মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এই আইনের কারণে মুসলিমদের প্রতি চরম বৈষম্য আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই আইনের বিরুদ্ধে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সহিংস বিক্ষোভ চলছে। খবর আল জাজিরার।
কুয়ালালামপুর সামিট ২০১৯ উপলক্ষে দেয়া এক ভাষণে গতকাল শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) নাগরিকত্ব আইন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মাহাথির। তিনি এই আইনের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
তিনি বলেন, ভারতীয়রা যখন ৭০ বছর ধরে একসঙ্গে কোনো সমস্যা ছাড়াই বসবাস করে আসছে, তখন এই আইনের প্রয়োজনীয়তা কি? এই আইনের কারণে এখন মানুষ মারা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমি এই ভারতকে দেখে খুবই মর্মাহত। ভারত নিজেকে ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র দাবি করে। এখন কিছু মুসলিমকে নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করতে পদক্ষেপ নিচ্ছে।
৯৪ বছর বয়সী এই নেতা আরও বলেন, যদি একই পদক্ষেপ আমরা এখানে নিই তাহলে কী হবে? অবশ্যই অনেক বিশৃঙ্খলা ও অস্থিতিশীলতা তৈরি হবে। সবাইকে ভুগতে হবে।
২০১৫ সালের আগে পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে যেসব অমুসলিম ‘ধর্মীয় নিপীড়নের’ শিকার হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন তাদের নাগরিকত্ব দিতেই এই আইন আনা হয়েছে।
এই আইনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন বলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ৯৪ বছর বয়সী মাহাথির বলেন, আমি দুঃখিত আমাকে এটা বলতে হচ্ছে যে, ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত ভারত কিছু মুসলিমের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করছে।
ভারতে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই মাহাথিরের এমন মন্তব্য সামনে এলো। ভারতের উত্তরপ্রদেশে বিক্ষোভ-সংঘাতে গত দু’দিনে নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। সেখানে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত মোট ১১ জন নিহত হয়েছে।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে বৈষম্যমূলক বলে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ। অপরদিকে ধর্মীয়ভাবে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।