Home > আন্তর্জাতিক > রাশিয়ান জাহাজ আটক করেছে ফ্রান্স

রাশিয়ান জাহাজ আটক করেছে ফ্রান্স

ইংলিশ চ্যানেলে রাশিয়ার একটি কার্গো জাহাজ আটক করেছে ফরাসি নৌবাহিনী। জাহাজটি রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবুর্গের দিকে যাচ্ছিল।

 

 

 

ফরাসি বাহিনী সূত্রে জানানো হয়েছে, টহলদারির সময় ইংলিশ চ্যানেলে একটি পণ্যবাহী জাহাজ চোখে পড়ে তাদের। তাতে রাশিয়ার পতাকা লাগানো ছিল। সঙ্গে সঙ্গে সেটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়, তারপরে গাড়িভর্তি ওই জাহাজটিকে নিয়ে আসা হয়েছে ফ্রান্সের বুলন-সু-মেহ বন্দরে। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর রাশিয়ার ওপর একাধিক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপের একাধিক দেশ এবং আমেরিকা। সেই কারণেই এমন পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

 

 

এ ঘটনায় ফ্রান্সের কর্মকর্তারা বিবিসিকে বলেন, ‘ইউক্রেইনে আক্রমণের কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার ওপর নতুন করে যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তার আওতায় রাশিয়ার জাহাজটি আটকে দেওয়া হয়। সেটিকে ফ্রান্সের বুলন-সু-মেহ বন্দরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

 

 

 

রাশিয়ার এই জাহাজটির নাম ‘বাল্টিক লিডার’। এর দৈর্ঘ্য ১২৭ মিটার। জাহাজটিতে গাড়ি বহন করা হচ্ছিল। ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রমকালে শুক্রবার দিবাগত রাতে তার গতিরোধ করে ফরাসি নৌবাহিনী।

 

 

 

তারা আরও বলেন, ‘ফ্রান্স সরকারের অনুরোধে জাহাজটিকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাশিয়ার যে কোম্পানির পণ্য ওই জাহাজে যাচ্ছিল সেটি ইইউর নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে। ফ্রান্সে সীমান্তরক্ষীরা পণ্যবাহী জাহাজটি পরীক্ষা করে দেখছে। জাহাজের ক্রুরা সহযোগিতার মনোভাব দেখাচ্ছেন।’

 

এ ঘটনায় পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে রাশিয়া। ফ্রান্সে নিযুক্ত রুশ দূতাবাস জাহাজ জব্দে প্যারিসের কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করেছে। এ খবর রাশিয়ার সরকারি সংবাদসংস্থা আরআইএ দূতাবাসের বরাত দিয়ে জানিয়েছে।

 

 

 

একটি সূত্র জানায়, জাহাজটিতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। জাহাজের মাল পরিবহনের সঙ্গে রাশিয়ার আর্থিক স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে তদন্তে। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে অন্তত ৪৮টি ঘণ্টা সময় লাগবে বলে জানানো হয়েছে।

 

 

 

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ফ্রান্সের সমুদ্র পুলিশের ক্যাপ্টেন ভেরোনিক ম্যাগনিন বলেছেন, রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গগামী ওই জাহাজ গাড়ি পরিবহন করছিল।

 

 

 

ফ্রান্সের সংবাদপত্র লা ভইক্স ডু নর্ড ইংলিশ চ্যানেলে ওই জাহাজ জব্দের ঘটনা নিয়ে প্রথম সংবাদ প্রকাশ করে। সংবাদপত্রটি বলেছে, সামুদ্রিক যান চলাচলের তথ্য রাখা ওয়েবসাইট মেরিনইট্রাফিক ডটকমের তথ্য অনুযায়ী, জাহাজটি রুশ কোম্পানি বাল্টিক লিডারের এবং এটি রাশিয়ার পতাকাবাহী ছিল।

 

 

 

ম্যাগনিন বলেছেন, জাহাজটির মালিক একজন রুশ ব্যবসায়ী। তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আছেন।

 

 

 

এদিকে, ইউক্রেন-রাশিয়ার সেনাবাহিনী মুখোমুখি অবস্থান করছে ইউক্রেনের রাস্তায়। ইউক্রেনে হামলা করতেই বিশ্বের একাধিক দেশ নিন্দায় মুখর হয়েছে। সরাসরি সেনা পাঠিয়ে সাহায্য না করলেও নানাভাবে পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা। তার সঙ্গেই রাশিয়ার উপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরাসরি যুদ্ধ না করে রাশিয়াকে আর্থিকভাবে ধাক্কা দেওয়াই মূল লক্ষ্য ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং আমেরিকার। বিশ্বের বিভিন্ন দেশগুলির কাছে রাশিয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক অসহযোগিতা করার আবেদন করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টও।

 

 

 

এর আগে, শুক্রবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো ইউরোপে থাকা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সম্পত্তি জব্দের সিদ্ধান্ত নেয়। ইউক্রেনে আগ্রাসনের জবাবে তাদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইইউ। চলতি মাসের শুরুর দিকে রাশিয়ার কিছু নাগরিকের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন।