গত রবিবার ডাকসু ভবনে ভিপির কক্ষে আলো নিভিয়ে রড ও বাঁশ দিয়ে নুরুল হক ও অন্যদের হামলা করে আবার সামনে এসেছে ‘মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ’। সংগঠনটির নেতাকর্মীদের হামলায় ভিপি নুরুলসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে গুরুতর আহত হন অন্তত চারজন।
এ ঘটনার পর ‘মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ’ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। সংগঠনটির সঙ্গে কারা জড়িত, ক্ষমতাসীন দল বা তাদের ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক আছে কি না? কেন বারবার হামলা করা সত্ত্বেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না-এমন প্রশ্নও এখন জনমনে।
জানা গেছে, ‘মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ’ ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর গঠন করা হয়। এই সংগঠনটি নিবন্ধিত নয়। গত বছর কোটা বিরোধী আন্দোলনের মধ্যে কোটা বাতিলের পরিপত্র জারি হলে শাহবাগে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা এর বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন। এই আন্দোলনের মধ্যেই মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামে সংগঠনটি গঠন করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দিনকে সংগঠনটির আহ্বায়ক এবং সাবেক সড়ক ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খানের ছেলে আসিবুর রহমান খানকে সদস্যসচিব করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাইরে নানা অপকর্ম জড়িয়ে এখন আলোচনার শীর্ষে আছে ‘মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ’ নামে একটি সংগঠনের নাম। রাজধানীর মগবাজারে সংগ্রাম পত্রিকার কার্যালয়ে ভাঙচুরসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই সংগঠনের ব্যানারে একাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে।
চলতি বছর মার্চে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির পদবঞ্চিত নেতা আমিনুল ইসলামকে সভাপতি ও আল মামুনকে সাধারণ সম্পাদক করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা গঠন করেন জামাল উদ্দিন।
সংগঠনটি গঠনের পরপরই এতে ভাঙন হয়। চলতি বছরে এই মঞ্চে ভাঙন হওয়ার পর দুটি পক্ষ একে অপরকে বহিষ্কার করেছে। মধুর ক্যানটিনে ছাত্রদলের ওপর হামলা করেছে। ভিপি নুরুলের ওপর একাধিক বার হামলা করেছে। একটি অংশ ছাত্রলীগ থেকে পদচ্যুত নেতা গোলাম রাব্বানীর পক্ষে অবস্থানও নেয় বলে জানা গেছে।
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের মূল অংশটি কথা বার্তায় ‘সক্রিয়’ ও উগ্রতা ছাড়ালেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখাটি নিজেদের মূল মঞ্চ দাবি করে মারমুখী সব কর্মসূচি পালন করতে থাকে। এছাড়া মূল সংগঠন থেকে আলাদা হয়ে যায় সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। এতে দুই অংশই ‘মুক্তিযুদ্ধ’ নাম ব্যবহার করে উগ্র আচরণ করতে থাকে।
জানা গেছে, চলতি বছরের ১০ অক্টোবর গণমাধ্যমে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আমিনুল ইসলাম ও আল আমিনকে সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেন মঞ্চের আহ্বায়ক ও মুখপাত্র জামাল উদ্দিন। এ ঘটনার পর জামাল উদ্দিন ও আসিফ ‘মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চে’র কেউ নন বলে দাবি করে বক্তব্য দেন আমিনুল ও আল মামুন এবং নিজেদের প্রকৃত ‘সংগঠন’ বলে দাবি করতে থাকে।