Home > জাতীয় > নোয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সোহেল বেসরকারি ফলাফলে জয়ী

নোয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সোহেল বেসরকারি ফলাফলে জয়ী

দেড়শ বছরের ঐতিহ্যবাহী নোয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনে উৎসবমূখর ভোটে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো.সহিদ উল্যাহ খান সোহেল বেসরকারি ফলাফলে বিজয়ী হয়েছেন। রোববার (১৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. রবিউল আলম বেসরকারি ফলাফলের এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে। সন্ধ্যায় ভোট গননা শেষ হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকে মো. সহিদ উল্যাহ খান সোহেল ২৬ হাজার ৪০৮ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বি কম্পিউটার প্রতীকের শহিদুল ইসলাম কিরন (স্বতন্ত্র) ৮ হাজার ৬২৮ ভোট ও মোবাইল প্রতীকের প্রার্থী লুৎফুর হায়দার লেলিন ২ হাজার ২৪৪ ভোট পেয়েছেন। মেয়র পদে ৭জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এদিকে পৌরসভার ০৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দ্বিতীয় বারের মতো কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন জেলার সিনিয়র সাংবাদিক জাহিদুর রহমান শামীম।

উৎসবমুখর এই নির্বাচনে প্রত্যেকটি ভোট কেন্দ্রে সকালের দিকে ভোটারের ভিড় থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোটারদের উপস্থিতি কমে যায়। নির্বাচনের আগে ভোটারদের মাঝে উৎকন্ঠা দেখা গেলেও ভোটের দিন কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয় ভোটগ্রহণ।

পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ৩৪টি কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ করা হয়। প্রতিকূল আবহাওয়া মাড়িয়ে সাত সকালে কেন্দ্রে হাজির হয় ভোটাররা। তবে ভোট কেন্দ্রে পুরুষের চেয়ে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল লক্ষনীয়। সকালের দিকে কেন্দ্রে ভোটারদের ছাপ থাকায় দুপুরের দিকে পৌরসভার গোপাই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে আসেন ১১০ বছর বয়সী আফিয়া খাতুন। তিনি বলেন, জীবনে হতো (হয়তো) এঠাই শেষ ভোট। তাই কষ্ট করে অ্যাইছি ভোট দিতে। ভোট দিয়ে মেলা শান্তি পাইছি।

আল ফারুক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে আসেন নাজমুন নাহার। তিনি বলেন, ইভিএমে ভোট হচ্ছে । জীবনে প্রথম ইভিএমে ভোট দিবো। তাই তাড়াতাড়ি বাড়ি থেকে আসছি। তাড়াতাড়ি ভোট দিলে তাড়াতাড়ি বাড়ি যেতে পারবো। কারামতিয়া আলিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট দেন রুনু হাসান। তিনি বলেন, এবার ভোট কেন্দ্রের পরিবেশ অনেক সুন্দর ছিল। কেউ কোন প্রভাব ঘাটাতে পারেনি। তাই শান্তিতে ভোট দিতে পেরেছি। সুশৃঙ্খল ভোট উপহার দেওয়ায় প্রশাসনকে ধন্যবাদ। গোপাই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মুহাম্মাদ মুহি উদ্দীন বলেন, সর্বাত্বক শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। এখানে ৫৬ শতাংশ ভোট পড়েছে।

জানা গেছে, নোয়াখালী পৌরসভার মোট ভোটার ৭৫ হাজার ৭২৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩৭ হাজার ৪০১ ও নারী ভোটার ৩৮ হাজার ৩২৫ জন। নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন, ৯টি ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৪ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৬৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন ছিল। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলাকালে কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচন নিয়ে কোন ধরনের অনিয়মের অভিযোগ তোলেননি মেয়র পদের প্রার্থীরা।

জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রকে আমরা গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখেছি। সেই মোতাবেক ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য ৭৫০ জন পুলিশ, ৪৫০ জন আনসার, ৩ প্লাটুন বিজিবি, ৩ প্লাটুন র‍্যাব, পুলিশের চারটি মোবাইল টিম, একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৯জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব
পালন করেন ।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু এবং সুন্দর পরিবেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে কোনো প্রকার অনিয়মের ঘটনা ঘটেনি। কেন্দ্রের ভেতরে ও বাইরে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে ছিল।