পাদক Shahrima Tanjina Arni এবং রাইসা নাসের ভিতরে আটকা পরেছে।
স্বভাবতই অজানা আশংকা থেকে আমি অসুস্থতা নিয়েও ক্যাম্পাসে ছুটে যাই। যানযটে বিলম্ব হওয়ায় মারামারি শেষ হবার বেশ কিছুক্ষণ পরে ডাকসুতে পৌঁছাই। ততক্ষণে আমাদের প্রক্টর গোলাম রাব্বানী স্যার এসে অর্নি ও রাইসাকে উদ্ধার করেন এবং মারামারিতে আহতদের নিজ দায়িত্বে ডিএমসিতে পাঠান।
সেখানে উপস্থিত কয়েকটি মিডিয়া উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে শুরুতে বলি, ‘আমি ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলাম না। মারামারির আদ্যোপান্ত আমার আমার জানা নেই। তবে ভিপি নুর হামলা বা ঘটনার বিষয়ে ডাকসুর কারো সাথে কথা না বলে ৫০-৬০ জন বাহিরাগত এনে যেভাবে ডাকসু ভবন অবরুদ্ধ করে রেখেছে এবং যেখানে যে অরাজকতা হয়েছে, সেগুলো মেনে নেয়া যায় না।
‘নুর আহত না নিহত মুখ্য না, সে কাউকে না জানিয়ে ডাকসুতে বহিরাগত নিয়ে এসে কেন এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করলো?’ ডাকসুর দুই ছোটবোন অবরুদ্ধ থাকা নিয়ে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ থেকেই মন্তব্যটি করেছিলাম, যা ডাকসুর জিএস হিসেবে আমার বলা উচিত হয় নাই। সেজন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।
তবে উক্ত ঘটনায় বরাবরের মতই, ছাত্রলীগকে জড়িয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন ও ঢাবির সিনেট সমস্য সঞ্জিত চন্দ্র দাস মারামারির কথা শুনে ভিপি নুরকে উদ্ধার করতে সেখানে গিয়েছিলো। নুরের সাথে থাকা সহযোগীদের অসৌজন্যমূলক আচরণে ও তীর্যক মন্তব্যে তারা ফিরে আসে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে।
তবুও যা ঘটছে সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক। উক্ত অনভিপ্রেত ঘটনায় যারা হতাহত হয়েছে তাদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানাই।