Home > জাতীয় > সারাদিন আয়াতের জামাকাপড় নিয়ে বসে থাকেন মা

সারাদিন আয়াতের জামাকাপড় নিয়ে বসে থাকেন মা

সম্পূর্ণ শরীর নিয়ে কবরে যেতে পারেনি চট্টগ্রামের শিশু আয়াত। এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া মাত্র তিনটি অংশ দিয়েই তাকে দাফন করেছে পরিবার। এর মধ্যে অজ্ঞাতপরিচয়ে একজন তার বাবাকে হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। আয়াতকে দাফন করা হয়েছে চট্টগ্রাম নগরীর বন্দরটিলা এলাকায় বাড়ি সংলগ্ন কবরস্থানে। সেখানেই স্বজন, প্রতিবেশী সবাই এসে তাদের প্রিয় সন্তানের কবরটি দেখে যাচ্ছেন একনজর।

প্রায় সারাদিনই আয়াতের জামা-কাপড় আর খেলাধুলার জিনিসপাতি নিয়ে বসে থাকেন মা শাহিদা ইসলাম তামান্না। মায়ের মন বলছে, এই বুঝি সন্তান এসে ঝাঁপিয়ে পড়বে তার কোলে। আয়াতের মা জানায়, আমার মেয়ে তার দাদা-চাচ্চুর সঙ্গে খেলতো। আমার দেবর ওরে অনেক আদর করতো।

তামান্না বলেন, ওই দিন লুকোচুরি খেলেছে আয়াত। আমি ভিডিও করেছি। আমার মেয়ে ওই ভিডিও দেখতেও পারল না। তিনি আরও বলেন, আমার মেয়ে মাদরাসায় যাইতো। আমি নিয়ে যেতাম আবার নিয়ে আসতাম। এসে নিজে নিজে গোসল করতো, খাওয়া দাওয়া করতো।

আয়াতের ছবিগুলো এখন স্মৃতি হয়ে বারবার ধরা দিচ্ছে স্বজন-প্রতিবেশীদের কাছে। একসময় বাড়ি-ঘরজুড়ে হেসে-খেলে চঞ্চলতায় মুখর করে রাখা মেয়েটি নেই। সবখানে তাই কেবলই শূন্যতা।

এদিকে হোয়াটসঅ্যাপে আয়াতের বাবাকে মেয়ের মতো ছয় টুকরো করে ফেলার হুমকি দিয়েছে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি। তার আদেশেই আয়াতকে আবির হত্যা করেছে বলে দাবি করে ওই যুবক। একটি ছবি পাঠিয়ে সেটা নিজের বলেও দাবি তার। তাই এই ঘটনার পেছনে অন্য কারো হাত আছে কিনা খতিয়ে দেখার দাবি আয়াতের পরিবারের।

তার বাবা সোহেল রানা বলেন, আমার মনে হচ্ছে এর পেছনে কোনও একটা গোষ্ঠী জড়িত আছে। তা নাহলে কেন সে বিনা স্বার্থে বাইরে থেকে আমার মেয়েকে কোলে করে নিয়ে এলো। কেনও গলা টিপে হত্যা করল। কেনও নিজের টাকা খরচ করে টেপ, ছুরি কিনল। তারপর ৬ টুকরা করে পানিতে ভাসিয়ে দিলো। সে কিন্তু এক টাকাও পায়নি।

এদিকে হোয়াটসঅ্যাপে হুমকির বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা বলছে পিবিআই। পিবিআই তদন্ত কর্মকর্তা মনোজ কুমার দে বলেন, বিষয়টি তদন্তের দাবি রাখে, যা কিছুই পাই সেটার উপরে আমরা তদন্ত করছি।

গত ১৫ নভেম্বর নগরীর বন্দরটিলা এলাকায় পাঁচ বছরের শিশু আলীনা ইসলাম আয়াতকে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ ফেলে দেয়া হয় ছয় টুকরো করে। এ ঘটনায় আটক তরুণ আবীরের দাবি, মুক্তিপণের জন্যই হত্যা করা হয়েছে আয়াতকে।