বিস্ফোরিত গোলার অংশবিশেষ হাতে নিয়ে বিচার চাই, বিচার চাই স্লোগান দিচ্ছে শূন্যরেখায় বসবাসকারী রোহিঙ্গা শিশুরা। মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তের শূন্যরেখায় এভাবে জাতিসংঘের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। এ সময় শিশুদের হাতে ছিল ব্যানার-ফেস্টুন।
এদিকে বাংলাদেশের সীমান্তে মিয়ানমার বাহিনীর অব্যাহত মর্টারশেল ও গোলাবর্ষণের কারণে নিজেরা নিরাপত্তাহীনতায় আছে উল্লেখ করে দুপুরে নিরাপত্তা চেয়ে জাতিসংঘের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রুর শূন্যরেখায় বসবাসকারী রোহিঙ্গারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা কমিটির সর্দার (হেড মাঝি) দিল মোহাম্মদ।
এর আগে সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা কমিটির সর্দার (মাঝি) দিল মোহাম্মদ স্বাক্ষরিত চিঠিটি ই-মেইলে জাতিসংঘের সদর দফতরে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দিল মোহাম্মদ নিজেই।
জাতিসংঘে পাঠানো চিঠির একটি কপি সময় প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। চিঠিতে ২০১৭ সালে জন্মভূমি থেকে নির্যাতিত হয়ে বিতাড়িত হওয়ার কথা উল্লেখ করে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা এখনো হত্যার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে দাবি করেন। এর জন্য ইচ্ছে করেই শূন্যরেখায় মর্টারশেল ও গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে। এতে একজনের মৃত্যু ও ৫ জন আহত হওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে।
চিঠির ব্যাপারে তুমব্রু কোনারপাড়ার শূন্যরেখা আশ্রয়শিবির ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান দিল মোহাম্মদ বলেন, ‘আমাদের দেশ মিয়ানমারে ফিরতে আমরা অপেক্ষায় আছি। গত ৫ বছর ধরে আমরা শূন্যরেখায় আছি। কিন্তু বারবার মিয়ানমার সরকার এই শূন্যরেখায় নানাভাবে হামলা করছে। গত ১৬ সেপ্টেম্বরও আরাকান আর্মি ও সেনাবাহিনীর যুদ্ধের বাহানা দিয়ে শূন্যরেখায় আমাদের ওপর ৩ থেকে ৪টি মর্টারশেল ফেলেছে। একটি মর্টারশেল বিস্ফোরিত হয়ে ঘটনাস্থলেই এক রোহিঙ্গা মারা গেছে। আর ৫ জন আহত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা একটা চিঠি দিয়েছি জাতিসংঘের কাছে। শূন্যরেখার রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার সেনাবাহিনী হুমকি দিচ্ছে, বারবার মাথার ওপর মর্টারশেল মারছে। আমরা এখন ভয়ে আছি। তাই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জাতিসংঘের কাছে আবেদন করেছি।’
এদিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ৩নং ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, শূন্যরেখার রোহিঙ্গাদের নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে মিয়ানমার প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় তাদের তাড়াতে নতুন পাঁয়তারা করছে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনে বিতাড়িত হয়ে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থান করছে সাড়ে চার হাজার রোহিঙ্গা।