Home > জাতীয় > সারাদেশ > ফাঁসির আগে সন্তানদের সঙ্গে দেখা করেননি ২ আসামি

ফাঁসির আগে সন্তানদের সঙ্গে দেখা করেননি ২ আসামি

কুমিল্লায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি চান না তাদের ছেলে-মেয়েকে মানুষ খুনির ছেলে অপবাদ দিক। এ কারণে ছেলে-মেয়েকে কারাগারে এসে দেখা করতে নিষেধ করেছেন তারা।

 

 

 

বুধবার (৯ মার্চ) সকালে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কুমিল্লা কারাগারের এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার (৮ মার্চ) দেখা করার সুযোগ ছিল সন্তানদের। একই সঙ্গে স্বজনদেরও কারাগারে আসতে নিষেধ করেছেন। কারণ দেখা করতে এলে মানুষ চিনে ফেলবে তাদের ছেলে-মেয়ে ও স্বজনদের।

 

 

 

দণ্ডিত ব্যক্তিরা হলেন, নাইমুল ইসলাম ইমন ও শিপন হাওলাদার। শিপন হাওলাদারের বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়ায় হলেও থাকতেন চট্টগ্রাম নগরের খুলশীর দক্ষিণ আমবাগানে। আর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের নাইমুল ইসলাম ইমন থাকতেন চট্টগ্রাম নগরের লালখান বাজার ডেবারপাড় এলাকায়।

 

 

 

জানা গেছে, ২০০৩ সালের ১৪ জুন চট্টগ্রাম নগরীর খুলশীর উত্তর আমবাগান রেলওয়ে কোয়ার্টারের বাসায় ঢুকে রেলওয়ে কর্মচারী শফিউদ্দিনকে গুলি করে ও কুপিয়ে খুন করা হয়। এ সময় মৃত্যু নিশ্চিত করে আতঙ্ক ছড়াতে এলাকায় বোমা ফাটিয়ে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মাহমুদা বেগম খুলশী থানায় খুনের মামলা করেন। এরপর ২০০৪ সালের ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ২৩ জনের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে আসামি শিপন ও ইমনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। এ ছাড়া ৭ আসামিকে যাবজ্জীবন ও খালাস দেওয়া হয় ৪ জনকে। পরে মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা উচ্চ আদালতে আপিল করে। তবে ২০২১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালত তা খারিজ করে দেয়। পরে সবশেষ চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ-ভিক্ষার আবেদন করা হলে তাও খারিজ হয়ে যায়।

 

 

 

এদিকে দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির ৩৫ জন স্বজন কুমিল্লায় আসেন। সোমবার (৭ মার্চ) রাতে গোপনে ১৯ স্বজন এসে কারাগারে তাদের সঙ্গে দেখা করে গেছেন। তবে দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি নিষেধ করায় সন্তানরা আসেননি। তবে গত রাতে স্বজনদের কাছে শেষ ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন তারা। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষকে কিছুই জানাননি স্বজনরা।

 

 

 

সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ জানান, গতকাল রাতে ফাঁসির আগে তাদের শারীরিক অবস্থা চেক করা হয়েছে। দুজন সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিলেন। মঙ্গলবার (৮ মার্চ) সন্ধ্যায় ১৯ জন স্বজন তাদের সঙ্গে দেখা করেন। রাতে তওবা পড়ানোর পর দুই আসামিকে ফাঁসির মঞ্চে নেওয়া হয়। কুমিল্লা কারাগারের জল্লাদ সিরাজ উদ্দিন নাসির এ ফাঁসি কার্যকর করেন।

 

 

 

কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. আসাদুর রহমান বলেন, দণ্ডিত ব্যক্তিদের মধ্যে একজনকে ২০২০ সাল আর অন্যজনকে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়।

 

 

 

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (৮ মার্চ) রাতে ফাঁসি কার্যকরের সময় কারাগারে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, সিভিল সার্জন মীর মোবারক হোসাইন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শিউলী রহমান তিন্নী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( ডিএসবি) আফজল হোসেনসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।