Home > জাতীয় > প্রেমিকার পরিবারের পিটুনিতে প্রেমিকের মৃত্যু, খবর শুনে প্রাণ গেল বাবার

প্রেমিকার পরিবারের পিটুনিতে প্রেমিকের মৃত্যু, খবর শুনে প্রাণ গেল বাবার

কুমিল্লায় প্রেমিকার সাথে দেখা করতে গিয়ে প্রেমিকার পিতা ও চাচাসহ পিটিয়ে হত্যা করেছে প্রেমিক মোহাম্মদ মাহীনকে (২২)। এদিকে ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে আধাঘন্টা সময়ের ব্যবধানে হার্ট অ্যাটাকে মাহিনের পিতা হিরন মিয়া (৬০) এর মৃত্যু হয়। রবিবার (৭ মে) সদর উপজেলার মাঝিগাছায় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতদের স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা সদর উপজেলার মধ্য মাঝিগাছা গ্রামের মোজা মিয়ার কন্যা তন্নী আক্তারের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে স্থানীয় চা-দোকানি হিরন মিয়ার পুত্র মোহাম্মদ মাহিনের। এরই সূত্র ধরে গত বৃহস্পতিবার রাতে তন্নীর সাথে দেখা করতে তার বাড়িতে আসেন মাহিন। এসময় তন্নীর পিতা এবং চাচা জাহাঙ্গীর আলম মাহিনকে ধরে ব্যাপক মারধর করেন।

একপর্যায়ে তারা ইট দিয়ে মাহিনের বুক ও মাথা থেতলে দেন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় মাহিনকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসা নিয়ে রবিবার বেলা এগারটার দিকে বাড়িতে ফেরেন মাহিন।। বাড়িতে ফেরার কিছুক্ষণ পর তার বুকে প্রচন্ড ব্যথা শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ পরই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মাহিন।

নিহত মাহিনের প্রেমিকা নুসরাত জাহান তন্নি বলেন, রমজান মাসের শুরুর দিকে আমি ও মাহিন আদালতে মাধ্যমে বিয়ে (কোর্ট ম্যারেজ) করি। গত বৃহস্পতিবার রাতে মাহিন আমাকে তার সাথে দেখা করতে বলে। সে প্রেক্ষিতে রাত এগারোটার দিকে সে আমাদের ঘরের সামনে আসলে আমার বাবা ও চাচা জাহাঙ্গীর আলম তাঁকে ধরে বেধড়ক মারধর করে। মারধরের পর তারা ইট দিয়ে মাহিনের বুক ও মাথা থেতলে দেয়। ধস্তাধস্তি শুনে আমি ঘরের বাইরে এসে দেখি মাহিন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। কিন্তু আমি যেন চিৎকার করতে না পারি এজন্য আমার চাচি আমার মুখ চেপে ধরে। এরপর আমি অজ্ঞান হয়ে যাই, আর কিছু বলতে পারব না।

তন্নী বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর আজ সে বাড়ি ফিরে কিছুক্ষণ পর সে বুকে ব্যথা অনুভব করে এবং একটু পরেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। আমি এই হত্যাকান্ডের বিচার চাই। যারা আমার মাহিনকে খুন করেছে তাদের ফাঁসি চাই।

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ হাফিজুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে মোজাম্মেল উচাতার ভাই জাহাঙ্গীর মাহিনকে বেধড়ক মারধর করেছে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে আজ সে বাড়ি ফিরে। কিন্তু একটু পরেই পুনরায় বুকে ব্যথা অনুভব করে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এই খবর শুনে অসুস্থ হয়ে পড়েন তার বাবা হিরণ মিয়া। আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য রওনা হই। কিন্তু টিক্কারচর ব্রিজের কাছে যাওয়ার পরেই হিরণ মিয়াও মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

তিনি বলেন, একটি সামান্য ঘটনায় দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি এলাকাবাসীকে ব্যথিত করেছে। আমরা দোষীদের গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ কোতয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আহাম্মদ সনজুর মোরশেদ বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।