না ফেরার দেশে চলে গেলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও অবিভক্ত ঢাকার শেষ সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা। (ইন্নালিল্লাহি … রাজিউন)।
নিউইয়র্কে চিকিৎসাধীন বাংলাদেশ সময় আজ সোমবার (৪ নভেম্বর) বেলা ১টা ৫০ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বামপন্থী রাজনীতি দিয়ে শুরু হয়েছিল সাদেক হোসেন খোকার রাজনৈতিক জীবন। তবে পন্থী রাজনীতি ছেড়ে আশির দশকে বিএনপিতে যোগ দেন খোকা। তার সবচেয়ে কৃতিত্ব আজও মনে রেখেছে পুরান ঢাকার হিন্দু সম্প্রদায়।
সময়টা ১৯৯0 সাল। সেই সময় ভারতের ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ভেঙে দেন। এতে ভারতে সাম্প্রদায়িক দা’ঙ্গা’র শুরু হয়। সেই রেশ এসে কিছু পড়ে বাংলাদেশেও। বিশেষ করে বাবরি মসজিদ ভাঙা কেন্দ্র করে পুরান ঢাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হা’ম’লার চেষ্টা ঘটে।
কিন্তু সেটা রুখে দেন সাদেক হোসেন খোকার প্রতিরো’ধ ও দৃঢ় নেতৃত্ব। তার বলিষ্ঠ পদক্ষেপে পুরান ঢাকায় ভারতের সেই ঘটনার আঁচ তেমন একটা পড়েনি। এমন ভূমিকা নিয়ে পুরান ঢাকাবাসীর আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করেন খোকা। তাদের হৃদয়ে স্থান করে নেন তিনি এবং একজন অপ্রতিদ্বন্দ্বী জনপ্রিয় নেতা হয়ে ওঠেন।
সেই জনপ্রিয়তার প্রমাণ মেলে ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে। খোকা ঢাকা-৭ আসন (সূত্রাপুর-কোতোয়ালি) প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হয়ে আলোচনায় আসেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে ঢাকার আটটি আসনের মধ্যে সাতটিতে বিএনপি প্রার্থীর ভরাডুবি হয়। কিন্তু একমাত্র খোকা নির্বাচিত হন। তার জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি।
সেই সময় মহানগর বিএনপির আহ্বায়কের দায়িত্ব দেয়া হয় তাকে। ২০০১ সালের নির্বাচনেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ। সেই সময় তাকে মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়।
ওই সময় পুরান ঢাকায় বিএনপির রাজনীতিতে নিজস্ব বলয় তৈরির পাশাপাশি প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ডে দলকে শক্তিশালী করার পেছনে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
২০০২ সালের ২৫ এপ্রিল অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন। ২০১১ সালের ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত টানা ১০ বছর বিএনপি ও আওয়ামী লীগের শাসনামলে ঢাকা মহানগরের মেয়র ছিলেন সাদেক হোসেন খোকা।