Home > বিশেষ সংবাদ > ঢাবি ছাত্রীর ধর্ষক গ্রেফতারকে ‘রেশমা নাটক’

ঢাবি ছাত্রীর ধর্ষক গ্রেফতারকে ‘রেশমা নাটক’

ঢাবি ছাত্রীর ধ’র্ষক গ্রেফ’তারকে- রাজধানীর কুর্মিটোলায় রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধ’র্ষণের অভি’যোগে মজনু নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফ’তারের ঘটনাকে ‘রেশমা নাটক’ বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। শুক্রবার নিজের ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে এ মন্তব্য করেন তিনি।

ঢাবির আইন বিভাগের এই অধ্যাপক বলেন, ‘অভি’যোগ রয়েছে যে রেশমা উদ্ধার নাটক করা হয়েছিল হেফাজতের সমাবেশে হাম’লাকে আড়াল করার জন্য। তারপর দিনে দিনে মি’থ্যার পাহাড় এতো উঁচু হয়েছে যে সত্য কথা বললেও মানুষ আর বিশ্বাস করে না তাদের।’

‘ধ’র্ষণের অভি’যোগে মজনু গ্রেফ’তারের মধ্য দিয়ে তা আবার দেখা গেল’, যোগ করেন আসিফ নজরুল। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকালে সাভারে আট তলা রানা প্লাজা ভেঙে পড়ে ১১শ’র বেশি পোশাক শ্রমিক নি’হত হয়। আ’হত হয় বহু মানুষ। ওই ঘটনা ছিল শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্ব-ইতিহাসেরই অন্যতম ভয়া’বহ শিল্প-দুর্ঘ’টনা।

ওই সময় রানা প্লাজার ধ্বং’সস্তূপ থেকে ১৭ দিন পর পোশাককর্মী রেশমা বেগমকে উদ্ধা’রের ঘটনাটিকে সাজানো নাটক বলে জানায় যুক্তরাজ্যের ট্যাবলয়েড মিরর।

সাইমন রাইটের লেখা মিরর-এর ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, রানা প্লাজার তৃতীয় তলায় রেশমার সঙ্গে কাজ করতেন এমন একজন পুরুষ কর্মী জানিয়েছেন ভবন ধসে পড়ার পর ওই দিনই তিনি এবং রেশমা একসঙ্গে ধ্বং’সস্তূপ থেকে বেরিয়ে আসেন।

ওই সহকর্মী বলেন, ‘আমরা দুজন একসঙ্গেই হেঁটে ধ্বং’সস্তূপ থেকে বেরিয়ে আসি। এরপর দুদিন একই হাসপাতালে চিকত্সাধীন ছিলাম। এরপর তিনি (রেশমা) উধাও হয়ে যান। ১৭ দিন পর তাঁকে দেখলাম টেলিভিশনে। তারা এটাকে অলৌ’কিক ঘটনা বলে জানাল। কিন্তু এটা ছিল ধোঁ’কাবা’জি।’

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রেশমা যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন ওই বাড়ির কর্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, রানা প্লাজা ধ’সে পড়ার পর ওই দিনই রেশমাকে উ’দ্ধার করা হয়। এরপর পাশের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি চিকিত্সা নেন।

মিরর-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নিরক্ষর রেশমাকে কয়েক দিন আগে ঢাকার একটি পাঁচতারা হোটেলে চাকরি দেওয়া হয়েছে বিশাল বেতনে। এ উপলক্ষে তাঁকে এক সংবাদ সম্মেলনে হাজির করা হয়।

এ সময় সাংবাদিকেরা যখন প্রশ্ন করেন যে উদ্ধা’রের ঘটনাটি সাজানো ছিল কি না, তখন রেশমা রে’গে যান। তিনি বলেন, ‘আমি যেখানে ছিলাম, সেখানে তো আপনারা ছিলেন না। কাজেই আপনাদের কোনো ধারণা নেই।’

৪ বছরেও তনুর ধ’র্ষককে ধরা গেল না কেন: আসিফ নজরুল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে রাজধানীর কুর্মিটোলায় রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ধ’র্ষণের ঘটনায় ধ’র্ষককে গ্রেফ’তার করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আ’ইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।

তার স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরো হলো:

দুদিনের মধ্যে ঢাবি ছাত্রীর ধ’র্ষক মজনুকে ধ’রা গেছে। ধন্যবাদ সরকারকে। কিন্তু সাথে সাথে কিছু প্রশ্ন তোলাও জরুরী এখন।

কুমিল্লায় তনু ধ’র্ষন আর হ’ত্যার ঘটনা ঘটেছে প্রায় চার বছর আগে। সে ঘটনার পাশ’বিকতা স্তদ্ধ করেছিল গোটা সমাজকে। মজনুকে এক লহমায় ধরা গেলে, তনুর ধ’র্ষক/হ’ত্যাকারীকে ধরা গেল না কেন আজো?

এটা কি মজনু আর তনুর ধ’র্ষকের শ্রেনীচরিত্র ভিন্ন বলে? মজনু তুচ্ছাতিতুচ্ছ একজন ব্যক্তি। তনুর হ’ত্যাকারী নিশ্চয় এমন তুচ্ছ নয়। সে বা তারা নিশ্চয় ক্ষম’তাবলয়ের কেউ। তা নাহলে এতো ভিন্নতা কেন?

মজনুকে গ্রেফ’তার সরকারের সামর্থ্যের প্রমান হলে এটা অন্যান্য ক্ষেত্রে দেখানো যায়না কেন? কেন হয়না তনুর ধ’র্ষক গ্রেফ’তার? কেন হয়না আরো বহু ধ’র্ষক গ্রেফ’তার? কেন??

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় টিউশনি করে বাসায় ফেরার পথে কুমিল্লা সে’নানিবাস এলাকায় পাশবিক নির্যা’তনের পর হ’ত্যা করা হয় তনুকে। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ময়নামতি সেনানিবাসের পাওয়ার হাউসের পানির ট্যাংক সংলগ্ন স্থানে তার মৃ’তদে’হ পাওয়া যায়।

নি’হত তনু ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ইয়ার হোসেনের মেয়ে। টিউশনি করে পড়াশোনার খরচ যোগাতেন তনু। তাদের গ্রামের বাড়ি মুরাদনগর উপজেলার মির্জাপুরে। ঘটনার ৪ বছরেও এখনও হ’ত্যা র’হস্য উদঘাটন হয়নি।