Home > আন্তর্জাতিক > ক্ষোভে ফুঁসছে পশ্চিমবঙ্গ-মেঘালয়, রেল-সড়ক অবরোধ-ভাঙ্চুর

ক্ষোভে ফুঁসছে পশ্চিমবঙ্গ-মেঘালয়, রেল-সড়ক অবরোধ-ভাঙ্চুর

ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছেই। বিক্ষোভে ফুঁসছে পশ্চিমবঙ্গ ও মেঘালয়। এই রাজ্য দুটিতে রেল-সড়ক অবরোধ ও ভাঙ্চুরের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আইনে পরিণত হতেই ক্ষোভে ফুঁসছে পশ্চিমবঙ্গবাসী। যার জেরে চরম ভোগান্তির শিকার সাধারণ মানুষ। শনিবার সকাল থেকেই বসিরহাট, মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন স্টেশন ও রাজ্য সড়কে চলছে অবরোধ। যার জেরে স্তব্ধ যান চলাচল। ভোগান্তির শিকার যাত্রীরা।

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে সই করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এরপর থেকে ক্রমশই চড়ছে উত্তেজনার পারদ। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতা সুর চড়াচ্ছেন স্থানীয়রা।

শনিবার সকালে শিয়ালদহ-হাসনাবাদ শাখার হাড়োয়া স্টেশনে রেল লাইনে অবরোধ করেন স্থানীয়রা। বিক্ষোভ দেখানো হয় হাসনাবাদ শাখারও আরও বেশ কয়েকটি স্টেশনে। অবরোধের জেরে দীর্ঘক্ষণ ব্যাহত ট্রেন চলাচল।

একই ছবি মুর্শিদাবাদে। শনিবার সকাল থেকেই মুর্শিদাবাদের পোড়াডাঙা স্টেশনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে একদল। বিক্ষোভের জেরে লালগোলা থেকে কৃষ্ণনগর পর্যন্ত ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ। জঙ্গিপুর স্টেশনে দাঁড়িয়ে ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস।

তবে শিয়ালদহ থেকে পলাশী পর্যন্ত স্বাভাবিক ট্রেন চলাচল। শনিবার সকালেও কার্যত থমথমে বেলডাঙা। এলাকায় ঢুকতে সাহস পাচ্ছে না কেউ। দেখা মিলছে না পুলিশেরও। সেই সঙ্গে রঘুনাথগঞ্জে অবরুদ্ধ জাতীয় সড়কও।

সকাল হতেই রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখায় একদল। জ্বালানো হয় টায়ার। স্বাভাবিকভাবে সড়ক পথেও গন্তব্যে পৌঁছতে পারছেন না যাত্রীরা। ফলে বিরক্ত নিত্যযাত্রীদের একাংশ।

এদিকে, মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে শুক্রবার পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে ওঠে সেখানকার রাজ্যপাল তথাগত রায়ের একটি টুইট বার্তার পরে।

বিজেপির প্রাক্তন নেতা মি. রায় টুইট করে লেখেন, সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে দুটি বিষয় কখনই ভুলে যাওয়া উচিত নয়। এক, এই দেশ ভাগ হয়েছিল ধর্মের ভিত্তিতেই। দুই, গণতন্ত্রে বিভাজন থাকবেই। কেউ যদি সেটা না চান, তাহলে উত্তর কোরিয়ায় চলে যেতে পারেন।”

হাজার হাজার মানুষ আজ মিছিল করছিলেন নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে। তার মধ্যেই এই টুইট বার্তার পরে মিছিল ঘুরে যায় রাজভবনের ফটকের দিকে।

মেঘালয় রাজ্যে আগেই মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট আর এস এম এস পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় শুক্রবার থেকেই রণক্ষেত্র চেহারা নিয়েছে রাজ্যের বিভিন্নপ্রান্ত। গতকাল আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা স্টেশনে।

রেল অবরোধে বাধা দিতে গেলে বেধড়ক মারধর করা হয় আরপিএফ কর্মীদের। তাতে গুরুতর জখম হন একজন। কেবিনম্যানকে মারধরের পাশাপাশি স্টেশনে ভাঙচুর এবং আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয়। দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থাকে ট্রেন।

বিক্ষোভের জেরে শুধু মুর্শিদাবাদ নয়, হাওড়া, উলুবেড়িয়া, ডায়মন্ড হারবার-সহ একাধিক লানে দীর্ঘক্ষণ স্তব্ধ হয়ে যায় রেল চলাচল। কয়েকঘণ্টা পর স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি। তবে রাত পার হতেই ফের শুরু অশান্তি।
সূত্র : বিবিসি বাংলা, সংবাদ প্রতিদিন