Home > অন্যান্য > যেভাবে উদ্ধার হলো পাঠাও রাইডারের ছিনতাইয়ের মোটরসাইকেল!

যেভাবে উদ্ধার হলো পাঠাও রাইডারের ছিনতাইয়ের মোটরসাইকেল!

মেহেদী হাসান, মোহাম্মদপুর থানার ঢাকা উদ্যান এলাকায় সপরিবারে থাকেন। সংসারে দুমুঠো অন্নের সংস্থান করতেই কষ্টে জমানো টাকায় দুই বছর আগে কিনেছিলেন টিভিএস মেট্রো প্লাস নামের একটি মোটরসাইকেল।

জীবিকার তাগিদে অনেকের মতো তিনিও শুরু করেন ভাড়ায় অনলাইন ভিত্তিক রাইড শেয়ারিং। তুলনামূলক কম যানজট এবং রৌদ্রের তীব্রতা থেকে বাঁচতে রাতেই বাইক চালাতেন তিনি।

গত ৪ নভেম্বর দিবাগত রাত ৩টার দিকে এক যাত্রীকে কল্যাণপুরে পৌঁছে দিয়ে বাসায় ফিরছিলেন মেহেদী হাসান। শ্যামলী এলাকায় দুজন পথচারী তার বাইকের সামনে দৌড়ে এসে অনুরোধ করে যে, তাদের একজন বন্ধু বাডডা এলাকায় অ্যাকসিডেন্ট করেছে। মেহেদী হাসানকে তারা অনুরোধ করে সেখানে পৌঁছে দেওয়ার জন্য।

কে জানে এ রাতটিই হবে তার জন্য নিকষ কালো অমাবস্যার মতোই বিভীষিকাময়! মেহেদী হাসান তখন ওই দুজনকে ‘পাঠাও কল’ দেওয়ার পরামর্শ দেন।

তখন তারা জানায়, অ্যাকসিডেন্টের কথা শুনে তারা তড়িঘড়ি করে বাসা থেকে বের হয়ে এসেছে। তাই যে মোবাইল ফোনটি নিয়ে এসেছে, তাতে ইন্টারনেট কানেকশন নেই।

মানবতাকে প্রাধান্য দিয়ে দুজনকে বাইকে উঠতে বলেন মেহেদী হাসান।

রাত সাড়ে ৩টার দিকে উত্তর বেগুনবাড়ি সংলগ্ন হাতিরঝিল থানাধীন বায়তুল নূর জামে মসজিদের সামনে পৌঁছাতেই বুকের ডানপাশে ধারালো কিছুর সংস্পর্শ অনুভব করেন মেহেদী হাসান। সঙ্গে সঙ্গেই তাকে নামতে বলা হয় বাইক থেকে। ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কেড়ে নেওয়া হয় তার মানিব্যাগ, মোবাইল ফোন, মোটরসাইকেল আর মোটরসাইকেলের কাগজপত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও হ্যান্ডব্যাগ।

চোখের সামনেই ছিনতাইকারীরা তার সর্বস্ব নিয়ে চলে যায়। রুটি-রুজির একমাত্র অবলম্বন মোটরসাইকেলটি  হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন মেহেদী হাসান। তার আত্মচিৎকারে কেঁপে ওঠে নিস্তব্ধ হাতিরঝিল।

উপরের ঘটনাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেন তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার। তার সরাসরি তত্ত্বাবধানে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল জোনের এডিসি হাফিজ আল ফারুকের নেতৃত্বে এসি মঈনুল ইসলাম, হাতিরঝিল থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) গোলাম আজম ও এএসআই তরিকুল ইসলামের একটি টিম গত মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর সাভারের আমিনবাজার এলাকা থেকে সুজন এবং দারুস সালাম থানার ঈদগাহ্ এলাকা থেকে রাব্বি নামের দুই ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতার দুই ছিনতাইকারী সুজন ও রাব্বির স্বীকারোক্তিতে পরদিন রাতে দারুস সালাম এলাকার ২০৫ নম্বর বাসার নিচতলা থেকে ছিনতাই হওয়া মোটরসাইকেলসহ খোয়া যাওয়া অন্যান্য মালামাল উদ্ধার করা হয়।