ঢাকার দুই সিটিতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল মঙ্গলবার। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী শেখ ফললে নূর তাপসের সম্পদ ও আয় বেশি। তার বার্ষিক আয় ৯ কোটি ৮১ লাখ ৩৮ হাজার ৪৬ টাকা। মাসের হিসেব করলে তাপসের মাসিক আয় ৮১ লাখ ৭৮ হাজার ১৭০ টাকা।
অপর দিকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনের বছরে আয় ৯১ লাখ ৫৮ হাজার ৫০৯ টাকা। মাসের হিসেবে ইশরাকের মাসিক আয় ৭ লাখ ৬৩ হাজার ২০৯ টাকা। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানা গেছে।
শেখ ফজলে নূর তাপস
আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস হফলনামায় তার পেশায় আইনজীবী হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি ব্যারিস্টার-এট-ল ডিগ্রিধারী। তার বছরে আয় ৯ কোটি ৮১ লাখ ৩৮ হাজার ৪৬ টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে বছরে আয় ৩৫ হাজার টাকা, বাড়ি/দোকান ভাড়া বাবদ ৪২ লাখ ৫০ হাজার ৩৯৮ টাকা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত থেকে ৭ কোটি ৮৫ লাখ ৪২ হাজার ৬৪৮ টাকা, আইন পেশা থেকে ১ কোটি ৪৬ লাখ ৫০ হাজার এবং চাকুরি থেকে বেতন বাবদ ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
তার অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ১০৮ কোটি ৯০ লাখ ৮৯ হাজার ৬৯৩ টাকা। তার হাতে নগদ টাকা রয়েছে ২৬ কোটি ৩ লাখ ৩ হাজার ৫৫৭ টাকা। অন্যান্য খাতের মধ্যে ব্যাংকে জমা ১ কোটি ৫৩ লাখ ৭৭ হাজার ২০৭ টাকা, কোম্পানির শেয়ার ৪৩ কোটি ২৭ লাখ ৫৫ হাজার ৪০৪ টাকা এবং পোস্টাল, সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ি আমানত ৩৫ কোটি ২২ লাখ টাকা। এর বাইরেও রয়েছে তার স্থাবর সম্পত্তি।
সেগুলো হচ্ছে- কৃষি জমি ১০ দশমিক ৫০ কাঠা, অকৃষি জমি ১০ কাঠা যার মূল্য ৩৮ লাখ ১৯ হাজার ৫০ টাকা, মতিঝিল, পূর্বাচল ও সাভারে তিনটি দালান রয়েছে যার মূল্য ৮ কোটি ৩৭ লাখ ২০ হাজার ৩১৩ টাকা এবং একটি বাড়ি রয়েছে রয়েছে যার মূল্য ৩ কোটি ২৮ লাখ ৫০ হাজার ৮৯৪ টাকা।
শেখ ফজলে নূর তাপসের দায়-দেনা রয়েছে। তিনি আগাম বাড়ী ভাড়া বাবদ ৪ কোটি ৬৭ লাখ ৯৬ হাজার ২৫০ টাকা নিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে বর্তমানে কোনো মামলা নেই। তবে ২০০২ সালে দুদক আইনে ও ২০০৩ সালে শ্রম আদালতে তার বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা হয়েছিল। দুটি মামলাই হাইকোর্ট বিভাগ বাতিল বা খারিজ করে দিয়েছেন।
প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন
বিএনপি প্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন তার হলফনামায় পেশায় একজন ব্যবসায়ি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অপরাধে একটি মামলা ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এ বিচারাধীন রয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা নেই।
এমএসসি ডিগ্রিধারী ইশরাক হোসেন চারটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। এছাড়া ডাইনামিক ষ্টীল কমপ্লেক্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার হোল্ডার। তার বছরে আয় ৯১ লাখ ৫৮ হাজার ৫০৯ টাকা। আয়ের উৎসের মধ্যে রয়েছে- বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে লভ্যাংশ ৪৬ লাখ ৮০ হাজার ৩৮৯ টাকা, চাকুরি থেকে ৩৫ লাখ ৪৯ হাজার ৯৯৬ টাকা ও ব্যবসা থেকে ৪ লাখ ২৪ টাকা।
ইশরাক হোসেনের অস্থাবর সম্পদের পরিমান ৪ কোটি ৯৮ লাখ ২ হাজার ৭২ টাকা ও স্থাবর সম্পদের পরিমান ৭৮ লাখ ৫১ হাজার ৫২৪ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- নগদ ৩৩ হাজার ১০৯ টাকা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শেয়ার বাবদ ২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা এবং ব্যাংকে জমা ১ কোটি ৩৭ লাখ ১৮ হাজার ৬৩ টাকা। তার দায়দেনার পরিমাণ ৬৫ লাখ ৪৬ হাজার ৭৪৩ টাকা। এর মধ্যে মা ইসমত আরার কাছ থেকে ৬১ লাখ ৩৭ হাজার ২২২ টাকা নিয়েছেন। বাকি টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন।