Home > জাতীয় > সারাদেশ > তালাকের পর তরুণীকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ

তালাকের পর তরুণীকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ

ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় বিচ্ছেদের পর তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।

 

 

 

এ ঘটনায় গত ২৪ মার্চ ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করেন ওই তরুণী।

 

 

 

মামলা সূত্রে জানা যায়, প্রায় পাঁচ বছর আগে পাশের নগরকান্দা উপজেলার এক ছেলের সঙ্গে ভুক্তভোগী তরুণীর বিয়ে হয়। সে সংসারে তার একটি ছেলেও রয়েছে। কিন্তু তরুণী যখন স্বামীর বাড়ি বাবার বাড়ি বেড়াতে আসতেন, তখন তাকে নানানভাবে উত্ত্যক্ত করতেন প্রতিবেশী ইউপি সদস্য শাহজাহান শেখের ছেলে ফুয়াদ শেখ। এক পর্যায়ে তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেন ফুয়াদ। পরে প্রায় মাস দেড়েক আগে তার স্বামীকে তালাক দেওয়ান ফুয়াদ। পরে ফুয়াদ তরুণীকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেন। বিয়ের মাসখানেক যেতে না যেতেই গত ১০ মার্চ আবার তাকে তালকও দেন ফুয়াদ। কিন্তু শনিবার (১২ মার্চ) সন্ধ্যায় ফের ভুক্তভোগী তরুণীকে বাড়ির পাশের রাস্তা থেকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান ফুয়াদ ও তার সহযোগী সাহিদ শেখ (৪৫), জাকির মাতব্বর (৪০), মুরাদ খালাসী (৩৫) ও জাফর শেখ (৩৫)।

 

 

 

এরপর ফরিদপুর শহরের মহা বিদ্যালয়ের পাশে থাকা জাকিরের বাসায় আটকে রেখে টানা আটদিন একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করে ফুয়াদ। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ঘটনাটি নিয়ে ভুক্তভোগী তরুণী মামলা করতে চাইলে গত ১৯ মার্চ রাতে তাকে ফুয়াদ তার সহযোগীরা ডেকে নিয়ে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে। এ সময় তাকে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। পরে গত ২০ মার্চ বিকেল ৫টার দিকে বাড়ির পাশে ফেলে রেখে যান ফুয়াদ ও তার সহযোগীরা। তখন বাড়ির লোকজন তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

 

 

 

ভুক্তভোগী তরুণীর মা বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ফুয়াদ শেখ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে গত ২৪ মার্চ আমার মেয়ে বাদী হয়ে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতে ধর্ষণ মামলা করে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলার পর থেকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসামিরা আমার স্বামী ও সন্তানদের এলাকা ছাড়া করে রেখেছেন। এমন কি আমাদের জমির পেঁয়াজও উঠাতে দিচ্ছে না তারা।

 

 

 

অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত ফুয়াদ শেখের বাবা ইউপি সদস্য শাহজাহান শেখ বলেন, ঘটনাটি সাজানো নাটক। আমাদের হয়রানি করার জন্য মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। ওই মেয়েকে আমার ছেলে বিয়ে করেছিল। বিয়ের পর আবার তালাক দিয়েছে। তালাকের পর নতুন করে কোনো ঘটনা ঘটেনি।

 

 

 

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী আব্দুর রশিদ বলেন, ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক প্রদীপ কুমার রায় অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে আগামী ১২ মে।

 

 

 

ফরিদপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, আদালতের নির্দেশনা আমরা এখনো হাতে পাইনি। আদালতের নির্দেশনা পাওয়ার পর তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।