Home > ধর্ম > দ্বীন মোহাম্ম’দের হাতে লক্ষাধিক মানুষের ইস’লাম গ্রহণ

দ্বীন মোহাম্ম’দের হাতে লক্ষাধিক মানুষের ইস’লাম গ্রহণ

ইস’লাম ধ’র্ম প্রচারক দ্বীন মোহাম্ম’দ শেখ। পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের বাদিন জে’লার মাতলি শহরের অধিবাসী। ১৯৮৯ সালে ইস’লাম গ্রহণ করার পর তিনি ধ’র্ম প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন। তার হাতে ইস’লাম গ্রহণ করেন ১ লাখ ৮ হাজার মানুষ।

দ্বীন মোহাম্ম’দ শেখ ১৯৪২ সালে এক হিন্দু পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। ৪৭ বছর বয়সে তিনি তার চাচার সঙ্গে ইস’লাম ধ’র্ম গ্রহণ করেন। মু’সলমান হওয়ার পর থেকেই তিনি ধ’র্ম প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন।

তিনি পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে হিন্দুসহ বিভিন্ন ধ’র্মাবলম্বীদের কাছে ইস’লামের দাওয়াত দিতে থাকেন। বিভিন্ন তথ্য থেকে জানা যায়, দ্বীন মোহাম্মাদ ১ লাখ ৮ হাজার মানুষকে ইস’লাম ধ’র্মে ধ’র্মান্তরিত করেন।

দ্বীন মোহাম্ম’দ শেখ স্থানীয় আল্লাহওয়ালী জামেয়া ম’সজিদের সভাপতি। নিজে মু’সলিম হওয়ার পর থেকে অন্য মানুষের কাছে ইস’লামের দাওয়াত দেয়াকে নিজের কাজ হিসেবে বেছে নেন।

দ্বীন মোহাম্ম’দ শেখ অসহায় ইস’লাম গ্রহণকারীদের আবাসনের জন্য প্রায় ৯ একর জায়গারও ব্যবস্থা করেছেন। যারা সেখানে বসবাস করবে।

ইস’লাম গ্রহণের পর দ্বীন মোহাম্ম’দ শেখ বলেন, ‘আমি সব সময় ইস’লামকে ভালোবাসি। ইস’লাম গ্রহণ করার আগে পবিত্র কুরআন অধ্যয়ন করতে শুরু করি। কুরআন পড়ার পর বুঝতে পারি ৩৬০ দেবতার পূজা করে আসলেও কোনোদিন আমা’র কোনো উপকারে আসেনি।

ইস’লাম গ্রহণ করার পর প্রথমে তিনি গো’পনে গো’পনে কুরআন অধ্যয়ন করতেন। তার ভয় ছিল যদি কোনো মু’সলিম তাকে কুরআনসহ দেখে ফেলে তবে তিনি আক্রমণের শিকার হন কি-না। অ’তঃপর তিনি ইস’লাম গ্রহণ করেন। আর তা ছিল রমজানের রোজা শুরু হওয়ার আগে। সে সময় তিনি রমজান শুরু হওয়ার একদিন আগে থেকেই রোজা রাখা শুরু করেন।

উল্লেখ্য যে, ছোটবেলা থেকেই তিনি ইস’লামের প্রতি ভক্তি শ্রদ্ধা করতেন। ইস’লামের প্রতি তার ভক্তি-অনুরাগ দেখে তার মা তাকে ১৫ বছর বয়সেই বিয়ে দিয়ে দেন। তার মায়ের বিশ্বা’স ছিল, বিয়ে করে ফেললে অন্য ধ’র্মের প্রতি তার টান কমে আসবে। বিয়ে করার পর মু’সলিম হওয়ার আগেই তার ৪ মেয়ে এবং ৮ ছেলে জন্ম নেয়।

বিয়ের পরও ইস’লামের প্রতি তার কৌতুহল কমেনি। তিনি ইস’লাম ধ’র্ম স’ম্পর্কে জানার জন্য মোহাম্ম’দ জাগসি নামে এক মু’সলিম শিক্ষক খুঁজে বের করেন। আর তার কাছে নিয়মিত পবিত্র কুরআন এবং হাদিসের বাণী স’ম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে থাকেন।

ভাগ্যক্রমে দ্বীন মোহাম্ম’দ শেখের চাচাও একই মানসিকতার লোক ছিলেন। তারা দু’জন এই ম’র্মে একমত হলেন যে, তারা একে অ’পরকে সব কাজে সহায়তা করবেন। অ’তঃপর তিনি তার মেয়েদের বিয়ের পর ইস’লাম গ্রহণ করেন এবং ইস’লাম প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন।

ইস’লাম গ্রহণ করে তিনি ধ’র্ম প্রচারে একটি মিশনারী তৈরি করেন। তিনি তার পরিবার থেকে ইস’লামের দাওয়াত শুরু করেন। পরিবারের শক্তিশালী সম’র্থনই ইস’লামের প্রচার কাজে তার মানসিক শক্তি বাড়িয়ে দেয়।

পাকিস্তানের মাতলি শহরের চিনি শিল্পের মালিক অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মক’র্তা জেনারেল সিকান্দার হায়াত দ্বীন মোহাম্ম’দ শেখকে দ্বীনের প্রচারে আর্থিক সহায়তার প্রস্তাব দেন। কিন্তু দ্বীন মোহাম্ম’দ শেখ সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন।

তবে তিনি সিকান্দার হায়াতকে নও মু’সলিম’দের চাকির দেয়ার প্রস্তাব করেন। আর তাতেই রাজি হয়ে যান সিকান্দার হায়াত। সেনা কর্মক’র্তা ও তার মেয়ে নিজেদের প্রতিষ্ঠানে নও মু’সলিম’দের চাকরির ব্যবস্থা করেন।

দ্বীন মোহাম্ম’দ শেখের ধ’র্ম প্রচারের কথা পাকিস্তানের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়লে অনেক দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ তার কাছে এসেই ইস’লাম গ্রহণ করেন। তার আবাসিক বাড়ির ম’সজিদেই নও মু’সলিম শি’শু কিশোর নারী ও পুরুষদের জন্য রয়েছে নামাজ ও পবিত্র কুরআন শেখার ব্যবস্থা।

নারী শিক্ষকদের দিয়ে নারীদের কুরআন শেখারও রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা। সেখানে ১৫ দিনের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে কুরআন ও নামাজ শেখানোর ব্যবস্থা রেখেছেন তিনি।

তবে তিনি নিজে মু’সলিম হওয়ার পর এত বিশাল সংখ্যক মানুষকে ধ’র্মে দীক্ষিত করলেও তিনি নিজে কোনো ধ’র্মীয় গ্রুপ বা দলকে সম’র্থন করেন না। বরং তার কাছে সব মু’সলমান ভাই ভাই। সবাইকে ইস’লামের দাওয়াত দিয়ে জাহান্নামের আ’গুন থেকে রক্ষা করাকেই নিজের জীবনের মিশন হিসেবে বেছে নিয়েছেন।