Home > জাতীয় > সড়কে উল্টো পথে সংসদ সদস্যের গাড়ি : ব্যারিস্টার সুমনের লাইভ

সড়কে উল্টো পথে সংসদ সদস্যের গাড়ি : ব্যারিস্টার সুমনের লাইভ

ঢাকার সড়কে উল্টো পথে এক সংসদ সদস্যের গাড়ি দেখে ফেসবুক লাইভে তার প্রতিবাদ জানিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

আজ দুপুরে বায়তুল মোকাররম এলাকার জিপিওর সড়কে এ ঘটনা ঘটে। তিনি গাড়িটির পিছু নিয়ে এটি একজন সংসদ সদস্যের গাড়ি বলে দাবি করে ভিডিও লাইভে তা দেখান এবং আক্ষেপ করে বলেন, ট্রাফিক আইনের তোয়াক্কা না করে এভাবে সরকারী সিলসহ একটি গাড়ি উল্টো পথে চলছে যা খুবই দুঃখজনক। তবে গাড়িটি কার তা তিনি উল্যেখ না করলেও গাড়ির নাম্বারটি ভিডিওতে দেখিয়েছেন। গাড়িটির নাম্বার : (ঢাকা মেট্রো-ঘ ১৫-৩৯০০)

উল্লেখ্য, ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন সামাজিক বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে প্রতিনিয়ত ফেসবুকে লাইভ করেন এবং বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হয়ে কাজ করার চেষ্টা করেন। তার বিভিন্ন কাজ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান থাকলেও তিনি নিয়মিত মানুষের ভালোর জন্য কাজ করে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বাংলাদেশে নিরাপদ সড়ক নিয়ে কঠোর আইন ও তা প্রয়োগের ক্ষেত্রে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে সরকার। গত ১ নভেম্বর ঘোষিত নিরাপদ সড়ক আইনে উল্টোপথে গাড়ি চালানোর বিধান বিষয়ে বলা হয়েছে,

মদপান করে বা নেশাজতীয় দ্রব্য খেয়ে গাড়ি চালালে, সহকারীকে দিয়ে গাড়ি চালালে, উল্টো দিকে গাড়ি চালালে, নির্ধারিত স্থান ছাড়া অন্য স্থানে গাড়ি থামিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, চালকছাড়া মোটরসাইকেল একজনের বেশি সহযাত্রী উঠালে, মোটরসাইকেলের চালক ও সহযাত্রীর হেলমেট না থাকলে, ছাদে যাত্রী বা পণ্য বহন, সড়ক বা ফুটপাতে গাড়ি সারানোর নামে যানবাহন রেখে পথচারীদের চলাচলে বাধা সৃষ্টি, ফুটপাতের ওপর দিয়ে কোনো মোটরযান চলাচল করলে সর্বোচ্চ তিন মাস কারাদণ্ড বা ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ ছাড়াও সড়কে গাড়ি চালাতে গিয়ে বিভিন্ন অপরাধে ভিন্ন ভিন্ন শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে, ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’ নামে নতুন এ আইনে সব ধরনের সাজা বাড়ানো হয়েছে। নতুন আইনে ট্রাফিক সংকেত ভঙ্গের জরিমানা ৫০০ থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ১০ হাজার, হেলমেট না পরলে জরিমানা ২০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা করা হয়েছে। সিটবেল্ট না বাঁধলে, মোবাইল ফোনে কথা বললে চালকের সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।

বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে কাউকে আহত করলে তিন লাখ টাকা জরিমানা ও তিন বছরের জেল হতে পারে। নতুন আইনে চালকদের লাইসেন্স পেতে অষ্টম শ্রেণি, সহকারীকে পঞ্চম শ্রেণি পাস হতে হবে। ড্রাইভিং লাইসেন্সের বিপরীতে ১২ পয়েন্ট রাখা হয়েছে। আইন ভঙ্গে জেল-জরিমানা ছাড়াও লাইসেন্সের পয়েন্ট কাটা যাবে। পুরো ১২ পয়েন্ট কাটা গেলে লাইসেন্স বাতিল।

চালক ও তার সহকারীকে নিয়োগপত্র দেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। গণপরিবহনে ভাড়ার চার্ট প্রদর্শন না করলে বা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি কিংবা আদায় করলে এক মাসের জেল বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা এমনকি চালকের ১ পয়েন্ট কাটা যাবে।

কনট্রাক্ট ক্যারিজের মিটার অবৈধভাবে পরিবর্তন বা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি বা আদায় সংক্রান্ত ধারা ৩৫ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৩৫ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং চালকের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত হিসেবে দোষসূচক ১ পয়েন্ট কাটা হবে।

কন্ডাক্টর লাইসেন্স ছাড়া কোনো গণপরিবহণে কন্ডাক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন সংক্রান্ত ধারা ১৪ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১৪ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

মোটরযান রেজিস্ট্রেশন ছাড়া মোটরযান চালনা সংক্রান্ত ধারা ১৬ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১৬ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

ভুয়া রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার ও প্রদর্শনে বিধি-নিষেধ সংক্রান্ত ধারা ১৭ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ১৭ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ দুই বছর তবে কমপক্ষে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা তবে কমপক্ষে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

মোটরযানের মালিকানা পরিবর্তন বা হস্তান্তরের কারণে হস্তান্তর গ্রহীতার রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত ধারা ২১ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড- যদি কোনো হস্তান্তর গ্রহীতা ধারা ২১ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ এক মাস কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

মোটরযানের ফিটনেস সনদ ছাড়া বা মেয়াদোত্তীর্ণ ফিটনেস সনদ ব্যবহার করে বা ইকোনমিক লাইফ অতিক্রান্ত বা ফিটনেসের অনুপযোগী, ঝুঁকিপূর্ণ মোটরযান চালনা সংক্রান্ত ধারা ২৫ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ২৫ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

ট্যাক্স-টোকেন ছাড়া বা মেয়াদোত্তীর্ণ ট্যাক্স-টোকেন ব্যবহার করে মোটরযান চালনা সংক্রান্ত ধারা ২৬ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ২৬ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

রুট পারমিট ছাড়া পাবলিক প্লেসে পরিবহন যান ব্যবহার সংক্রান্ত ধারা ২৮ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ২৮ এর উপ-ধারা (১) এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ তিন মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

বিদেশি নাগরিকের বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিজ দেশের মোটরযান/গণপরিবহণের রুট পারমিট গ্রহণ না করা সংক্রান্ত ধারা ২৯ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড- যদি কোনো বিদেশি নাগরিক ধারা ২৯ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এজন্য তিনি সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

মোটরযানের বাণিজ্যিক ব্যবহার সংক্রান্ত ধারা ৩১ এর বিধান লঙ্ঘনের দণ্ড- যদি কোনো ব্যক্তি ধারা ৩১ এর বিধান লঙ্ঘন করেন, এ জন্য তিনি সর্বোচ্চ তিন মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং চালকের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত হিসেবে দোষসূচক ১ পয়েন্ট কাটা হবে।