Home > অন্যান্য > প্রধান শিক্ষকসহ ৩ জনের ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী

প্রধান শিক্ষকসহ ৩ জনের ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী

স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ প্রতিবেশী দুই জনের ধ’র্ষণের ফলে প্রাথমিকের ৪র্থ শ্রেণির এক ছাত্রী অ’ন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার ঘট’না ঘটেছে বরিশালে। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় ওই স্কুলছাত্রীকে বরিশালের শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

অপরিণত বয়সে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় ওই ছাত্রীর জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। এদিকে, এ ব্যাপারে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম।

গত ১০ ডিসেম্বর রাতে বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের ভোজমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেনীর ওই ছাত্রীকে (১২) শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের বিছানায় প্রসব বেদনায় কাতর শিশুটির চোখে-মুখে শুধুই বিস্ময়ের ছাপ। মানসিক এবং শারীরিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে সে।

শিশুটি জানায়, প্রায় ৯ মাস আগে তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক তার অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে তাকে প্রথম ধ’র্ষণ করে। অপর এক নারী শিক্ষক এই ধ’র্ষণে সহায়তা করে। এরপর এই খবর স্থানীয়ভাবে লোকমুখে জানাজানি হলে দুই প্রতিবেশী জুয়েল ও রনি ফাঁকা বাসায় ঢুকে একাধিকবার তাকে ধ’র্ষণ করে। এ ঘ’টনার পর নি’র্যাতিতার মা প্রতিবাদ করে বিচার চাইলে তাকেও মা’রধর করার অ’ভিযোগ ওঠে ধ’র্ষণে অ’ভিযুক্তদের বি’রুদ্ধে। তিনি অ’ভিযুক্তদের দৃস্টান্তমূলক শাস্তি চান।

স্কুলছাত্রীটিকে হাসপাতালে গিয়ে স্বেচ্ছায় রক্ত দেওয়া মানবাধিকার কর্মী মো. সুজনসহ হাসপাতালের রোগী ও তাদের স্বজনরা এই ঘ’টনায় অ’ভিযুক্তদের ক’ঠোর বি’চার দাবি করেছেন।

শের-ই বাংলা মেডিকেলের প্রসূতি বিভাগ-২ এর সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মৃদুলা কর জানান, ওই স্কুলছাত্রীর গর্ভের প্রকৃত অবস্থা জানতে বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিয়েছেন। আজ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত টাকার অভাবে তার কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারেনি তার পরিবার। পরীক্ষা নিরীক্ষার পরই তার শারীরিক অবস্থা জানা যাবে। তবে অপরিণত বয়সে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় ওই শিশুর জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

এদিকে, এ ঘটনায় গত ২২ আগস্ট নি’র্যাতিতার মা বাদী হয়ে বাকেরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপে ধ’র্ষণকারী শিক্ষক ও দুই প্রতিবেশীর নাম মামলায় উল্লেখ করা হয়নি বলে জানায় নি’র্যাতিতা। এমনকি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দেওয়ার আগে ফরিদপুর ইউপি সদস্য, চেয়ারম্যান, স্থানীয় প্রভাবশালী এবং স্কুলের শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকের নাম বলতে নিষেধ করে। প্রধান শিক্ষকের নাম বললে সে কোনও বিচার পাবে না এবং লোকে তাকেই বরং খারাপ জানবে বলে তাকে ভ’য়ভীতি দেখায় বলে অ’ভিযোগ করেন স্কুলছাত্রীটি। দায়সারা গোছের তদন্ত শেষে পুলিশও ওই মামলায় জুয়েল নামে এক প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে আদালতে অ’ভিযোগপত্র দেয়। ওই মামলায় বর্তমানে জুয়েল কারাগারে রয়েছে।

সংবাদ কর্মীদের কাছে এ খবর জানার পরপরই গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্যাতিতাকে দেখতে হাসপাতালে যান বরিশালের পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি ওই স্কুলছাত্রীর চিকিৎসার ব্যয় বহনের দায়িত্ব নেন এবং এ ব্যাপারে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেন। মামলার অ’ভিযোগপত্র থেকে কেন অ’ভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্যদের বাদ দেয়া হয়েছে তা খতিয়ে দেখে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন পুলিশ সুপার।

