Home > আন্তর্জাতিক > করোনার ভ্যাকসিন যুক্তরাষ্ট্রকে সবার আগে দেবে না সানোফি

করোনার ভ্যাকসিন যুক্তরাষ্ট্রকে সবার আগে দেবে না সানোফি

ফ্রান্সের ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি সানোফি করোনা ভাইরাসের সম্ভাব্য ভ্যাকসিন সবার আগে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ছাড়ার প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এসেছে।

বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির সিইও পল হাডসন বলেছেন, করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হলে পুরো বিশ্বেই দেয়া হবে এটি।

এর আগে কোম্পানিটির সিইও পল হাডসন বলেছিলেন, টিকার গবেষণায় অর্থ বিনিয়োগ করার ঝুঁকি নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ফলে তারাই পাবে সবার আগে।

তার এই মন্তব্যের পর ফ্রান্স সরকারের পক্ষ থেকে বড় ধরনের সমালোচনা ও চাপের মুখে পড়ে ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। ফরাসী প্রধানমন্ত্রী এডুয়ার্ড ফিলিপ বলেছিলেন, সবার টিকার প্রাপ্যতার বিষয়টি নিয়ে কোনও আলোচনা হতে পারে না। এরপরই সানোফির চেয়ারম্যান সবার জন্য টিকার সমান প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার ঘোষণা দিয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এখবর জানিয়েছে।

পল হাডসন বুধবার বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের গবেষণায় সহযোগিতা করেছে। গবেষণায় ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও তারা অর্থ বিনিয়োগ করেছে। সুতরাং ভ্যাকসিন তৈরি হলে প্রথমে তা তাদের প্রাপ্য।

এরপরই ফ্রান্সে বিতর্ক শুরু হয় এই মন্তব্য নিয়ে। ফরাসীরা বলছেন, গত কয়েক বছরে সরকার কয়েক কোটি ইউরো দিয়ে সানোফিকে সাহায্য করেছে।

বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের সহকারী অর্থমন্ত্রী অ্যাগনেস পান্নিয়ার রুনাশের বলেন, করোনা গবেষণায় অর্থসাহায্য করেছে বলে সানোফি যদি আগেই যুক্তরাষ্ট্রে ভ্যাকসিন পাঠাতে চায়, আমরা মেনে নেব না। তিনি জানান, হাডসনের মন্তব্য শুনেই তিনি সানোফির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ফ্রান্সে সানোফির যে অফিস রয়েছে, তার প্রধান আমাকে বলেছেন, ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হলে সারা বিশ্বেই তা দেওয়া হবে। ফরাসীরাও বঞ্চিত হবে না।

করোনায় বিশ্ব জুড়ে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ এবং মারা গিয়েছেন প্রায় ৩ লাখ। বিশ্বজুড়ে কয়েক ডজন সংস্থা ওই রোগের ভ্যাকসিন বার করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

মে মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ঘোষণা করে, করোনা নিয়ে গবেষণার জন্য ৮০০ কোটি ডলারের তহবিল গড়ে তোলা হবে। যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য সেই তহবিলে অর্থ দিতে অস্বীকার করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে অর্থ দেবেন না। কারণ তারা করোনা পরিস্থিতি ঠিকমতো সামলাতে পারেনি।

ট্রাম্পের দাবি, চলতি বছরের শেষেই ভ্যাকসিন বানিয়ে ফেলবে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও তাতে সন্দেহ আছে বহু বিজ্ঞানীর।

বিতর্কের মুখে সানোফির চেয়ারম্যান সার্জ ওয়েনইবার্গ বলেছেন, আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই: কোনও দেশকে নির্দিষ্টভাবে অগ্রিম চালান দেওয়া হবে না। তিনি দাবি করেন, হাডসনের বক্তব্য ভুলভাবে প্রচারিত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী ফিলিপ বলেছেন, তিনি ওয়েইনবার্গের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং সবার জন্য সমানভাবে সানোফির টিকা বিতরণের প্রয়োজনীয় আশ্বাস পেয়েছেন।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, সাম্প্রতিক উদ্যোগ প্রমাণ করেছে যে টিকা বাজার শক্তির বিষয় না। আগামী সপ্তাহে তিনি সানোফি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন চায় সবদেশের জন্য টিকা পাওয়ার সমান সুযোগ থাকতে হবে। ইউরোপিয়ান কমিশনের মুখপাত্র স্টিফান ডি কির্সমায়েকার বলেছেন, কোভিড-১৯ এর টিকা বৈশ্বিক জনগণের পণ্য এবং প্রাপ্যতা সমান ও সর্বজনীন হওয়া উচিত।