Home > অন্যান্য > ‘আমি বলেছি যদি ধর্মের বিরুদ্ধে বলে থাকেন, তাহলে এটা ঠিক হয়নি’

‘আমি বলেছি যদি ধর্মের বিরুদ্ধে বলে থাকেন, তাহলে এটা ঠিক হয়নি’

মুন্সীগঞ্জের বিজ্ঞানের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় মন্তব্য করে চরম সমালোচনার মুখে পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নিজামুল হক ভুঁইয়া।

 

 

 

বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) তিনি একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের কাছে হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানান। প্রকাশিত সেই সংবাদে তাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, আমাদের ৯০ শতাংশ মানুষ যেহেতু মুসলিম, সেখানে ধর্ম নিয়ে কন্ট্রাডিকটরি বক্তব্যটা দেওয়া কোনোভাবেই সমীচীন নয় বলে আমি মনে করি।

 

 

 

তার এ বক্তব্যের পর শুরু হয়েছে চরম আলোচনা-সমালোচনা।

 

 

 

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাদেকা হালিম গণমাধ্যমকে বলেন, এই নিউজটা অনেক শিক্ষক আমাকে মেসেঞ্জারে পাঠিয়েছে। শিক্ষক সমাজের প্রতিনিধি হয়ে তিনি যদি এটা বলেন, তাহলে এটা অত্যন্ত সংকীর্ণ সাম্প্রদায়িক মনোভাবের পরিচয় দিয়েছেন। এটা সম্পর্কে উনি না জেনে শুনে একটি ঢালাও মন্তব্য করেছেন। উনি দায়িত্বশীলতার কোনো পরিচয় দেন নাই।

 

 

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক নেতা সংখ্যাগরিষ্ঠতার দোহাই দিয়েছেন। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক যদি এভাবে দোহাই দিয়ে আরেকজন শিক্ষকের জন্য বিপদ তৈরি করেন, তাহলে যারা এই ৯০ শতাংশের বাইরে অংশ, এদেশে তাদের বসবাসের উপযোগিতা থাকে কি? এগুলো খুবই বিপজ্জনক প্রবণতা তৈরি হচ্ছে আমাদের সমাজে। এটা যদি সত্য হয়ে থাকে খুবই দুঃখজনক।

 

 

 

শ্রাবণ প্রকাশনীর প্রকাশক রবীন আহসান ফেইসবুকে লিখেছেন, এই যে ৯০ শতাংশ মুসলমানের দেশ বলে ভয় দেখাচ্ছেন! ৯০ শতাংশ মুসলমানের দেশ বলেই মুসলমানদের অন্যায়ের কথা বলা যাবে না! এই ভয় দেখানোটাই বাংলাদেশটাকে অফগানিস্তানে পরিণত করবে! ১০ শতাংশ হিন্দু-খৃস্টান দিবাসীরা যখন থাকবে না তখন ১০০ শতাংশ মুসলমানরা মুসলমানদের রক্ত খাবে।

 

 

 

তবে নিজামুল হক ভুঁইয়া তার মন্তব্য ‘ভুলভাবে’ উপস্থাপন করা হয়েছে দাবি করে বলেন, আমি বলেছি, যদি ধর্মের বিরুদ্ধে বলে থাকেন, তাহলে এটা বলা ঠিক হয়নি।

 

 

 

তিনি আরও বলেন, হৃদয় মণ্ডল যদি ধর্মের বিরুদ্ধে কিছু বলে থাকে, তাহলে দেশের প্রচলিত আইনে তার বিচার হবে। কিন্তু এভাবে তার বাড়িতে হামলা করা, অস্থিরতা সৃষ্টি এগুলো অপতৎপরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা বলে আমি মনে করি।

 

 

 

নিজামুল হক ভুঁইয়া বলেন, আমরা প্রগতিশীল মানুষ, আমরা প্রগতির পক্ষে কথা বলব। আমি যেটা মনে করি, প্রথমত একজন শিক্ষক ক্লাসে পড়াচ্ছেন, ছাত্ররা কেন তার বক্তব্য রেকর্ড করে ছড়িয়ে দেবে। তাহলে তো কোনো শিক্ষক আর ক্লাসে কোনো যুক্তি তর্ক দেখাবে না। আমরা তো ক্লাসে অনেক কথাই বলে থাকি। ছাত্ররা কীভাবে একজন শিক্ষকের বক্তব্য রেকর্ড করে ছড়িয়ে দেয়? এটা খুবই দুঃখজনক।