Home > জাতীয় > সারাদেশ > পিটুনি দিয়ে শিক্ষকের দাড়ি উপড়ে ফেললেন আওয়ামী লীগ নেতা

পিটুনি দিয়ে শিক্ষকের দাড়ি উপড়ে ফেললেন আওয়ামী লীগ নেতা

ব্যবস্থাপনা কমিটির বিরোধের জের ধরে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার পিটুনি খেয়ে দুই দিন ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন মাগুরার শ্রীপুরের বাখেরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জিয়াউর রহমান জুয়েল। অভিযুক্ত মুসফিকুর রহমান মিল্টন সব্দালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

 

পেটানোর পাশাপাশি মুসফিকুর রহমান মিল্টন ওই শিক্ষকের দাড়ি উপড়ে ফেলেন। মানসিক যন্ত্রণায় ক্ষতবিক্ষত ওই শিক্ষক আর কোনোদিন শিক্ষকতা করবেন না বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। জিয়াউর রহমান জুয়েল ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য।

 

আত্মগোপনে থাকা শিক্ষক জিয়াউর রহমান মোবাইল ফোনে জানান, সব্দালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুসফিকুর রহমান গত চার মেয়াদে বাখেরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। মেয়াদ শেষ হওয়ায় এলাকাবাসী ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের মধ্যে এ বিষয়ে কয়েকদিন ধরে আলোচনা চলছিল।

 

সর্বশেষ গত সোমবার বিকেলে স্থানীয় সব্দালপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকাবাসীর উন্নয়নমূলক একটি সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে কথা প্রসঙ্গে বাখেরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির নতুন সভাপতি হিসেবে মুসফিকুর রহমান মিল্টনের চাচাতো ভাই লিয়াকত আলীর নাম আসে।

 

এসময় সেখানে উপস্থিত মিল্টন কেন তাকে আবারো সভাপতি করা হবে না জানতে চান। সভায় উপস্থিত বাখেরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপক মিত্র ও শিক্ষক জিয়াউর রহমান জুয়েল সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী পর পর দুই বছরের বেশি সভাপতি থাকা যায় না, এমন কথা তাকে জানান। এতে মিল্টন ক্ষুব্ধ হয়ে জিয়াউরকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করাসহ পেটাতে থাকেন। একপর্যায়ে মিল্টন তার দাড়ি ধরে টেনে কিছু অংশ ছিঁড়ে ফেলেন।

 

জিয়াউর রহমান আরো জানান, মিল্টন ঘটনার সময় ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপক মিত্রকেও মারধর করেছেন, কিন্তু প্রধান শিক্ষক ভয়ে মুখ খুলছেন না।

জিয়াউর রহমান বলেন, ‘সবার সামনে মিল্টন আমাকে মারধর করেছে। আমি কোনোদিন আর শিক্ষকতা করব না। ১৯৯৪ সালের এই বিদ্যালয়টি আমাদের নিজের হাতে গড়া। ১৯৯৫ সাল থেকে আমি বিনা বেতনে কাজ করছি। নানা সুবিধা নিতে মিল্টন আজীবন এখানে সভাপতি থাকতে চায়। মিল্টনের মতের বিরুদ্ধে গেলে সে যখন তখন যাকে যখন ইচ্ছা মারধর করে।’

 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপক মিত্রও স্বীকার করেন, তাকেও মিল্টন লাঞ্ছিত করেছেন।

জিয়াউর রহমানের স্ত্রী নিশাত সুলতানা বলেন, ‘মিল্টন আমার নির্দোষ স্বামীকে মারধর করেছে। এ কারণে তার মুখ ও কপাল ফুলে গেছে। মিল্টন আমার স্বামীর দাড়ি পর্যন্ত টেনে ছিঁড়ে ফেলেছে।’

 

এদিকে অভিযুক্ত শ্রীপুরের সব্দালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুসফিকুর রহমান মিল্টন মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘অন্যায়ভাবে গোপনে কমিটি করায় তিনি শিক্ষকদের গালমন্দ করেছেন, মারপিট নয়।’