Home > জাতীয় > সারাদেশ > দেনমোহরের টাকা আত্মসাৎ করলেন আইনজীবী

দেনমোহরের টাকা আত্মসাৎ করলেন আইনজীবী

রুমি বেগম। দুটি শিশু সন্তান নিয়ে শরীয়তপুরের পালং বাজারে একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। স্বামী নাজমুল ইসলামও খোঁজ নেন না তাদের। স্ত্রী ও সন্তান রেখে অন্য নারীর সঙ্গে পেতেছেন নতুন সংসার। অবুঝ দুটি সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন সাতাশ বছর বয়সী রুমি বেগম।

বাধ্য হয়ে তিনি শরীয়তপুর লিগ্যাল এইড আদালতে দেনমোহর ও খোরপোষের দাবিতে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলাটি পরিচালনা করার জন্য শরীয়তপুর জেলা লিগ্যাল এইডের পক্ষে জেলা জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট মোতালেব মাদবরকে প্যানেল আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ করা হয়।

উক্ত মামলায় স্বামী আদালতে হাজির হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

কিছুদিন কারাভোগের পর আইনজীবী মোতালেব মাদবরের মাধ্যমে দেনমোহরের টাকা দেওয়ার মর্মে জামিন পান তিনি। ওই সময় কিছু টাকাও দেন আদালতের মাধ্যমে।

তাদের কাবিননামায় দেনমোহর নির্ধারিত ছিল ১০ লাখ টাকা। এর মধ্যে এক লাখ টাকা ওয়াশিল থাকায় বাকি নয় লাখ টাকা আইনজীবী আব্দুল মোতালেব মাদবরের হাতে তুলে দেন।

কিন্তু অ্যাডভোকেট আব্দুল মোতালেব মাদবর পুরো টাকার বিষয়টি গোপন করে ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা তুলে দেয় রুমির হাতে। বাকি ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। এমন অভিযোগই করেন অসহায় রুমি।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২০ আগস্ট ২০১৮ তারিখে রুমি বেগম তার স্বামী নাজমুল ইসলাম (৪১), পিতা : মৃত জালালুদ্দিন সুলতান আহমেদ, সাং ও থানা ভান্ডারিয়া, জেলা : পিরোজপুরের নামে বিজ্ঞ পারিবারিক আদালতে দেনমোহর ও খোরপোষের দাবিতে একটি মামলা দায়ের করেন।

রুমি বলেন, দেনমোহরের টাকা চাইতে গেলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন তিনি এবং চেম্বার থেকে বের করে দেন। আমার দেনমোহরের টাকা ফেরত পেতে জেলা আইনজীবী সমিতির কাছে সাহায্য কামনা করে একটি আবেদন করেছি।

এ ব্যাপারে অ্যাডভোকেট মোতালেব মাতবরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। বার সমিতির কিছু অ্যাডভোকেট আমার বিরুদ্ধে অভিযোগটি দিয়েছে।

রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু সাঈদ দৈনিক অধিকারকে বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ পাওয়ার পর আমাদের নির্বাহী কমিটি দিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করি। তদন্তে এর সত্যতা পাওয়া যায়। আমরা বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। তাকে তিনকার্য দিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, এর আগে অ্যাডভোকেট মোতালেব সরকারি জিপি ছিলেন। তাকে অনিয়মের জন্য জিপি পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সেই সাথে জেলা আইনজীবী সমিতি থেকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কৃত করেছিলেন।