নি’র্যাতিতা ওই স্কুলছাত্রী ৪ ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট। তার মা বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করে এবং বাবা সবজি বিক্রি করে। প্রধান শিক্ষকের ধ’র্ষণের শি’কার হয়ে সে পাশের একটি স্কুলে গিয়ে ভর্তি হলেও অ’ভিযুক্ত শিক্ষকরা ফের তাকে পূর্বের স্কুলে ভর্তি করেন। অ’ন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় এবার ৪র্থ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষাও দিতে পারেনি সে।জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন শুনানির আগে বিএনপির সিনিয়র নেতারা আলোচনা সভা, সংবাদ সম্মেলন এবং মানববন্ধনে আন্দোলনের বিষয়ে অনেক কথাই বলেছেন। এমনকি খালেদা জিয়ার জামিন না হলে এক দফা আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছিল দলটি। কিন্তু বিক্ষোভ সমাবেশ এবং মিছিল কর্মসূচির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে দেখা যাচ্ছে দলটিকে।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন শুনানির একদিন পরেই আন্দোলনের বিষয়ে দলটির সিনিয়র নেতাদের সুর পাল্টেছে। আন্দোলনের বিষয়ে তাদের মুখে এখন ভিন্ন সুর শোনা যাচ্ছে। তারা বলছেন, আন্দোলনের বিষয়ে তারা কোন মন্তব্য করতে পারবেন। এ বিষয়ে শুধু মাত্র কথা বলবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এর আগে গত ২৯ নভেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা যদি দেখি, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মুক্ত হন নাই। তাহলে বুঝতে হবে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী, তার সরাসরি হস্তক্ষেপে বেগম জিয়া মুক্ত নাও হতে পারেন। আর সেটা হলে, আমি বলতে চাই- এদেশে শুধু এক দফার আন্দোলন হবে। তা হবে, শেখ হাসিনা স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের আন্দোলন।

তবে আজ (শুক্রবার) আন্দোলনের বিষয়ে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, এটা দলের বিষয়। তাই এবিষয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কথা বলবেন।

গত ১১ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবে অপর এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সরকারকে বলবো, মেডিকেল রিপোর্টের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণের রিপোর্ট। এই রিপোর্টটা বুঝে নেন। এই রিপোর্ট যদি না বুঝেন তাহলে স্বৈরাচারের যে অবস্থা হয়েছে, স্বাধীনতার আন্দোলন যেভাবে হয়েছে, ভাষা আন্দোলনে যেভাবে জয়ী হয়েছে, বেগম জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে আমরা জয়ী হবো ইনশাল্লাহ। গণতন্ত্র জয়ী হবে, বাংলাদেশের মানুষ মুক্ত হবে আবার।

আন্দোলনের বিষয়ে আজ (শুক্রবার) আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, আন্দোলনের সিদ্ধান্ত। এবিষয়ে দলের মহাসচিব বলবেন। আমি কিছু বলতে পারবো না।

এদিকে সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামী রোববার সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে বিএনপি।

এ বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামী রোববার সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করছি। আমরা স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, রোববার সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হবে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে। ঢাকা মহানগরে প্রতি থানায় থানায় বেলা দুইটার পর থেকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এই হচ্ছে আপাতত আগামী রোববারের জন্য এই কর্মসূচি। পরের কর্মসূচি এরপরে ঘোষণা করবো।

অপরদিকে গতকাল (বৃহস্পতিবার) খালেদা জিয়ার জামিন না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। তবে নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হলেও রাজপথে কাঙ্খিত কোনো কর্মসূচিতে দেখাতে পারিনি বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। কোন কোন অঙ্গ সংগঠনকে রাজপথে ঝটিকা মিছিলের করে কর্মসূচি করলেও মুক্তিযোদ্ধা দল, কৃষক দল, তাঁতীদল, শ্রমিক দল, মৎস্যজীবী দলের কোনো নেতাকর্মীকেই দেখা যায়নি। এছাড়া দলের বেশিরভাগ সিনিয়র নেতাই ছিলেন নিষ্ক্রিয়।

এ বিষয়ে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক সিনিয়র নেতা এই প্রতিবেদককে বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সিনিয়র নেতারা কি করছেন? ঢাকা যেসব সিনিয়র নেতা আছেন, তারা নিজেরা যদি ১ শত কর্মী নিয়ে রাস্তায় নামে তাহলেই তো রাজপথ দখল হয়ে যাবে। কিন্তু তারা সেটা করবেন না। কারণ তারা নিজেদেরকে এবং তাদের রক্ষার্থে সরকারের সাথে সমঝোতা করছেন।

এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের বয়স হয়েছে এবং আমরা বৃদ্ধ হয়েছি। এখন তরুণদের সময়। তরুণেরাই সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক নেতা এ বিষয়ে বলেন, তৃণমূল অথবা অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বলে সিনিয়র নেতারা রাজপথে নামলে তারাও নামবে। এটা কোনো কথা হতে পারে না। কারণ আমরা যারা সিনিয়র নেতা, তাদের বয়স ৭০ বছরের উর্ধ্ব। রাজপথের আন্দোলন তো সব সময় তরুনরাই করে। অঙ্গ সংগঠনগুলো সাহস করে না নামলে আমরা কি করতে পারি। সিনিয়র নেতাদের ধারণা ছিল, অঙ্গ সংগঠনগুলো অন্তত খালেদা জিয়ার জন্য শক্ত বাধা অতিক্রম করে হলেও রাজপথে নামবে।