Home > আন্তর্জাতিক > তেলআবিবের অলিগলিতে দখলদার ইসরায়েলের পতনের গুঞ্জন

তেলআবিবের অলিগলিতে দখলদার ইসরায়েলের পতনের গুঞ্জন

ফিলিস্তিনিদের ইসরায়েল বিরোধী প্রতিরোধ আন্দোলন ইন্তিফাদা বা গণঅভ্যুত্থানের জোয়ার অধিকৃত ভূখন্ডের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ায় ইসরায়েলের সর্বত্র ব্যাপক আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং ফিলিস্তিনিরা নিজেদের ভাগ্য নির্ধারনী অবস্থায় এসে পৌঁছেছে। রাজধানী তেলআবিবের অলিগলিতে এখন দখলদার ইসরায়েলের পতনের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।

ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাকেরি বিশ্ব কুদস দিবস উপলক্ষে এক বাণিতে ইসরায়েলের বর্তমান দুরাবস্থার কথা তুলে ধরে বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ সংগ্রাম ও দৃঢ় মনোবল দখলদার ইসরায়েলকে হতাশ করে দিয়েছে’।

গত ৭০ বছরের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের জনগণ জুলুম নির্যাতনের স্বীকার হয়ে বিভিন্ন দেশে শরণার্থী জীবন যাপন করছে এবং প্রতিদিনই আমেরিকা ও ইসরায়েলে নানা ষড়যন্ত্রের সম্মুখীন হচ্ছে। ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর মজলুমের প্রতি সমর্থনের অংশ হিসেবে ইমাম খোমেনি(র.) প্রথমবার রমজান মাসের শেষ শুক্রবারকে বিশ্ব কুদস দিবসের ঘোষণা দেন। যাতে এ দিবস পালনকে কেন্দ্র করে মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য জোরদার হওয়ার পাশাপাশি অসহায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি সারা বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের সমর্থন পাওয়া যায়। ইমামের ওই ঘোষণা থেকে বোঝা যায় বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে মজলুমের প্রতি সমর্থন দেয়া এবং অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের অন্যতম মূল নীতি।

তেহরানে ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের প্রতিনিধি খালেদ কাদুমি ইরানের সংসদ স্পিকার ড. আলী লারিজানির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা আমির আব্দুল্লাহিয়ানের সঙ্গে এক সাক্ষাতে ইসরাইলের মোকাবেলায় ইরানের সংসদে সম্প্রতি একটি আইন পাশের ব্যাপারে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘যখন কোনো কোনো দেশ দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে তখন ইরানই প্রথম দেশ যে কিনা ইসরাইলের শান্তি ও নিরাপত্তা বিরোধী কর্মকাণ্ড মোকাবেলায় সংসদে বিশেষ আইন পাশ করেছে যা কিনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও যুগান্তকারী একটি পদক্ষেপ’।

গত কয়েক বছরে পরিস্থিতির অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। যদিও দখলদার ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ সংগ্রাম বেগবান হয়েছে কিন্তু অন্যদিকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোও ভেতর থেকে ধসে পড়ার উপক্রম হয়েছে।

মার্কিন মানবাধিকার কর্মী ও গবেষক রবার্ট ফান্তিনা এক নিবন্ধে দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময়কার সঙ্গে বর্ণবাদী ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের আন্দোলন সংগ্রামের অভিন্ন অবস্থার কথা তুলে ধরে বলেছেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে প্রচার চালানোর পাশাপাশি দখলদার এ শক্তির বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দেয়া যৌক্তিক বলে আমি মনে করি।

নিঃসন্দেহে শিশু হত্যাকারী ও সীমাহীন অপরাধযজ্ঞে জড়িত ইসরায়েল কোনো অবস্থাতেই ফিলিস্তিনিদের অধিকার মেনে নিতে রাজি হবে না এবং সংগ্রামের কোনো বিকল্প নেই। এ অবস্থায় বিশ্ব কুদস দিবস উপলক্ষে ইসরায়েলের পতনের ব্যাপারে  ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানের বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।