Home > অন্যান্য > রাতারাতি ১২ লাখ টিকটক স্টারের স্বপ্ন ধুলিসাৎ

রাতারাতি ১২ লাখ টিকটক স্টারের স্বপ্ন ধুলিসাৎ

সীমান্ত বিরোধে ভারত চীনা অ্যাপস বন্ধ করে দিয়েছে। আর মধ্যে আছে টিকটকও। ভারতেই চীনা ভিডিও শেয়ারিং সাইটটি জনপ্রিয় ছিল সবচেয়ে বেশি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, দেশটিতে টিকটক নিষিদ্ধ হওয়ায় পথে বসেছেন প্ল্যাটফর্মটির স্টাররা। যাদের অনেকেরই লাখ লাখ ফলোয়ার।

সুরাটের টিকটক স্টার শিবানী কাপিলা জানান, দু’বছর ধরে তিল তিল করে গড়ে তোলা জীবন এক লহমার শেষ হয়ে গিয়েছে। প্রায় ১০.৬ মিলিয়ন ফলোয়ার্স ছিল তাঁর। ছোট ভিডিও বানিয়ে টিকটকের জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন শিবানী। হিউম্যান রিসোর্স এক্সিকিউটিভের চাকরি ছেড়ে টিকটক থেকেই রোজগারের পথ খুঁজে ছিলেন তিনি।

সঙ্গীতা জৈন, টিকটকে প্রায় ১০ মিলিয়ন ফলোয়ার্স পেয়েছিলেন ইনি। টিকটক এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আইন-কানুন নিয়ে অনুশীলন করছিলেন সঙ্গীতা। হুইল চেয়ারে বসে টিকটক থেকে রোজগারের পথ খুঁজে নিয়েছিলেন তিনি। প্রায় তিনটি ভিডিও প্লাটফর্মে তার চ্যানেল ছিল। সেখানে কিভাবে নিজের উন্নতি করবেন এবং আত্মনির্ভর হয়ে উঠবেন এরকম বেশ কিছু আত্মজাগরণ ঘটানোর ভিডিও তৈরি করতেন সঙ্গীতা। পাশাপাশি গ্রামীণ ভারতীয়দের জন্য ইংরেজি ক্লাস করাতেন তিনি।

এরকম সঙ্গীতা, শিবানীর মত বহু টিকটক স্টার শুধুমাত্র তাদের প্লাটফর্ম হারিয়েছে এমনটা নয়, এক ধাক্কায় তাদের সমস্ত অনুগামীদের হারিয়ে ফেলেছেন তাঁরা। এখনও টিকটকের অনুকরণে তৈরি প্রতিদ্বন্দ্বি অ্যাপ ভারতে জায়গা করতে পারেনি। কাজেই প্রায়, ১.২ মিলিয়নেরও বেশি টিকটক স্টার দ্বিতীয় কোনো রোজগারের পথ খুঁজে পায়নি।

কনটেন্ট মার্কেটিং এবং ডিজাইন কোম্পানি আধিকারিক ইরফান খান বলেন, টিকটকে নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর বহু প্রভাবশালী কর্মচারীকে তার কাজ হারাতে হয়েছে। তবে এই নিষেধাজ্ঞার স্থায়িত্বকাল কত দিন তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। যদি তিন-চার মাসের বেশি হয় তাহলে একটা বিরাট প্রভাব পড়তে চলেছে ভারতীয় বাজারে।

কনটেন্ট নির্মাণকারীদের একটা বড় তছনছ হয়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন খান। যত দ্রুত সম্ভব টিক টক এর অনুকরণে তৈরি একটি ভিডিও প্লাটফর্ম ভারতে নিয়ে এই মুহূর্তে খুবই প্রয়োজনীয়।

২৯ জুন তারিখে টিক টক এর উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করার পূর্বে চিনের বাইরে প্রতিমাসে সক্রিয় ইউজার ছিল প্রায় ২০০ মিলিয়ন। প্রতি ভিডিওর দৈর্ঘ্য ১৫ থেকে ৬০ সেকেন্ড। ভারতীয়দের মধ্যে টিক টক এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছিল।

ভারতীয় বিভিন্ন ভাষায় টিকটক ব্যবহার করা যেত বলে আরো বেশি আকৃষ্ট হয়েছিল মানুষ। জীবনের একঘেয়েমি কাটাতে অ্যাপের ব্যবহার করতেন অনেকে। একটি ভিডিও তৈরি করতে কি কি প্রয়োজন এবং কেমন করে করতে হবে এই নিয়ে ভাবা তো মানুষকে। এক লাখ ফলয়ার্স পার করলেই, হাতের কাছে চলে আসতো ব্র্যান্ড এবং বিজ্ঞাপন দাতাদের সঙ্গে চুক্তির পরামর্শ। যে চুক্তির কারণে হাতে নগদ টাকা পেতেন টিক টক স্টাররা। কাজেই রোজগারের তাগিদে ফলোয়ার্স বাড়ানো একটা অন্যতম প্রথম কাজ হয়ে উঠেছিল তাদের।