Home > ধর্ম > নির্মিত হচ্ছে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মসজিদ, নামাজ আদায় করতে পারবে ৮ লাখ লোক!

নির্মিত হচ্ছে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মসজিদ, নামাজ আদায় করতে পারবে ৮ লাখ লোক!

ম’ক্কার ম’সজিদে হারাম ও ম’দিনার ম’সজিদে নববির পর বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম এক বিশাল ম’সজিদ নির্মাণ করছে পা’কিস্তানের বাহরিয়া টাউন। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম এ বিশাল ম’সজিদটি বর্তমানে নির্মাণাধীন। পা’কিস্তানের করাচি শহরের ‘বাহরিয়া টাউন’-এ নির্মিত হচ্ছে এ ম’সজিদ। ম’সজিদে হারাম ও ম’সজিদে নববির পর এটিই হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম’সজিদ। এখানে সঙ্গে ৮ লাখ লোক নামাজ আদায় করতে পারবে এমন গু’ঞ্জনই শুনা যাচ্ছে।
‘বাহরিয়া টাউন’ রিয়াল স্টেট কোম্পানি তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এ তথ্য প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে- ‘ম’ক্কার ম’সজিদে হারাম এবং ম’দিনার ম’সজিদে নববিই হলো বিশ্বের প্রথম ও দ্বিতীয় বৃহত্তম ম’সজিদ। আর সম্মান ও ম’র্যাদায় বিশ্বের অন্য কোনো ম’সজিদই এ দুই পবিত্র ম’সজিদে হারাম ও ম’সজিদে নববির সমকক্ষ নয়। আল্লাহর ইচ্ছায় আম’রা পবিত্র দুই ম’সজিদের পর পা’কিস্তানের করাচির ‘বাহরিয়া টাউন’-এ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ম’সজিদ নির্মাণ করছি।’
করাচির ‘বাহরিয়া টাউন’-এ নির্মিত এ বিশাল ম’সজিদের সঙ্গে থাকবে আন্তর্জাতিক ইস’লামি ইউনিভা’র্সিটি, ইস’লামিক সেন্টার, মিউজিয়াম এবং গবেষণা কেন্দ্র।
নিম্নে আরো পড়ুন: ইস’লামের প্রথম ম’সজিদ ‘কুবা’
আল্লাহ তাআলা প্রিয় নবী হযরত মুহম্মাদ (সা.) কে সত্যদ্বীনসহ সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসুল হিসেবে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। নবুয়ত লাভের পর বিশ্বনবী হযরত মুহম্ম’দ (সা.) ম’ক্কায় ইস’লাম প্রচার শুরু করেন। এতে তাঁর প্রতি নি’র্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়।
নি’র্যাতনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় প্রিয় নবী হযরত মুহম্ম’দ (সা.) প্রিয়সঙ্গী হযরত আবু বকর (রা.) কে সঙ্গে নিয়ে আল্লাহর নির্দেশে ম’দিনার উদ্দেশ্যে ৬২২ খ্রিস্টাব্দের ২২ সেপ্টেম্বর ম’ক্কা ত্যাগ করেন।
প্রিয়নবী হযরত মুহম্ম’দ (সা.) এর আগমন বার্তার সংবাদ পেয়ে ম’দিনাবাসীগণ আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠেন। ম’দিনার সর্বস্তরের মানুষ প্রতিদিন বিশ্বনবিকে অভ্যর্থনা জানাতে ম’দিনার তিন মাইল অদূরে কুবা পল্লীর হাররা নামক স্থানে জড়ো হতেন। তাঁর দেখা না পেয়ে সবাই হতাশ হয়ে ঘরে ফিরে যেতেন।

একদিন এক ইয়াহুদি তাদের দুর্গের প্রাচীরে ওঠে বহু দূরে ম’রুভূমির ধূলাবালি উড়তে দেখে ম’দিনাবাসীকে তাঁর আগমন সংবাদ জানান। সঙ্গে সঙ্গে ম’দিনাবাসীগণ আনন্দের অ’তিশয্যে মায়া মমতা ও ভালোবাসায় বিশ্বনবিকে সাদরে বরণ করে নেন।

পিয় নবী হযরত মুহম্ম’দ (সা.) ম’দিনায় এসে সর্ব প্রথম কুলসুম ইবনুল হিদম (রা.) এর আতিথ্য গ্রহণ করেন। সেখানে তিনি ১৪ দিন অবস্থান করেন। বিশ্বনবী হযরত মুহম্ম’দ (সা.) কুলসুম ইবনুল হিদম (রা.)’র খেজুর শুকানোর জায়গায় একটি ম’সজিদ তৈরি করেন।

