Home > অন্যান্য > হাত-পা নেই,মুখ দিয়ে পবিত্র কোরআনের পাতা উল্টিয়ে ৩০ পারা মুখস্থ!

হাত-পা নেই,মুখ দিয়ে পবিত্র কোরআনের পাতা উল্টিয়ে ৩০ পারা মুখস্থ!

হাত-পা নেই। তারিক আল-ওদায়ী পেটে ভর করে পথ চলেন। কঠিন রোগে ভোগেও তিনি মুখ দিয়ে পবিত্র কোরআনের পাতা উল্টিয়ে ৩০ পারা মুখস্থ করতে সক্ষম হয়েছেন। ৩৫ বছর বয়সী তারিক আল-ওদায়ীকে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা দমাতে পারেনি। অদম্য স্পৃহায় চার বছরে কোরআনের হাফেজ হয়েছেন তিনি। মুখ দিয়ে পবিত্র কোরআনের পাতা উল্টিয়ে নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত করেন তারিক।

সৌদি আরবের আসির প্রদেশের সিরাহ ওবাইদা শহরের ৩৫ বছর বয়সী এই তারিক আল-ওদায়ীর বাসায় গিয়ে তার শিক্ষক পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও হেফজ প্রশিক্ষণ দিতেন। এছাড়াও তারিক টেলিফোন এবং কম্পিউটার চালানো শিখেছেন ও সামাজিক নেটওয়ার্কেও তিনি সক্রিয় রয়েছেন। বিভিন্ন আলেম’দের সঙ্গে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখেন বলে জানা গেছে। সৌদি আরবের আসির প্রদেশের কোরআন হেফজ সেন্টারের সহযোগিতায় তিনি চার বছরে সম্পূর্ণ কোরআন হেফজ করতে সক্ষম হয়েছেন।

নিম্নে আরো পড়ুন: মহানবী (সা.) এর একটি চমৎকার ঘটনা

মহানবী হ’জরত মুহাম্ম’দ (সা.) একদিন ম’সজিদে বসে আছেন। সাহাবিরা তাঁকে ঘিরে আছেন। এমন সময় রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, এখন যিনি ম’সজিদে প্রবেশ করবেন, তিনি বেহেশতের অধিবাসী। একথা শুনে উপস্থিত সব সাহাবি অধীর আগ্রহে তাকিয়ে রইলেন ম’সজিদের প্রবেশ মুখে। সবার মধ্যে জল্পনা কল্পনা চলছে, হয়তো হ’জরত আবু বকর (রা.) বা হ’জরত উম’র (রা.) অথবা এমন কেউ আসছেন যাদের বেহেশতের সুসংবাদ আল্লাহপাক ঘোষণা করেছেন। সবাইকে অ’বাক করে দিয়ে ম’সজিদে প্রবেশ করলেন একজন সাধারণ আনসারি সাহাবি। এমনকি তার নাম পরিচয় পর্যন্ত জানা ছিল না অধিকাংশের।

এরপরের দিনেও সাহাবিরা ম’সজিদে বসে আছেন রাসূলুল্লাহ (সা.) কে ঘিরে। মহানবী (সা.) আবার বললেন, এখন যিনি ম’সজিদে প্রবেশ করবেন, তিনি বেহেশতের অধিবাসী। সেদিনও ম’সজিদে প্রবেশ করলেন সেই সাহাবি। তৃতীয় দিন রাসূলুল্লাহ (সা.) সাহাবিদের লক্ষ্য করে আবার ঘোষণা দিলেন, এখন যিনি ম’সজিদে প্রবেশ করবেন, তিনি বেহেশতের অধিবাসী। সাহাবিরা দেখলেন সেই অ’তি সাধারণ সাহাবি ম’সজিদে প্রবেশ করলেন।

পরপর তিনদিন এই ঘটনার পর, সাহাবিদের মধ্যে কৌতূহল হলো সেই সাধারণ সাহাবি স’ম্পর্কে জানতে। বিখ্যাত সাহাবি হ’জরত আবদুল্লাহ ইবনে আম’র আল আ’স (রা.) ভাবলেন, এই সাহাবির বিশেষত্ব কী’ তা জানতে হলে তাকে নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তিনি সেই সাহাবির কাছে গিয়ে বললেন, আমা’র বাবার সঙ্গে আমা’র মনোমালিন্য হয়েছে, তোমা’র বাড়িতে কি আমাকে তিন দিনের জন্য থাকতে দেবে?’

সেই সাহাবি রাজী হলেন। হ’জরত আবদুল্লাহ (রা.) তাকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে থাকলেন, খুঁজতে থাকলেন কী’ এমন আমল তিনি করেন। সারাদিন তেমন কোনো কিছু চোখে পড়ল না। তিনি ভাবলেন হয়তো তিনি রাত জেগে ইবাদত করেন। না, রাতের নামাজ পড়ে তো তিনি ঘুমাতে চলে গেলেন। উঠলেন সেই ফজর পড়তে।

পরের দুইদিনও এভাবে কে’টে গেল। হ’জরত আবদুল্লাহ (রা.) কোনো বিশেষ আমল বা আচরণ আবিষ্কার করতে পারলেন না যা অন্যদের চেয়ে আলাদা। তাই তিনি সরাসরি সেই সাহাবিকে বললেন, দেখ আমা’র বাবার সঙ্গে আমা’র কোনো মনোমালিন্য হয় নি, আমি তোমাকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য তোমা’র বাড়িতে ছিলাম। কারণ রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন যে তুমি জান্নাতি।

আমাকে বল তুমি আলাদা কী’ এমন আমল করো?

সেই সাহাবি বললেন, তুমি আমাকে যেমন দেখেছ আমি তেমনই, আলাদা কিছুতো আমা’র মনে পড়ছে না। এ কথা শুনে হ’জরত আবদুল্লাহ (রা.) তাকে বিদায় জানিয়ে চলে যেতে থাকলেন।

এমন সময় সেই সাহাবি হ’জরত আবদুল্লাহ (রা.) কে ডেকে বললেন, আমা’র একটা অভ্যাসের কথা তোমায় বলা হয়নি। তা হলো রোজ রাতে ঘুমাতে যাবার আগে আমি তাদেরকে ক্ষমা করে দেই। যারা আমাকে ক’ষ্ট দিয়েছে, বা আমা’র প্রতি অন্যায় করেছে তাদের প্রতি কোনো ক্ষোভ আমা’র অন্তরে আমি পুষে রাখি না।

হ’জরত আবদুল্লাহ (রা.) একথা শুনে বললেন, এ জন্যই তুমি আলাদা, এ জন্যই তুমি জান্নাতি। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে মানুষের প্রতি দয়া করে না, আল্লাহও তার প্রতি দয়া করেন না। (বুখারি ও মু’সলিম)