Home > আন্তর্জাতিক > ইরানকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে মার্কিন সেনাবাহিনী

ইরানকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে মার্কিন সেনাবাহিনী

তেল আবিবসহ মার্কিন ৩৫টি টা’র্গে’ট নি’শা’নায়। প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্রও। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন, তারা ইরানের ৫২টি স্থাপনাকে টা’র্গে’ট করেছেন।

যু’দ্ধের এই দা’মা’মায় মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে বিমানঘাঁ’টি, বন্দর ও অন্যান্য স্থাপনায় উচ্চ স’ত’র্ক’তা নেয়া হয়েছে। ইরানের চারদিকে যুক্তরাষ্ট্র আগে থেকেই সৈন্য সমাবেশ ঘটিয়ে রেখেছে।

দেশটির পশ্চিমপ্রান্তে উত্তর থেকে দক্ষিণ বরাবর কমপক্ষে ১০টি দেশে যুক্তরাষ্ট্র দা’বার গুঁ’টির মতো সেনাদের সাজিয়ে রেখেছে। এসব দেশ হলো ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, সৌদি আরব, বাহরাইন, কুয়েত, জর্ডান, ইরাক, সিরিয়া ও তুরস্ক।

আর পূর্বদিকে রয়েছে আফগানিস্তান। সব মিলিয়ে ইরানকে একেবারে ঘিরে ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্র। তার ওপর শুক্রবার পেন্টাগন ঘোষণা দিয়েছে তারা মধ্যপ্রাচ্যে আরো ৩৫০০ সেনা সদস্য মোতায়েন করছে। ইতালিতে সেনাদেরকে রাখা হয়েছে স্ট্যান্ডবাই বা প্রস্তুত।

ওয়াশিংটন পোস্ট লিখেছে, মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন ঘাঁ’টিতে এবং যু’দ্ধজাহাজে অবস্থান করছে মার্কিন বহু হাজার সেনা সদস্য। অনেক দেশে যে সেনা সদস্য রয়েছেন তাদেরকে রাখা হয়েছে প্রস্তুত। যুক্তরাষ্ট্রকে এসব পয়েন্টে আ’ক্র’ম’ণ চালাতে পারে ইরান। আবার ইরানের বি’রু’দ্ধেও এসব স্থান থেকে হা’ম’লা চালাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।

ইরাকে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৬০০০ সেনা সদস্য। মার্কিন কর্মকর্তারা সঠিক করে বলেন না যে, ইরাকে তাদের কি পরিমাণ সেনা সদস্য রয়েছেন। তবে ধরে নেয়া হয় যে, ইরাকের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ৬০০০ সেনা সদস্য। এর মধ্যে রয়েছে গ্রিন জোন, আল আসাদ বিমান ঘাঁটি।

ইরাকজুড়ে এখন উ’ত্তে’জনা চ’র’ম পর্যায়ে। এর ফলে সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও স্থাপনার দিকে দৃষ্টি দেয়া হয়েছে। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মার্কিন সব নাগরিককে ইরাক ছাড়ার নি’র্দে’শ দিয়েছে। এরপর শনিবার গ্রিন জোনে এবং বালাদ বিমান ঘাঁটিতে র’কে’ট হা’ম’লা হয়েছে।

এ দুটি স্থানেই মার্কিন সেনাদের মোতায়েন করা আছে। তবে রকেট হা’ম’লায় কেউ আহ’ত হয়নি। সিরিয়ায় মোতায়েন রয়েছে প্রায় ৮০০ মার্কিন সেনা। তবে কি পরিমাণে সেনা সেখানে রয়েছে সে বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।

 

অক্টোবরে প্রেসিডেস্ট ট্রাম্প আ’ক’স্মি’কভাবে সেনা প্র’ত্যা’হার করে নেয়ার পরও সেখানে ৮০০ সেনা রয়েছেন। অক্টোবরে সেনা সংখ্যা ছিল ২০০০। সিরিয়া-জর্ডান সীমান্তে তানফ গ্যারিসন হলো যুক্তরাষ্ট্রের এখন একমাত্র অব’স্থা’নস্থ’ল।

ব্রাসেলসভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ স’ত’র্ক করেছে এটা হতে পারে আ’ক্র’মণের বড় কেন্দ্র। কারণ, এর কাছাকাছি মোতায়েন রয়েছে ইরানি অথবা ইরান সমর্থিত বাহিনী। আফগানিস্তানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১৪০০০ সেনা সদস্য।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের স’ত’র্কতা, এই স্থানটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের প্রতিযোগিতার ক্ষে’ত্র হতে পারে। নভেম্বরে আফগানিস্তানের বাগরাম বিমান ঘাঁ’টি আ’ক’স্মি’ক সফরে এসেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

কুয়েতে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ১৩০০০ সেনা। কংগ্রেশনাল রিসার্স সার্ভিসের মতে, কুয়েতের বিভিন্ন ঘাঁ’টিতে মোতায়েন রয়েছে তারা। ১৯৯১ সালের পারস্য উপসাগরীয় যু’দ্ধের পর থেকে এই দুটি দেশের মধ্যে রয়েছে প্র’তির’ক্ষা সহযোগিতা বিষয়ক চুক্তি।

