Home > বিশেষ সংবাদ > ভোটের দিন রক্তাক্ত সাংবাদিককে হাসপাতালে গিয়ে হুমকি

ভোটের দিন রক্তাক্ত সাংবাদিককে হাসপাতালে গিয়ে হুমকি

হামলা চালিয়ে, কুপিয়ে রক্তাক্ত করার পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাংবাদিককে হুমকি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত নির্বাচিত কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকন। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খোকন তার অনুসারীদের নিয়ে ঢামেকে এসে এ হুমকি দেন। এ সময় সুমন হাসপাতালের বেডে একাই ছিলেন। কিছুক্ষণ পর সুমনের সহকর্মীরা এলে তারা চলে যান।

এ বিষয়ে চিকিৎসাধীন আগামী নিউজ ডটকমের সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান সুমন জানিয়েছেন, এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা হলে বা বাড়াবাড়ি করলে দেখে নিবেন বলে হুমকি দিয়েছেন খোকন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ডিএমসিএইচ) গিয়ে দলবল নিয়ে হুমকি দেন তিনি। শনিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ঢাকা উত্তরের ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকন।

ঢামেকে চিকিৎসাধীন সুমন জানান, প্রথমে ঢামেকে এসে আমাকে খুঁজতে থাকেন নির্বাচিত শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকন ও তার সাথে আসা লোকজন। পরে আমাকে দেখতে পেয়ে বেডের পাশে বসেন। কথা বলার এক পর্যায়ে নির্বাচনের দিনের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে কোন মামলা না করার জন্য প্রথমে অনুরোধ জানান। হামলার সঙ্গে তিনি বা তার লোক জড়িত নয় বলে দাবি করেন। তবে চিকিৎসাধীন সুমন তার অনুরোধ প্রত্যাখান করায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন খোকন। তার বিরুদ্ধে মামলা হলে তিনিও দেখে নেবেন বলে জানিয়ে যান।

শনিবার নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলাকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনে থাকা সাংবাদিক সুমনকে মারধর ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলরের সমর্থক-সন্ত্রাসীরা। শনিবার দুপুরে সুমনকে দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ। এসময় তিনি গুরুতর আহত মোস্তাফিজুর রহমান সুমনের ওপর হামলাকারীদের ফুটেজ দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

র‌্যাব ডিজি বলেন, সাংবাদিক সুমনের ওপর যারা হামলা চালিয়েছে তাদের ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

এদিকে, সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান সুমনের ওপর হামলা ও হুমকির বিষয় অস্বীকার করেছেন কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকন। তিনি বলেন, আমি তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। একজন আহত মানুষকে আমি হুমকি দেব কেন, বরং আমি বলেছি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচারে আমি সব ধরণের সহযোগিতা করব। কারা তাকে হামলা করেছে আমি জানিনা। হামলাকারীদের তিনি চিনেন না বলে জানান।

সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান সুমনসহ কয়েকজনের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ডিআরইউ। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী এক বিবৃতিতে এসব ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছেন।

জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ডিআরইউ নেতারা। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া না হলে ডিআরইউ সদস্যদের ওপর হামলার প্রতিবাদে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন তারা।