Home > জাতীয় > পঞ্চম শ্রেণি পাস ড্রাইভার থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক

পঞ্চম শ্রেণি পাস ড্রাইভার থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক

এককালে ছিলেন চিকিৎসকের গাড়িচালক, তবে এখন পোশাক পালটে  নিজেই হয়ে গেছেন ফিজিওথেরাপিস্ট। এমনকি চেম্বার খুলে নিয়মিত দিতেন নানা অপচিকিৎসা। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। অবশেষে ধরা পড়লেন পুলিশের হাতে। আজ বৃহস্পতিবার সাভারের পৌরসভার ডগরমোরা এলাকা থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাস সবুজ মাতুব্বর (৩২) নামে এই ভুয়া ফিজিওথেরাপিস্টকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

অভিযুক্ত ব্যাক্তির গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলার মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার বালিয়া এলাকায়। তার বাবার নাম মৃত আবু জায়েদ মাতুব্বর। বর্তমানে তিনি সাভার পৌরসভার ডগরমোড়া এলাকায় ভাড়া থেকে ভুয়া ফিজিওথেরাপিস্ট সেন্টার পরিচালনা করতেন। অভিযোগ, দীর্ঘদিন যাবৎ ভুয়া ফিজিওথেরাপিস্ট সেজে অপচিকিৎসার মাধ্যমে অসংখ্য রোগীর কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। সবশেষ মাহমুদুল হাসান নামে প্রতিবন্দ্বী এক শিশুর বাকা পা ঠিক করার থেরাপি দিতে গিয়ে উলটো চাপ দিয়ে ভেঙে ফেলেন তিনি। ভুক্তভোগী শিশু মাহমুদুল হাসান (৫)-এর গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর থানার হরিনাগ এলাকায়। তার বাবার নাম মৃত জুয়েল মিয়া।

পরবর্তীতে এ ঘটনায় বুধবার (৪ ডিসেম্বর) ভুক্তভোগী শিশুটির মা নার্গিস আকতার বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় একটি প্রতারণা মামলা করলে অভিযুক্ত সবুজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, গত আড়াই বছর ধরে শিশু মাহমুদুলের পায়ে থেরাপি চিকিৎসা দিচ্ছিলেন প্রতারক সবুজ। এ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে থেরাপির তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন ৫ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু তারপরেও পায়ের কোন উন্নতি হয়নি। এরমাঝে গত ১৮ ডিসেম্বর থেরাপি দেয়ার নামে চাপ দিয়ে শিশুটির ডান পায়ের হাড় ভেঙে ফেলে সবুজ। এতে শিশুটির পরিবারের সন্দেহ হলে তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারে এতদিন যার কাছ থেকে চিকিৎসা নেয়া হচ্ছিল, তিনি আসলে কোন চিকিৎসকই নয়। সবুজ এর আগে সিআরপির একজন থেরাপি চিকিৎসকের গাড়ির ড্রাইভার ছিল। সেই থেরাপিস্টের কাছ থেকে দেখে থেরাপি দেয়ার কিছু কৌশল রপ্ত করে এতদিন এই প্রতারণা ব্যবসা চালিয়ে আসছিল।

সাভার মডেল থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে ওই ভুয়া ফিজিওথেরাপিস্ট ভুয়া চিকিৎসার নামে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছিল। কিছুদিন পূর্বে এক প্রতিবন্ধী শিশুকে চিকিৎসার নামে তার ডান পা ভেঙে ফেলেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা থানায় মামলা করলে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সবুজের সাথে সাথে আর কেউ জড়িত রয়েছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।