Home > আন্তর্জাতিক > তাপস পালকে মেরে ফেলা হয়েছে, স্ত্রীর অভিযোগ

তাপস পালকে মেরে ফেলা হয়েছে, স্ত্রীর অভিযোগ

ভারতীয় শোবিজ অঙ্গনে এক নন্দিত অভিনেতার নাম তাপস পাল। অভিনয়ের পাশাপাশি নিজেকে যুক্ত রেখেছিলেন রাজনীতির সঙ্গেও। মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সপ্তাহ দুয়েক আগে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান এই অভিনেতা। তার মৃত্যুতে শুধু শোবিজ-ই নয়, রাজনীতি অঙ্গনেও নেমেছিল শোকের ছায়া।

স্বামীকে হারিয়ে এখন অনেকটা অসহায় তাপস পালের স্ত্রী নন্দিনী পাল। তবে এবার স্বামীর মৃত্যু প্রসঙ্গে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন নন্দিনী। তার স্বামীকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। শুধু তাই নয়, এর ন্যায় বিচারও চান স্ত্রী নন্দিতা।

ভারতীয় গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে নন্দিতা জানান, স্বামী তাপস পালকে মুম্বাইয়ের ওই হাসপাতাল কতৃপক্ষ মেরে ফেলেছে। আর এর ন্যায় বিচার চাইতেই তিনি এখন মুম্বাইতে গিয়েছেন।

নন্দিনীর দাবি, গত ১ ফেব্রুয়ারি অসুস্থ তাপসকে তিনি মুম্বাইয়ের বান্দ্রার একটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। অভিযোগ তুলেন, সেসময় তাপসের অসুস্থতার সম্পর্কে বলতে গেলে সেখানকার চিকিৎসক তা শুনতে রাজি হননি। উল্টো বলেন, রোগীর ‘পাস্ট হিস্ট্রি’ শুনতে তিনি উৎসাহী নন।

অসুস্থ তাপস পালকে দেখে ওই চিকিৎসক নন্দিনীকে প্রশ্ন করেন, “আপনি কেন ওঁকে হাসপাতালে এনেছেন?” এমনকি ৫০ হাজার টাকা জমা না করলে তাপসের চিকিৎসা শুরু করা হবে না বলে হাসপাতালের তরফে জানানো হয় বলে নন্দিনীর অভিযোগ। কিন্তু মাঝরাতে তাঁর কাছে অত টাকা না থাকায় মেয়ের বাড়িওয়ালার সাহায্যে টাকার ব্যবস্থা করে তাপসকে ভেন্টিলেশনে দিতে হয় বলে দাবি নন্দিনীর!

তিনি আরও দাবি করেন, ৭ ফেব্রুয়ারি তাপস পালের ভেন্টিলেশন খুলে দেওয়া হয়। তাপস তখন একেবারেই সুস্থ ছিলেন। আমার দিকে তাকিয়ে ও হাসল। বলল, বাপরে তুমি যা করলে! আমি বলেছিলাম, তুমি একদম ঠিক আছো।

এর পর থেকেই সমস্যা শুরু হয় বলে অভিযোগ করে নন্দিনী জানান, ঠিকমতো খেতে দেওয়া হত না তাপস পালকে। নার্সরা ক্যাফেটেরিয়া থেকে খাবার এনে খাওয়াতে বলত। এ নিয়ে তাঁর মেয়ের সঙ্গে এক দিন নার্সদের ঝামেলাও হয়ে বলে নন্দিনীর অভিযোগ। তাঁর আরও দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ফের অসুস্থ হয়ে যান তাপস পাল। আমার সম্মতিতেই ডায়ালিসিস শুরু হয়।

শুধু তাই নয়, হঠাৎ দেখি তাপসকে এক দিন বেঁধে রেখেছে তারা। কারণ জানতে চাওয়ায় তারা বলেন, এখন শিফ্টিং চলছে। ওঁকে কারও নজরে রাখা সম্ভব নয়।”

নন্দিনী আরও অভিযোগ করেছেন, তাপস পালের প্রস্রাব স্বাভাবিক হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে ক্যাথিটার পরিয়ে রাখা হয়।

নন্দিনী জানান, এই পরিস্থিতিতেই তাঁরা ঠিক করেন, ১৭ ফেব্রুয়ারি তাপসকে নিয়ে কলকাতায় ফিরবেন। কিন্তু সে দিন রাতেই সব ওলটপালট হয়ে যায়। ওই দিন হাসপাতাল থেকে ফোন করে জানানো হয় তাপস পালের হিমোগ্লোবিন কমে ৩.৫ হয়ে গিয়েছে।

তাঁর কথায়, ওই দিন সকালেই আমি দেখেছি তাপসের হিমোগ্লোবিন ৯। আশ্চর্য রকম ভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওকে রক্ত না দিয়ে আমাদের অনুমতির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এর পর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট। পর পর। তখনও সিনিয়র কোনও ডাক্তার নেই। এক জন ট্রেনি আর অন্য এক ডাক্তার।

গোটা ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছেন নন্দিনী। তিনি বলেন, “তাপসের সম্পর্কে এত অন্যায়, এত ভুল কথা শুনতে হয়েছে যে, মেয়ে এবং আমি আর পেরে উঠছি না। তবে এই মৃত্যুর বিচার আমি চাইবই। ছাড়ব না।”