Home > অন্যান্য > ৩০ দেশের ওপর দিয়ে পায়ে হেঁটে হজ্ব আদায়, ১০৭ বছর বয়সেও থেমে নেই দ্বীনের কাজ

৩০ দেশের ওপর দিয়ে পায়ে হেঁটে হজ্ব আদায়, ১০৭ বছর বয়সেও থেমে নেই দ্বীনের কাজ

বয়সের কারণে ন্যুজে গেছেন। দৃষ্টিশক্তি, শ্রবণশক্তিও কিছুটা কমে গেছে। লা’ঠি ছাড়া ঠিকমতো হাঁটতে পারেন না আর। কিন্তু ৩০ দেশের ওপর দিয়ে পায়ে হেঁটে হ’জে যাওয়ার কোনো স্মৃ’তিই ভুলে যাননি ১০৭ বছরের হাজি মোহাম্ম’দ মহিউদ্দিন। কেউ জিজ্ঞাসা করতেই মুখ থেকে ঝরতে থাকে কথার ফুলঝুরি। সবার কাছে বলতে চান সেসব দিনের কথা। আহ্বান জানান, সবাইকে একবার হলেও আল্লাহর ঘর তওয়া করার।

দিনাজপুর সদর উপজে’লার রামসাগর দিঘীপাড়া গ্রামের মৃ’ত ইজার পণ্ডিত ও মমিরন নেছার ছেলে তিনি। জাতীয় উদ্যানের বায়তুল আকসা জামে ম’সজিদের সাবেক ই’মাম এই হাজি মো. মহিউদ্দিন।পায়ে হেঁটে হ’জ করতে যেতে তার সময় লেগেছিলো আঠারো মাস। এ আঠারো মাসে তিনি পাড়ি দিয়েছেন কয়েক হাজার কিলোমিটার পথ। এ সময় তিনি সফর করেছেন ৩০টি দেশ। আর যে দেশগুলো তিনি সফর করেছেন সেগুলোর নাম এখনো মুখস্থ বলতে পারেন।

১৯১৩ সালে জন্ম নেয়া এই অদম্য মানুষটির বয়স এখন ১০৭। হাজি মহিউদ্দিন দীর্ঘদিন রামসাগর জাতীয় উদ্যানে অবস্থিত বায়তুল আকসা ম’সজিদের দীর্ঘদিন ই’মাম ছিলেন। বয়সের ভারে ই’মামের পদ থেকে অবসর নিলেও ছাড়েননি ইস’লামের সেবা করা। তাই তিনি ম’সজিদের সামনের রাস্তার ধারে ১টি চেয়ার ও ১টি টেবিল নিয়ে বসে পড়েছেন। সারাদিন রামসাগরে আগত দর্শনার্থীদের কাছ থেকে ম’সজিদের উন্নয়নের জন্য সাহায্যও চান। যে টুকু জীবন তিনি আর বাঁচবেন সে টুকু জীবন ইস’লামের সেবা করে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে তার।

আবার অনেক দর্শনার্থী তার হেঁটে হ’জ করার কথা শুনে তার সঙ্গে দেখাও করতে আসেন। তার মুখে শোনেন কী’ভাবে আর কোন দেশের উপর দিয়ে হেঁটে হ’জ করতে গেলেন। তবে দর্শনার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দিতে তিনি কোনো দ্বিধাবোধ করেন না। সব সময় তাদেরকে সব কিছু খুলে বলেন। সারাদিন যদি ২০ জন দর্শনার্থী আসেন, হেঁটে হ’জ করার বিষয় প্রশ্ন করলেও তিনি ২০ জনকেই সব উত্তর বলে দেন। হন না কোনো রকম বির’ক্ত। ১৯৬৮ সালে হ’জ করার উদ্দেশ্যে পায়ে হেঁটে দিনাজপুর থেকে রওনা দেন৷

দিনাজপুর থেকে রংপুর হয়ে প্রথমে ঢাকার কাকরাইল ম’সজিদে যান। সেখানে গিয়ে পায়ে হেঁটে হ’জ পালনের ইচ্ছা প্রকাশ করলে, তৎকালীন কাকরাইল ম’সজিদের ই’মাম মাওলানা আলী আকবর হেঁটে যেতে ইচ্ছুক অন্য ১১ জন হ’জযাত্রীর সঙ্গে তাকে পরিচয় করিয়ে দেন। শুরু হয় ১২ জনের হ’জযাত্রা। চট্টগ্রাম দিয়ে ভারত হয়ে পাকিস্তানের করাচি মক্কি ম’সজিদে গিয়ে অবস্থান করে সৌদি আরবের ভিসার জন্য আবেদন করেন।