Home > 'কোভিড-১৯' সর্বশেষ আপডেট > সুখবরঃ বাংলাদেশের করোনা থেকে মুক্তির পথ ৫টি

সুখবরঃ বাংলাদেশের করোনা থেকে মুক্তির পথ ৫টি

বাংলাদেশ করোনার অন্ধকার গহ্বরে ডুকে গেছে, এখন করোনার বিভীষিকা কতটা ভয়ঙ্কর হবে তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনো বাংলাদেশের সামনে সুযোগ রয়েছে। অনেক নেতিবাচক কাজের পরেও কিছু ইতিবাচক কাজ করেছে বাংলাদেশ।

করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ার আগেই বাংলাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা হয়েছিল এবং হা*সপা*তাল ব্যবস্থাপনাতে সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও কিছু পদক্ষেপ নিয়ে রেখেছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, করোনা থেকে বাঁচতে হলে এখন আমাদের কঠিনভাবে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে।

তাহলে করোনার যে প্রকোপ লাগামহীনভাবে বেড়ে চলছে সেটাকে নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে, সীমাবদ্ধ করা যাবে এবং একটি যুক্তিসঙ্গত সময়ে করোনার মহামা’রি থেকে বের হয়ে আসা যাবে। বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে এই ব্যাপারে পাঁচটি সুনির্দিষ্ট কর্মপন্থার সুপারিশ করছি আম’রা;

লক ডাউনের মেয়াদ বাড়াতে হবে

বর্তমানে ১৪ই এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন করোনার পিক সিজন শুরু হয়েছে। তাই আগামী দুই সপ্তাহ, বা কেউ কেউ মনে করেন পুরো চলতি মাসটা অ’ত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এই সময়ের মাঝেই বাংলাদেশের ভাগ্য নির্ধারিত হবে। কাজেই এখনই যদি আম’রা ছুটি বা লক ডাউন প্রত্যাহার করি, তাহলে পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে এবং আম’রা আরো গভীর সঙ্কটের মধ্যে পড়তে পারি। এই কারণে তাঁরা মনে করছেন যে, আমাদের করোনার প্রকোপ থেকে বেরিয়ে আসতে হলে লক ডাউনের মেয়াদ বাড়াতে হবে এবং শুধু সাধারণ ছুটি নয়, কঠিনভাবে এই লক ডাউন জারি করতে হবে যাতে সব ধরণের কর্মকা’ণ্ড বন্ধ থাকে।

করোনা
সচেতনতা বাড়াতে হবে

আম’রা যতই বলি, সরকার এটা করেনি কেন, ওটা করেছে কেন? তবে করোনা থেকে বাঁ’চার জন্য আমাদের সচেতনতা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। আম’রা দেখেছি যে, ২৬শে মা’র্চ থেকে ঘোষিত সাধারণ ছুটিতে সরকারি নির্দেশনা মানছেন না অনেকেই। অন্তত ৩০ ভাগ মানুষ ঘর থেকে নিয়মিত বের হচ্ছেন নানা অজুহাতে, আম’রা মেলামেশা করছি ইত্যাদি বিষয়ে আমাদের ব্যাপক সচেতনতার অভাব রয়েছে। বাংলাদেশের একটি বড় অংশের মানুষ এখনো বুঝতেই পারেনি এটা কত ভয়ঙ্কর এক ব্যাধি। এই কারণে সচেতনতা বাড়াতে হবে, সরকারি উদ্যোগে রেডিও, টেলিভিশন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচরণামূলক সতর্কতা বাড়াতে হবে, বিশেষ করে গুজবের বি’রুদ্ধে সত্য বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে।

চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের কাজে নামাতে হবে

আমাদের দুর্ভাগ্য যে আম’রা এখনো চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করতে পারিনি। করোনা চিকিৎসার মূল স্রোতের সাথে তাঁদেরকে মেশাতে পারিনি। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোতে যেভাবে অনেক চিকিৎসক অবসর ভেঙ্গে চিকিৎসা সেবায় ফিরেছেন, স্ব ইচ্ছায় নার্সিংয়ে নেমেছেন, বাংলাদেশে ঘটছে তাঁর উল্টোটা। আর এই অবস্থাটার অবশ্যই উত্তরণ ঘটাতে হবে, চিকিৎসকদের কাজে নামাতে হবে। তাহলে জনমনে যে অস্বস্তি, আতঙ্ক সৃষ্টি হচ্ছে তা দূর হবে এবং চিকিৎসকরা যখন তাঁদের উপদেশ, পরাম’র্শ দিবেন সেটা তখন মানুষ অনেক বেশি মানবে।

বেসরকারি হা*সপা*তালগুলোকে যুক্ত করতে হবে

আমাদের করোনা চিকিৎসায় বেসরকারি হা*সপা*তালগুলো এখনো যুক্ত হয়নি, সেই হা*সপা*তালগুলোতে করোনা পরীক্ষার কোন উদ্যোগও নেয়া হয়নি। কিন্তু পৃথিবীর সবগুলো দেশ, এমনকি পাশের দেশ ভারতেও বেসরকারি হা*সপা*তালগুলোতে র’ক্ত পরীক্ষাসহ বেশকিছু স্বাস্থ্য সেবা দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশে বেসরকারি হা*সপা*তালগুলো মোট স্বাস্থ্যসেবার ৬০ ভাগ দখল করে আছে। কাজেই বেসরকারি হা*সপা*তালগুলোকে এই করোনা যু’দ্ধে শামিল করার কৌশল খুব দ্রুতই নিতে হবে।

সরকারের কাজের সমন্বয় করা

সরকার অনেকগুলো কাজ করছে কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যেমন সমন্বয় নেই, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের তেমন সমন্বয় নেই। তাই করোনা মোকাবেলায় সরকারের সমন্বয় যেকোনভাবে বাড়াতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মাসটি আমাদের জন্য অ’ত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এই মাসে যদি আম’রা খুব কঠোরভাবে এই পাঁচটি কাজ অনুসরণ করি এবং এই পাঁচটি কাজ পালন করি তাহলে আম’রা করোনার এই ভয়াল থাবা থেকে হয়তো আস্তে আস্তে বের হয়ে আসতে পারবো।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার প্রকোপ থেকে চটজলদি বের হবার কোন পথ নেই। চীন তাঁদের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে অন্তত তিন মাস সময় লেগেছে। অন্যান্য দেশ এখনো পরীক্ষিত নয়। কাজেই আমাদের অ’পেক্ষা করতেই হবে এবং অস্থির, ধৈর্য্যহারা হয়ে ঘর থেকে বের হলে চলবে না।