Home > জাতীয় > ফাঁসির রায় শুনে কাঠগড়ায় সেজদা দিলেন আসামি

ফাঁসির রায় শুনে কাঠগড়ায় সেজদা দিলেন আসামি

তিন বছর আগে রাজধানীর দক্ষিণখানে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যা মামলায় বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) জুনিয়র সহকারী ম্যানেজার রাকিব উদ্দিন আহম্মেদের ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তেহসিন ইফতেখার এ রায় ঘোষণা করেন। আদালত চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণার আগে আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।

ফাঁসির রায় শুনে তা মেনে নিয়ে কাঠগড়ায় সেজদাহ দেন আসামি। আল্লাহর কাছে দুই হাত তুলে মোনাজাত করেন এবং শুকরিয়া আদায় করেন। এ সময় তিনি বলতে থাকেন, ভালো হয়েছে। পরে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী মুন্না রহমান। তিনি বলেন, ‘জুয়ার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। আমি আশা করি উচ্চ আদালতেও এ সাজা বহাল থাকবে।’

সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এ আসামি নিজেও চেয়েছিলেন তার ফাঁসির রায় হোক। তিনি তার মৃত ছেলে মেয়ের কাছে যেতে চান। রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আশা করছি, উচ্চ আদালত এ রায় বহাল থাকবে।’

মামলা থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় দক্ষিণখানের ৮৩৮ নম্বর বাসার চতুর্থ তলা থেকে মুন্নী বেগম (৩৭) এবং তার দুই সন্তান ফারহান উদ্দিন (১২) ও লাইবা রহমানের (৩) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন সকাল থেকেই ওই ভবনের বাসিন্দারা পচা গন্ধ পাচ্ছিলেন। প্রথমে অনেকেই ভেবেছিলেন, হয়ত মৃত পশু-পাখি থেকে গন্ধ আসছে। কিন্তু আশপাশে খুঁজেও সেরকম কিছু পাওয়া যায়নি। তাই সন্দেহ বাড়তে থাকে।

এ ছাড়া, নিহত মুন্নীর ভগ্নিপতি সোহেল আহম্মেদ কয়েকদিন ধরে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। এতে সবার সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। ওই দিন সকালে সোহেল আহম্মেদ তাদের খুঁজতে আসেন দক্ষিণখানের ওই বাসায়। এসে ঘরের দরজা বন্ধ পান। পরে বাড়ির মালিকের সঙ্গে পরামর্শ করে চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন তারা। এ সময় দেখতে পান মুন্নী বেগম ও তার মেয়ে লাইবার মরদেহ একটি রুমের বিছানার ওপর পড়ে আছে। অন্য কক্ষের মেঝেতে পড়ে আছে ফারহান উদ্দিনের মরদেহ। এরপর পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে দক্ষিণখান থানা পুলিশ এসে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় পরদিন নিহত মুন্নীর ভাই মুন্না রহমান দক্ষিণখান থানায় রাকিব উদ্দিন আহম্মেদকে আসামি করে মামলা করেন। ঘটনার বছরখানেক পর ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি রাকিবকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বিমানবন্দর জোনাল টিমের পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মিজানুর রহমান। মামলার বিচার চলাকালে আদালতে ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।