গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মাইন উদ্দিন ওরফে মাইনুলের পরকীয়া প্রেমে একসঙ্গে ভেঙে গেছে দুই বোনের সংসার।
এসআই মাইনুলের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও কুকর্মের শাস্তির জন্য গাজীপুরের পুলিশ সুপার, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি ও পুলিশ সদর দপ্তরের আইজির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী এক বোনের স্বামী।
রবিবার (২২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন কালীগঞ্জ পৌর এলাকার দড়িসোম গ্রামের বাসিন্দা ওই অভিযোগকারী। ঘটনার প্রতিবাদ করায় এসআই মাইনুল ও তার লোকজন অভিযোগকারীকে বিভিন্নভাবে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে, এসআই মাইন উদ্দিন মাইনুলের বদলির আদেশ ছয় মাস আগে হলেও এ ঘটনা জানাজানি হলে তড়িঘড়ি করে সিসি নিয়ে কাপাসিয়া থানায় যোগদান করেছেন।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, ১২ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন অভিযোগকারী। তাদের সংসারে ১১ বছরের একটি ছেলে ও তিন বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।
৭-৮ মাস আগে একটি মামলার তদন্ত করতে অভিযোগকারীর শ্বশুরবাড়ি এলাকায় যান এসআই মাইনুল। সেখানে তিন বছরের এক কন্যা সন্তানের জননী অর্থাৎ অভিযোগকারীর শ্যালিকার সঙ্গে মাইনুলের পরিচয় এবং মোবাইল নম্বর আদান-প্রদান হয়।
পরে তার সঙ্গে ফোনে কথা বলতে বলতে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন এসআই মাইনুল। সেই ঘটনায় তার শ্যালিকার সংসারে অশান্তির সৃষ্টি হয়। পরে এসআই মাইনুলের বিয়ের প্রলোভনে স্বামীকে ডিভোর্স দিতে বাধ্য হয় শ্যালিকা। কিন্তু পরে তাকে বিয়ে করেননি মাইনুল।
কিছুদিন পর অভিযোগকারীর শ্বশুরবাড়ি যান এসআই মাইনুল। সেখানে শ্যালিকা বাড়িতে না থাকায় অভিযোগকারীর স্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয় এসআই মাইনুলের। পরে মোবাইল নম্বর আদান-প্রদানের মাধ্যমে ফোনে কথা বলতে বলতে অভিযোগকারীর স্ত্রীর সঙ্গেও পরকীয়ায় জড়ান এসআই মাইনুল। এই পরকীয়া শারীরিক সম্পর্কে রূপ নেয়।
অভিযোগকারীর সন্তানের সামনেও স্ত্রীর সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করেছেন এসআই মাইনুল। অভিযোগকারী বাড়িতে না থাকলে এসআই বাড়িতে যেতেন। এতে বাধা দিলে অভিযোগকারীর বাবা-মায়ের সঙ্গে প্রতিনিয়ত ঝগড়া-বিবাদ হতো। এ ব্যাপারে স্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করলে আত্মহত্যার হুমকি দেয়।
অন্যদিকে, এসআই মাইনুলের সঙ্গে কথা বলে বোঝানোর চেষ্টা করলেও শোনেননি। অস্বীকার করে উল্টো মিথ্যা মামলা ও প্রাণনাশের হুমকি দেন। পরকীয়ার বিষয়টি নিয়ে স্ত্রীকে চাপ দিলে স্বামী-সন্তান রেখে বাড়ি থেকে চলে যায়।
স্ত্রীর কোনো খোঁজখবর না পেয়ে কালীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন অভিযোগকারী। বিষয়টি নিয়ে থানা পুলিশকে একাধিকবার বললেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। নিরুপায় হয়ে ১৯ ডিসেম্বর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন অভিযোগকারী।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই মাইন উদ্দিন ওরফে মাইনুল বলেন, ওই দুই বোনের সঙ্গে আমার ওরকম কোনো সম্পর্ক ছিল না। তবে মাঝেমধ্যে মোবাইলে কথা হয়। আসলে ফোনে সব কিছু বলা যাবে না। সশরীরে আসেন, এসব বিষয়ে সরাসরি কথা বলব।
কালীগঞ্জ ও কাপাসিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পংকজ দত্ত বলেন, আসলে বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে অভিযোগকারীর স্ত্রী চলে যাওয়ার ব্যাপারে থানায় একটি জিডি হয়েছে।