ঈদে বাড়ি ফেরা ঠেকাতে না পারলে বিশ্বজুড়ে মহামারি আকারে ছড়ানো করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।
সোমবার (১৮ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আশঙ্কা প্রকাশ করে সংগঠনটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাজধানীসহ সারা দেশে গত ২৬ মার্চ থেকে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি চলছে। এই ছুটি চলবে ৩১ মে পর্যন্ত। এরই মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে মুসলিম সম্প্রদায়ের ঈদুল ফিতর। অথচ বিশ্বজুড়ে মহামারি আকারে ছড়ানো করোনা প্রতিরোধের জন্য সারা দেশে অঘোষিত লকডাউন চলছে, বন্ধ রয়েছে গণপরিবহনও।
সেখানে বলা হয়, সরকারের পক্ষ থেকে এবারের ঈদযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঈদের আগে ৪ দিন, ঈদের দিন ও ঈদের পরের ২ দিন সব ধরনের যান চলাচলে কঠোর থাকার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। অথচ মানুষ ইতিমধ্যে অন্যান্য বছরের মতোই ঈদযাত্রার আমেজ নিয়ে ছুটছে বাড়ির দিকে।
এতে বলা হয়েছে, গণ পরিবহন বন্ধ থাকায় যাত্রীরা বাহন হিসেবে ব্যক্তিগত গাড়ি ও পণ্যবাহী যান এবং মোটরসাইকেলকে বেছে নিয়েছে। কোনভাবেই মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষগুলো গাদাগাদি করে নৌঘাট দিয়ে ফেরিতে পারাপার করছে। পুলিশবাহিনীর পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও যা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। দীর্ঘ হচ্ছে লাশের মিছিল। এদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই সাধারণ মানুষের।
বিজ্ঞপ্তিতে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সামসুদ্দীন চৌধুরী বলেন, বিশ্বজুড়ে মহামারির এই প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে এবার পালিত হবে ঈদুল ফিতর। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের ঈদ আমাদের জন্য ভিন্নরকম। সারা দেশে প্রতিদিন করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। করোনা সংক্রমণ থেকে সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে সরকারের উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার। তবে ঈদযাত্রা ঠেকাতে ব্যর্থ হলে সারা দেশে করোনার সংক্রমণ বিপুলভাবে ছড়িয়ে যাবে। ঝুঁকি নিয়ে ব্যক্তিগত গাড়ি, পণ্যবাহী যান ও মোটরসাইকেল নিয়ে যেভাবে মানুষ ঈদযাত্রা শুরু করেছে এতে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনাও বৃদ্ধি পাবে।
তিনি আরও বলেন, এবারের ঈদযাত্রা ঠেকাতে শুধু পুলিশ বাহিনী নয়, পাশাপাশি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কর্মকর্তা ও মাজিস্ট্রেটগণ এবং প্রতিটি জেলা-উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সামাজিক সংগঠনগুলোকে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেল যেন এক জেলা থেকে অন্য জেলায়, এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলা চলাচল করতে না পারে সে বিষয়ে সকল সংস্থাকে কঠোর অবস্থানে থাকতে হবে। পণ্যবাহী যানে যেন কোনোভাবে যাত্রী বহন করা না হয় এবং নৌঘাটগুলোতে ফেরি চলাচলে যেন কোনো যাত্রী বহন করতে না পারে সে বিষয়ে সরকারকে এখনই কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।