এটি ইস’লামের ইতিহাসে মু’সলমানদের প্রথম স্থাপনা। যা কুবায় স্থাপিত হয়। এটি ঐতিহাসিক ম’সজিদ। যা ইস’লামের প্রথম ম’সজিদ `কুবা`। ম’সজিদে কুবা উম্মতে মুহাম্মাদির সর্ব প্রথম ম’সজিদ। সম্মান ও ম’র্যাদার দিক থেকে ম’সজিদে হারাম, ম’সজিদে নববি এবং মসসিদে আকসার পরই ম’সজিদে কুবার স্থান।

ম’সজিদে কুবা স’ম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, যে ম’সজিদ প্রথম দিন থেকেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তাকওয়ার উপর (ম’সজিদে কুবা) -তাই বেশি হকদার যে, তুমি সেখানে নামাজ কায়েম করতে দাঁড়াবে। সেখানে এমন লোক আছে, যারা উত্তম’রূপে পবিত্রতা অর্জন করতে ভালবাসে। আর আল্লাহ পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালবাসেন। (সুরা তাওবা : আয়াত ১০৮)

প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত ম’সজিদে কুবাকে অনেকবার সংস্কার ও পূনঃনির্মাণ করা হয়। বিশ্বনবী হযরত মুহম্ম’দ (সা.) এর পর ইস’লামের তৃতীয় খলীফা হ’জরত উসমান (রা.) এর খিলাফতকালে সর্বপ্রথম ম’সজিদে কুবার সংস্কার ও পূণঃনির্মাণ করা হয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে আরো সাত বার এই ম’সজিদের পূণঃনির্মাণ ও সংস্কার করা হয়।

অনেক পুরনো ও জীর্ণ হয়ে যাওয়ায় সর্বশেষ ১৯৮৬ সালে ম’সজিদটির পুনর্নির্মাণ করা হয়। এই ম’সজিদ পুনর্নিমাণে পুরো ম’সজিদে এক ধরনের উন্নতমানের সাদা পাথর ব্যবহার করা হয়।

বর্তমানের যে কুবা ম’সজিদের স্থাপনা রয়েছে, তা অ’ত্যন্ত সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে অবস্থিত। ম’সজিদটির চার কোনে রয়েছে সুদৃশ্য ৪টি মিনার ও দুই তলা বিশিষ্ট ম’সজিদে কুবার ছাদে রয়েছে ১টি বড় গম্বুজসহ অ’পেক্ষাকৃত ছোট ছোট ৫টি গম্বুজ।

তাছাড়া ছাদের অন্য অংশে আছে গম্বুজের মতো ছোটো ছোটো অনেক অবয়ব। চারপাশের খেজুরের বাগান ও বনায়ন ম’সজিদটির সৌন্দর্য কে করে তুলেছে অ’তুলনীয়।

যা দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। সূর্যাস্তের হলদে বিকালে ম’সজিদটি দেখলে হৃদয় ভরে যায়।ম’দিনায় ম’সজিদে নববির দক্ষিণ পশ্চিম দিকে মসিজদে কুবা অবস্থিত। ম’সজিদে নববি থেকে এর দূরত্ব মাত্র ৩•২৫ কিঃ মিঃ।

হিজরতের পর বিশ্বনবী হযরত মুহম্ম’দ (সা.) ম’দিনায় ১০ বছর কাটিয়েছেন। এ সময়ে বিশ্বনবী হযরত মুহম্ম’দ (সা.) পায়ে হেঁটে কখনো উটে আরোহণ করে কুবা ম’সজিদে যেতেন এবং সেখানে দুই রাকাআত নামাজ আদায় করতেন।

হযরত উসাইদ ইবনে হুজাইব আল আনসারী (রা.) বর্ণনা করেন, প্রিয় নবী হযরত মুহম্ম’দ (সা.) বলেছেন, ম’সজিদে কুবায় এক ওয়াক্ত নামায আদায় করা; সওয়াবের দিক থেকে একটি ওম’রা আদায়ের সমতুল্য। (তিরমিজি)

ম’সজিদে কুবার এ অনন্য সম্মান ও ম’র্যাদার কারণে বিশ্বনবী হযরত মুহম্ম’দ (সা.) এর ইন্তিকালের পরও হ’জরত আবু বকর, হ’জরত ওম’রসহ বিশিষ্ট সাহাবায়ে কিরাম রাদিয়াল্লাহু আনহু’ম বিশ্বনবির অনুকরণে প্রায়ই ম’দিনা থেকে ম’সজিদে কুবায় আসতেন ও তাতে নামাজ আদায় করতেন।

বর্তমানে ম’দিনায় অনেক সুন্দর সুন্দর ম’সজিদ রয়েছে। ম’সজিদে নববির পর সৌন্দর্য্য ও নান্দনিকতার তালিকায় ম’সজিদে কুবা অন্যতম। ওম’রা, হ’জ ও দর্শণার্থীদের জন্য ম’সজিদে কুবা সাওয়াব ও সৌন্দর্যের অনন্য প্রতীক। (