Home > জাতীয় > সিনেমার কাহিনির মতো সবজি টোকাই থেকে ভয়ংকর দুর্ধর্ষ ডাকাত ওরা

সিনেমার কাহিনির মতো সবজি টোকাই থেকে ভয়ংকর দুর্ধর্ষ ডাকাত ওরা

সিনেমার কাহিনির মতো ছেলেবেলা কেটেছে তাদের রাজধানীর কারওয়ানবাজারে সবজির বাজারে।রাজধানীর কারওয়ানবাজারে সবজি টোকাতে গিয়েই বন্ধুত্ব হয় ওদের। কাজের ফাঁকে টুকটাক চুরিও করতো। সেসব অ’পরা’ধে হিরো হওয়ার বাহাদুরিও ফলাতো। তারপর সময়ের ধাক্কায় তারা আলাদা হয়ে যায়। জীবিকার প্রয়োজনে ছুটতে থাকে। বয়সও বাড়তে থাকে।

সিনেমার কাহিনির মতোই একদিন হঠাৎ করে সেই কারওয়ানবাজারেই আবার তাদের দেখা। ছেলেবেলার সেই স্মৃতিগুলো গল্পের ফাঁকে উঠে আসে। তারা যে ছোটবেলার ছোট-খাট চু’রির অভ্যাস এখনও ছাড়তে পারেনি গল্পে গল্পে সেটাও জানা হয়ে যায়। এরপরই গল্পের মোড় নেয় অন্যদিকে।

এবার তারা ছোট খাট নয় একজোট হয়ে বড় বড় কাজ করার পরিকল্পনা করে। যেমন ভাবা তেমনি শুরু করা কাজ। দল বেঁধে তারা নেমে পড়ে বড় অ’প’রাধে। করোনা মহামারির মধ্যে যখন চারদিকে লকডাউন তখন তাদের মাথায় আসে আনকোড়া আইডিয়া। গত ১ এপ্রিল রাতে তারা মোহাম্মদপুরের কলেজ গেটে বিল্লাহ ফার্মায় ডাকাতি করে।

করোনার কা’র’ণে তারা সিদ্ধান্ত নেয় ডাকাতিকালে মাস্ক পরার। ফলও ভালো পায়। এরপর ৫ এপ্রিল খিলগাঁওয়ের লাজ ফার্মায় একই স্টাইলে তারা ডাকাতি করে তারা।

ফার্মেসি
কারওয়ানবাজারের সবজি টোকাই থেকে ভ’য়ঙ্ক’র ডা’কাত হয়ে ওঠা এই চক্রের মূল দুই হোতার নাম সোহেল (৩৬) ও টিটু। তাদের সহযোগী সোহরাব (৩০), নেওয়াজ (২২), শাহীন (২৫) ও রাজু (২৫)। করোনা আ’ত’ঙ্কের মধ্যে ডাকা’তির আ’ত’ঙ্ক ছড়িয়ে দেয়া ভ’য়ঙ্ক’র এই ডা’কাতদের ঘটনায় গোটা পু’লি’শ বাহিনী সতর্ক হয়ে যায়।

এমনকি তারা ওষুদের দোকানের নিরাপত্তাও বাড়িয়ে দেয়। এরপর ডিবি পশ্চিমের উপকমিশনার গোলাম মোস্তফা রাতুলের নেতৃত্বে পু’লি’শি অ’ভিযা’ন চলে। এতে মোহাম্মদপুরের বিল্লাল ফার্মা ও খিলগাঁওয়ের লাজ ফার্মায় চা’ঞ্চ’ল্যকর ডা’কাতির ঘটনার মূল হোতা সোহেলসহ পাঁচজন গ্রে’প্তা’র হয়। নাগালের বাইরে থেকে যায় টিটু।

এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পু’লি’শের গো’য়েন্দা শাখা (ডিবি) পশ্চিমের পল্লবী জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহদাত সোমা ও মোহাম্মদপুর জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপকমিশনার আনিছউদ্দিন। শাহদাত সোমা বলেন, গত ১ এপ্রিল রাত অনুমান পৌনে ১টার দিকে মোহাম্মদপুরের কলেজ গেটে বিল্লাহ ফার্মা ও ৫ এপ্রিল খিলগাঁওয়ের লাজ ফার্মায় একই স্টাইলে ডা’কা’তির ঘটনা ঘটে।

তারা প্রথমে একটি পিকআপ করে মুখে মাস্ক ও গামছা পেঁচিয়ে আসে। ওষুধের ওইসব দোকানে গিয়ে চা’পাতি, দা ও লোহার র’ডের ভ’য় দেখিয়ে নগদ ১৬ হাজার টাকা, মোবাইল ও ল্যাপটপ নিয়ে যায়। এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর ও পল্লবী থা’নায় পৃথক মা’ম’লা দায়েরের পর পু’লি’শের পাশাপাশি গো’য়েন্দা পশ্চিম বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনাল টিম ও পল্লবী জোনাল টিম ছায়া ত’দ’ন্ত শুরু করে।

লাজ ফার্মায় থাকা সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে জ’ড়িতদের গ্রে’প্তা’র করা হয়। সে সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ডা’কাতি কাজে ব্যবহৃত পিক আপ, চা’পাতি, দা, লো’হার রড ও নগদ ৫ হাজার টাকা।

গ্রে”প্তার হওয়ার পর তারা বিস্তারিত জানায় পু’লি’শ কর্মকর্তাদের। সবজি টোকাই থেকে এমন দু’র্ধ’র্ষ হয়ে ওঠার গল্প প্রকাশ করে। তাদের দেয়া তথ্যমতে, কারওয়ানবাজারে সবজি ক্যারি করা ও টোকাতে গিয়েই ছোট বেলায় বন্ধুত্ব হয় তাদের। সে সময়ও টুকটাক চুরি করতো। পরে এক সময় আলাদা হলেও কয়েক বছর আগে একত্রিত হয় তারা।

দলের হোতা টিটু ও সোহেল মিলে বড় কাজের পরিকল্পনা করে। এজন্য টিটু ও সোহেল দুটি দলে ভাগ হয়ে কাজ করলেও ওষুধের দোকানে ডাকাতিগুলো একসঙ্গে করে তারা। এমনটা ভেবে ওষুধের দোকানে ডা’কাতির পরিকল্পনা করে তারা।

এ জন্য মিরপুর শাহআলী এলাকা থেকে ৩ টনের একটি পিকআপ ছি’নতা’ই করে। ওই পিকআপ ব্যবহার করেই ডা’কাতি হয়। বিল্লাল ফার্মায় ডা’কাতির পর মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধে এক পাজারো থামিয়ে ৭ হাজার টাকা ছি’নতা’ই করে। শনিবার (১১ এপ্রিল) রামপুরায় ভ্যানে বিক্রি করা চিংড়ি মাছ ছিনিয়ে নেয় তারা।

শাহদাত সোমা বলেন, সোহেল ছাড়া এ চ’ক্রের আরেক সদস্য টিুটুকে আমরা আ’ট’কের চেষ্টা করছি। এছাড়াও এ চ’ক্রের আরো কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।