Home > জাতীয় > ওয়াজ মাহফিল থেকে ফেরার পথে ৩০ অটোরিকশাতে গণডাকাতি

ওয়াজ মাহফিল থেকে ফেরার পথে ৩০ অটোরিকশাতে গণডাকাতি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ওয়াজ মাহফিল থেকে রাতে ফেরার পথে ৩০টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা আটকে গণডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) ভোররাতে উপজেলার চাপরতলা ইউনিয়নের চাপড়তলা-ছাতিয়াইন সড়কের বুড়ইউরি গ্রামের পাশে এই ঘটনা ঘটে।

ডাকাতরা কমপক্ষে ৩০টি অটোরিকশা আটকে যাত্রীদেরকে মারধর করে তাদের কাছ থেকে স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন ও প্রায় নগদ ৩ লাখ টাকা নিয়ে যায়। ডাকাতদের মারধর ও দায়ের কোপে মহিলাসহ কমপক্ষে ৩০জন আহত হয়েছে। তবে পুলিশের দাবি ডাকাতদের হামলায় ৪/৫ জন আহত হয়েছেন। ডাকাতরা কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিনিয়ে নিতে চেয়েছিল কিন্তু নিতে পারেনি।

এলাকাবাসী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) রাতে উপজেলার চাপরতলা ইউনিয়নের খান্দুরা গ্রামে ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ওয়াজ মাহফিল শুনতে সেখানে হাজারও ধর্মপ্রাণ মানুষ সমবেত হন। ওয়াজ শুনে ভোর রাত ৪টার দিকে মুসল্লিরা অটোরিকশায় করে বাড়িতে ফেরার পথে চাপরতলা-ছাতিয়াইন সড়কের বুড়ইউরি গ্রামের পাশে পৌছলে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি ডাকাত দল যাত্রীবাহী ৩০টি অটোরিকশা আটক করে। পরে যাত্রীদেরকে নামিয়ে সড়কের পাশের জমিতে নিয়ে চোখ বেঁধে তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, নারীদের কাছ থেকে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুটে নেয়। যাত্রীদের চিৎকার শুনে তাদেরকে উদ্ধার করতে গেলে ডাকাতরা সাদ্দাম মিয়া নামে এক যুবকের হাতে রামদা দিয়ে কোপ দিলে তার হাতের চারটি আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

ডাকাতদের মারধরে আহতদের মধ্যে আলফাজ মিয়া, ফয়েজ মিয়া, ছোয়াব মিয়া, আলাল মিয়া, রমজান মিয়া, জোবাইদ মিয়া, আনালক মিয়া, আবু কালাম মিয়া, ভুট্টু মিয়া, হৃদয় মিয়া, আনাল হক, সাদ্দাম মিয়া, আনোয়ারা বেগম, শরিফা বেগম, ইন্তেজ আলী, লায়েছ মিয়া, ফায়েজ মিয়া ও আব্দুল মালেক মিয়ার নাম জানা গেছে। শুক্রবার সকালে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। এর মধ্যে আঙ্গুল হারানো সাদ্দামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দুপুরে ঢাকায় পাঠানো হয়।

নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ আহত আলফাজ মিয়া ও আলাল মিয়া বিডি২৪ লাইভকে বলেন, খান্দুরা গ্রামে ওয়াজ মাহফিল শুনে শুক্রবার ভোররাতে অটোরিকশাযোগে বাড়িতে আসার সময় চাপরতলা-ছাতিয়াইন সড়কের বুড়ইউরি গ্রামের পাশে পৌছলে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি ডাকাত দল আমাদের অটোরিকশাগুলো আটক করে। পরে আমাদেরকে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে পাশের জমিতে নিয়ে চোখ বেঁধে আমাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, নগদ টাকা ও নারীদের স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়।

যাত্রীদের বাঁচাতে গিয়ে সাদ্দাম নামে এক যুবক এগিয়ে আসলে ডাকাতরা রামদা দিয়ে কোপ দিয়ে তার হাতের ৪টি আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন করে। তিনি বলেন, তাদের সাথে প্রায় একশত যাত্রী ছিল। ডাকাতরা সবার মোবাইল ফোন ও টাকা পয়সা নিয়ে যায়। তাদের মারধোরে কমপক্ষে ৩০জন যাত্রী আহত হন। তিনি বলেন, শুনেছি এই রাস্তায় প্রায়ই অটোরিকশায় ডাকাতি হয়। এই রাস্তায় রাতের বেলা টহল পুলিশ থাকলে ডাকাতির ঘটনা ঘটতো না।

এ ব্যাপারে চাপরতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মনসুর আলী ও ইউপি সদস্য মো। হাবিব মিয়া আহত যাত্রীদের বরাত দিয়ে জানান, শুনেছি ভোররাতে ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফেরার পথে যাত্রীবাহী ৩০টি অটোরিকশা ডাকাতের কবলে পড়ে। ডাকাতরা তাদের কাছে থাকা নগদ টাকা পয়সা, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুল্লাহ সরকার জানান, শুক্রবার ভোররাতে বড়ইউরি গ্রামের পাশে অটোরিকশায় ডাকাতি হয়েছে বলে শুনেছি। এসময় ডাকাতদের হামলায় ৩ জন আহত হয়েছেন। ডাকাতরা কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিনিয়ে নিতে চেয়েছিল কিন্তু নিতে পারেনি। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।