এখন থেকে প্রতিটি বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে প্রতি ১০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক থাকার বাধ্যবাধকতা রেখে জাতীয় সংসদে ‘বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ বিল-২০২২’ পাস হয়েছে। সোমবার (২৯ আগস্ট) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বিলটি সংসদে পাসের প্রস্তাব করলে কণ্ঠভোটে পাস হয়। বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজগুলো এখন বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ স্থাপনা এবং অপারেশন গাইডলাইনস-২০১১ এবং বেসরকারি ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠা এবং অপারেশন গাইডলাইনস-২০০৯ এর অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। এই দুটি নীতিমালার ওপর ভিত্তি করে নতুন আইন আনা হয়েছে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান।
বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজের প্রত্যেক বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অনুপাত হবে ১:১০ থাকতে হবে বলে উক্ত বিলে বলা হয়েছে। এছাড়া এসব প্রতিষ্ঠানে কোনো বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষকের সংখ্যা সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনুমোদিত পদের শতকরা ২৫ শতাংশের বেশি রাখা যাবে না। বিলে আরও বলা হয়েছে, মেডিক্যাল বা ডেন্টাল কলেজের পাঁচ শতাংশ আসন অস্বচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। প্রতি শিক্ষাবর্ষে এই আসনের ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের তালিকা ভর্তির শেষ হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে সরকারকে জানাতে হবে। বেসরকারি মেডিক্যাল বা ডেন্টাল কলেজে অনুন্য ৫০ জন শিক্ষার্থীর আসন বিশিষ্ট হতে হবে। বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ স্থাপনের জন্য মেট্রোপলিটন এলাকায় কমপক্ষে দুই একর এবং ডেন্টাল কলেজের জন্য এক একর জমি থাকতে হবে। অন্য এলাকায় এই জমির পরিমাণ চার একর ও দুই একর হতে হবে বলে বিলে বিধান রাখা হয়েছে।
এছাড়া এই জমি সংশ্লিষ্ট কলেজের নামে নিরঙ্কুশ, নিষ্কণ্টক, অখণ্ড ও দায়মুক্ত হতে হবে। মেডিক্যাল কলেজ বা ডেন্টাল কলেজ এবং এর অধীন পরিচালিত হাসপাতাল কোনোভাবেই ইজারা বা ভাড়া নেওয়া জমিতে বা ভবনে স্থাপন করা যাবে না। বিলে বলা হয়েছে, মেডিক্যাল কলেজের নামে অনুন্য তিন কোটি টাকা এবং বেসরকারি ডেন্টাল কলেজের নামে দুই কোটি টাকা যে কোনো তফসিলি ব্যাংকে সংরক্ষিত থাকতে হবে। এরইমধ্যে স্বীকৃতি পাওয়া মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজের নামে এক কোটি টাকা জমা থাকতে হবে। তবে ৫০ আসনের অধিক অতিরিক্ত প্রতি আসনের জন্য মেডিক্যাল কলেজের ক্ষেত্রে তিন লাখ টাকা এবং ডেন্টাল কলেজের জন্য দুই লাখ টাকা সংরিক্ষত তহবিল হিসেবে জমা থাকতে হবে। ব্যক্তি নামে মেডিক্যাল বা ডেন্টাল কলেজের ক্ষেত্রে আরও এক কোটি টাকা সংরক্ষিত তহবিল হিসাবে জমা থাকতে হবে।
এছাড়া প্রত্যেক বেসরকারি মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজের সকল শিক্ষার্থীর ভর্তি ফি সরকার নির্ধারণ করবে বলেও উক্ত বিলে উল্লেখ করা হয়েছে। বিলে আরও বলা হয়েছে, কোনো মেডিক্যাল বা ডেন্টাল কলেজ কাউন্সিলের অনুমোদন না নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করলে এক বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। পাঁচ শতাংশ আসন অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য না রাখলে এবং অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করলে একই দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। সরকারের অনুমতি ছাড়া নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি করলে ১০ লাখা টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। বিলটি আইন হিসেবে কার্যকর হওয়ার এক বছরের মধ্যে আগে স্থাপিত মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজগুলোকে বিধান মেনে অনুমোদন নিতে হবে।