জর্ডানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ৩০০০ সেনা সদস্য। জর্ডানকে ঘিরে রেখেছে ইরাক, সিরিয়া, ইসরাইল, দ’খ’লীকৃত ফিলিস্তিনি ভূ’খ’ণ্ড এবং সৌদি আরব। এই দেশটিকে যুক্তরাষ্ট্রের বড় একটি মিত্র হিসেবে দেখা হয়। জ’ঙ্গি গো’ষ্ঠী ইসলামিক স্টে’টের বি’রু’দ্ধে যু’দ্ধে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হিসেবে কাজ করে এখানকার মুওয়াফফাক সালতি বিমান ঘাঁ’টি।

এখন সেটার আধুনিকায়নের পরিকল্পনা চলছে। ২০১৬ সালের নভেম্বরে জর্ডানের বিমান বাহিনীর একজন সার্জেন্ট কিং ফয়সাল বিমান ঘাঁটিতে গু’লি করে হ’ত্যা করেন যুক্তরাষ্ট্রের তিন সেনা সদস্যকে। এ ঘটনাটি বি’র’ল।

৩০০০ সেনা মোতায়েন রয়েছে সৌদি আরবে। অক্টোবরে ইরানের সঙ্গে যখন সৌদি আরবের উ’ত্তে’জ’না তু’ঙ্গে ওঠে তখন সেখানে অতিরিক্ত সেনা পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র। সৌদি আরব ও ইরান দীর্ঘদিন আঞ্চলিক প্র’তিপ’ক্ষ। এ দুটি দেশ ইয়েমেনে প্র’ক্সি যু’দ্ধে লি’প্ত। সৌদি আরবে তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হা’ম’লার জন্য ইরানকে দা’য়ী করে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এ অ’ভিযো’গ উড়িয়ে দিয়েছে ইরান।

বাহরাইনে মোতায়েন আছে যুক্তরাষ্ট্রের ৭০০০ সেনা সদস্য। যুক্তরাষ্ট্রের একটি নৌ’ঘাঁ’টি স্থাপনের হো’স্ট হলো বাহরাইন। সেখানে কয়েক হাজার সেনা সদস্য অবস্থান করছেন অথবা আসা যাওয়া করে। এই দ্বী’পরা’ষ্ট্রটি সৌদি আরবের ঘ’নি’ষ্ঠ মিত্র।

ইরানের বি’রু’দ্ধে ট্রাম্পের ক’ট্ট’র অবস্থানের সমর্থক তারা। ২০১১ সালে শিয়াদের এক উ’ত্থা’ন দমন করে বাহরাইন। এর ফলে ইরান সরকারের সঙ্গে তাদের দ্ব’ন্দ্ব আরো প্র’ক’ট হয়। ওমানে রয়েছে মার্কিন ৬০০ সেনা সদস্য। এ দেশটি মাত্র কয়েক শত মার্কিন সেনাকে অবস্থানের অনুমতি দিয়েছে।

ওমানের কয়েকটি বিমান ও স্থল বন্দর ব্যবহারে মার্কিন বিমান ও যুদ্ধজাহাজকে অনুমতি দিয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ওমান। আরব উপদ্বীপ অঞ্চলে ওমানের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ স্থানে। একেবারে সেই হরমুজ প্রণালীর পাশেই এর অবস্থান। ফলে কোনো কারণে ইরানের সঙ্গে যু’দ্ধ বেধে গেলে প্রথমেই ইরান এই হরমুজ প্রণালীতে পশ্চিমা স্বা’র্থে আ’ঘা’ত করার চেষ্টা করবে।

ইরানের সেই চেষ্টাকে প্র’তিহ’ত করতে ওমান যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ও কৌশলগত একটি অংশীদার। গত কয়েক মাসে তেলের ট্যা’ঙ্কার নিয়ে এই হরমুজ প্রণালীতেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে উত্তে’জনা বি’রা’জ করছিল।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০০০ সেনা সদস্য। এ দেশটিও হরমুজ প্রণালির পাড়ে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সা’ম’রিক কৌশলগত একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র এ দেশটিও। সাম্প্রতিক সময়ে এ দেশে ৫০০০ মার্কিন সেনা অবস্থানের অনুমতি পেয়েছে। এর মধ্য দিয়ে তারা সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র হয়ে উঠেছে।

কাতারে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ১৩,০০০ সেনা। মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সা’ম’রিক ঘাঁ’টি হলো কাতারের আল উদেইদ। ২০১৮ সালে এই ঘাঁটিটি আধুনিকায়নে ১৮০ কোটি ডলারের পরিকল্পনা ঘোষণা করে কাতার। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দ্বারা অ’বরো’ধের বি’রু’দ্ধে যখন কাতার ল’ড়া’ই করছিল তখনই এমন প’দক্ষে’প নেয়া হয়।

তুরস্কে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ২৫০০ সেনা সদস্য। এর ইনসিরলিক বিমান ঘাঁ’টিতে অবস্থান করছে এসব সেনা। যদি ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যু’দ্ধ বেধে যায় তাহলে চারদিকে থেকে এসব সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম একসঙ্গে ব্যবহার করতে পারেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।