Home > জাতীয় > সারাদেশ > নূর-রাব্বানীকে ছাড়াই সাড়ে ৮৩ লাখ টাকা খরচ করেছেন ডাকসু নেতারা

নূর-রাব্বানীকে ছাড়াই সাড়ে ৮৩ লাখ টাকা খরচ করেছেন ডাকসু নেতারা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) বার্ষিক বাজেট ১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। শনিবার ডাকসুর কার্যনির্বাহী সভায় গত ৯ মাসের ব্যয়ের হিসাব প্রকাশ করে। এতে দেখা যায়, বাজেটের ১ কোটি ৮৯ লাখ টাকার মধ্যে ৯ মাসে ৮৩ লাখ ৫১ হাজার ৩০৪ টাকা উত্তোলন করেছেন ডাকসুর বিভিন্ন পদে থাকা নেতারা। অন্যদিকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের স্পনসর থেকে ডাকসু ৬ লাখ ৮৭ হাজার ৫০৪ টাকা পেয়েছে। এ ছাড়া ডাকসু কার্যালয় ব্যবস্থাপনা খাতে ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৭৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

তবে ব্যয়ের খাতে ভিপি নুরুল হক নুর ও জিএস গোলাম রাব্বানীর নামে কোনো হিসাব নেই। ডাকসুর বিভিন্ন সম্পাদক ও সদস্য জিএসের অনুকূলে বরাদ্দ করা অর্থ তুলে ব্যয় করেছেন।

ওই বিবরণীতে দেখা যায়, ডাকসুর ১৬ জন প্রতিনিধি নির্বাচনের পর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন প্রোগ্রামের জন্য খরচ করেছেন ৮৩ লাখ ৫১ হাজার ৩০৪ টাকা ফান্ড থেকে উত্তোলন করেছেন। এছাড়া ডাকসু কার্যালয় ব্যবস্থাপনা খাতে ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৭৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। অন্যদিকে, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে স্পনসর থেকে ডাকসু নেতারা ৬ লাখ ৮৭ হাজার ৫০৪ টাকা পেয়েছেন বলেও বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়।

বিবরণীতে দেখা যায়, ডাকসুর ক্রীড়া সম্পাদক শাকিল আহমেদ ফান্ড থেকে ১৯ লাখ ৮১ হাজার টাকা, সাহিত্য সম্পাদক মাজহারুল কবির ১৩ লাখ ৭১ হাজার ৮৩৪ টাকা, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক শাহরিমা তানজিন ৬ লাখ ৭১ হাজার ৯০০ টাকা, স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী ৭ লাখ ৮২ হাজার ১২০ টাকা, সংস্কৃতি সম্পাদক আসিফ তালুকদার ১২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আরিফ ইবনে আলী ৯ লাখ ৯৯ হাজার টাকা, সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ছাত্র পরিবহন সম্পাদক শামস-ঈ-নোমান ৫৮ হাজার ৭০০ টাকা উত্তোলন করেছেন।

এছাড়া ডাকসুর সদস্যদের মধ্য থেকে তানভীর হাসান ৯০ হাজার টাকা, রাকিবুল হাসান ৬১ হাজার ৭০০ টাকা, রাইসা নাসের ৭৪ হাজার ৫০ টাকা, রকিবুল ইসলাম ২ লাখ ২০ হাজার টাকা, মুহা. মাহমুদুল হাসান ৯৪ হাজার ৫০০ টাকা, রফিকুল ইসলাম ৩০ হাজার টাকা, ফরিদা পারভীন ৬১ হাজার ৫০০ টাকা, সাইফুল ইসলাম ১ লাখ টাকা এবং যোশীয় সাংমা তহবিল থেকে ৪০ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন।

ডাকসুর চিফ এডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ডাকসুর প্রতিনিধিরা তাদের বিভিন্ন প্রোগ্রামের জন্য ডাকসুর ফান্ড থেকে যে পরিমাণ টাকা উত্তোলন করেছেন, তার একটি বিবরণী গতকাল আমি দিয়েছি। ওই বিবরণীতে ডিসেম্বর মাস (২০১৯) পর্যন্ত উত্তোলিত টাকার হিসাব উল্লেখ করা হয়েছে। ব্যয়কৃত অর্থের অডিট শেষ হলে পুরো হিসাবটা আমরা গণমাধ্যমে দিতে পারবো।’

বিবরণীতে ভিপি-জিএসের নামে কোনো টাকা বিবরণী নেই কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ভিপি, জিএস ও এজিএস এক টাকাও উত্তোলন করেননি। বিভিন্ন সম্পাদক ও সদস্যদের মাধ্যমে তারা টাকা উত্তোলন করেছেন এবং প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করে তার ভাউচার দিয়েছেন।’

ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ‘আমার জন্য ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। কয়েকটি কাজের জন্য আমি বরাদ্দ থেকে ৪০ হাজার টাকা চেয়েছিলাম। কিন্তু আমি এক টাকাও তুলতে পারিনি। আমাকে নামে মাত্র ডাকসুর এক্সিকিউটিভ কমিটিতে রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত যত খরচ হয়েছে, জিএস ও এজিএসের সিদ্ধান্তেই সব হয়েছে।’

অন্যদিকে, ডাকসুর জিএস গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘ডাকসুর বাজেট হয়েছে ১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এ পর্যন্ত আমাদের খরচ হয়েছে ৮৪ লাখ টাকার মতো। কিন্তু ফান্ড থেকে আমি এক টাকাও তুলিনি।’

কেন টাকা উত্তোলন করেননি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ডাকসুর ১৩ জন সদস্যের তো কোনো বরাদ্দ নেই। তারা যেসব কাজ করেছে, সব আমার বরাদ্দ থেকে ব্যয় করেছে। আমি আমার ব্যক্তিগত কোনো কাজ বা প্রোগ্রামের জন্য টাকা তুলিনি।’