আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারী ইতি খানমকে (২০) নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন স্বামী। রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে ছিলেন তিনি। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। গত পাঁচ দিনেও হাসপাতালে কোনো স্বজন তাকে দেখতে আসেনি।
মাশরাফির সহায়তায় অবশেষে আশ্রয় খুঁজে পেয়েছেন ইতি। সোমবার (০৮ জুন) দুপুরে লোহাগড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ হাসপাতাল থেকে ইতিকে স্বামীর বাড়িতে দিয়ে আসেন।
নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার নির্দেশনায় অবশেষে স্বামীর বাড়িতে ইতির জায়গা হলো। ইতি খানম (২০) উপজেলার ইতনা গ্রামের কাজি হারুন অর রশিদের মেয়ে এবং একই গ্রামের বাসিন্দা তিতাস কাজির স্ত্রী।
লোহাগড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, ইতি আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তাকে একজন চৌকিদার (নারী) দেখভাল করবেন। আরেকজন চৌকিদার (পুরুষ) তার খোঁজখবর রাখবেন। পুলিশ তাকে কিছু খাদ্যসামগ্রী দিয়েছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান আপাতত তার বাজার খরচ দেবেন। এমপি মাশরাফি বিন মর্তুজা ইতির খোঁজখবর রাখবেন এবং পাশে আছেন। তার কোনো খাদ্যসহায়তা লাগলে এমপি দেবেন বলেছেন। এছাড়া যেকোনো বিপদে ইতির পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন এমপি। একই সঙ্গে ইতির সন্তান প্রসবের সময়ের সব খরচ বহন করবেন এমপি মাশরাফি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ১ জুন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ইতি খানমকে নির্যাতন করে রাস্তায় ফেলে যান স্বামী তিতাস কাজি। অচেতন হয়ে রাস্তায় পড়েছিলেন ইতি। পরে জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানায় স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে পুলিশ। এরপর থেকে স্বামী, শ্বশুরবাড়ি কিংবা বাবারবাড়ির কেউ খোঁজখবর নেয়নি ইতির।
এদিকে, ঘটনার দিন থেকে ফোন নম্বর বন্ধ করে পালিয়ে গেছেন ইতির স্বামী তিতাস কাজি। এ অবস্থায় ইতি পুলিশকে জানান স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করতে রাজি নন; তিনি স্বামীর সংসার করতে চান। তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার বিকেলে স্বামীর বাড়িকে ইতিকে দিয়ে আসে পুলিশ।