Home > ধর্ম > সাত শ্রেণির মানুষের জন্য আল্লাহর আরশের ছায়ার ব্যবস্থা থাকবে

সাত শ্রেণির মানুষের জন্য আল্লাহর আরশের ছায়ার ব্যবস্থা থাকবে

প্রতিটি মানুষকেই মৃ’ত্যুবরণ করতে হবে। মৃ’ত্যুর পর শুরু হবে পরকালীন জীবন। কবর থেকে শুরু করে কেয়ামত, তারপর শেষ বিচারের জন্য তোলা হবে রোজ হাশরের ময়দানে। এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহের অবকাশ নেই। সেইদিন হযরত আদম (আ:) থেকে কেয়ামতের আগ পর্যন্ত সব মানুষ হাশরের ময়দানে একত্রিত হবে। হাশরের ময়দানে সবাইবে দুনিয়ার কৃতকর্মের হিসাব দিতে হবে। সবার মাথার ওপরে থাকবে প্রচণ্ড তাপদাহী সূর্য। সূর্যের প্রখর তাপে সে সময় মানবমন্ডলীর যে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হবে, তা বর্ণনাতীত। সেই কঠিন মু’সিবতের দিন ৭ শ্রেণীর মানুষের জন্য আল্লাহ তা’য়ালার আরশের ছায়ার ব্যবস্থা থাকবে।

বিশুদ্ধ ৬ খানা হাদীস সংকলনের মধ্য সেরা বোখারী ও মু’সলিম শরীফে হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে; তিনি বলেন, রাসূলে করিম (স.) ইরশাদ করেছেন, শ্রেণীর মানুষকে মহান আল্লাহ হাশরের মাঠে তাঁর আরশের নিচে ছায়া দেবেন, যেদিন আরশের ছায়া ছাড়া অন্য কোন ছায়া থাকবে না। তারা হচ্ছেন-

১.ই’মানদার ন্যায় বিচারকঃ ন্যায় বিচারকারীকেই সেদিন আল্লাহতায়ালা হাশরের ময়দানে সূর্যের ভয়াবহ তাপ থেকে আরশের ছায়া প্রদানের মাধ্যমে প্রশান্তি দেবেন।

২.আল্লাহভীরু যুবকঃ যে তার যৌবনকালে প্রভুর ইবাদত করেছে। কারণ জীবনের বসন্তকালে অর্থাৎ যৌবনে অ’পকর্ম ত্যাগ করা বেশ কঠিন। সব অ’পকর্ম ত্যাগ করে আল্লাহর ইবাদতে ব্যস্ত যুবকের জন্যই হাদিসে এ সুসংবাদ দেয়া হয়েছে।

৩.ম’সজিদের প্রতি আন্তরিক স’ম্পর্ক স্থাপনকারী ঈ’মানদারঃ সেই ব্যক্তি যার অন্তর সর্বদা ম’সজিদের সাথে বাঁ’ধা থাকে। অর্থাৎ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামায়াতের সাথে ম’সজিদে আদায় করে। এক ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে অন্য ওয়াক্ত আদায় করার জন্য যার হৃদয় উদগ্রীব থাকে।

৪.আল্লাহর জন্য ভালবাসাকারী ব্যক্তিগণঃ যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পরস্পরকে ভালোবাসেন, সৎ কাজ করেন, একত্রিত হন, আবার তাঁর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে স’ম্পর্ক ছিন্ন করেন অর্থাৎ দুনিয়ার কোনো স্বার্থে তারা স’ম্পর্ক সৃষ্টি করে না।

৫.আল্লাহর জিকিরকারী বান্দাগণঃ যারা নির্জনে আল্লাহপাকের জিকিরে ও ইবাদতে মশগুল থাকেন এবং আল্লাহর ভয়ে যাদের নয়ন অশ্রুসিক্ত হয়।

৬.সৎ চরিত্রের অধিকারীগণঃ যাকে কোনো সম্ভ্রান্ত পরিবারের রূপসী রমণী কামনা-লালসা পূরণের উদ্দেশ্যে আহবান করে। কিন্তু এরূপ সুযোগ পেয়েও তিনি বলেন, আমি আল্লাহকে ভয় করি।

৭.গো’পনে দানকারীগণঃ যারা গো’পনে সাদকা বা দান করেন। যা ডান হাতে দান করলে বাম হাত খবর রাখে না। অর্থাৎ নাম প্রচার, সম্মান, খ্যাতি বা স্বার্থের জন্যে নয় বরং আল্লাহপাকের সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই গো’পনে অর্থ সম্পদ দান করে থাকেন।

মহান আল্লাহ পাক যাকে ইচ্ছা তাকে সঠিক পথে পরিচালিত করেন। সুতরাং মহান আল্লাহ পাকের কাছে প্রর্থনা, আম’রা যেন উপরোক্ত সাত শ্রেণীর সৌভাগ্যবানদের দলভুক্ত হতে পারি।

সে লক্ষ্যে আমল করার তৌফিক মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে দান করুন আল্লাহুম্মা আমিন।

লেখক : হাফিজ মাছুম আহম’দ দুধরচকী’
প্রিন্সিপালঃ- শাহ’জালাল (রঃ), ৩৬০ আউলিয়া লতিফিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা সিলেট
সাবেক ই’মাম ও খতিব কদমতলী মাজার জামে ম’সজিদ, সিলেট।