নাম আবু বক্কর। বয়স ৪৫। এরই মধ্যে বিয়ে করেছেন ৬০ টি। বিয়ে করাই তার ব্যবসা। দেশের বিভিন্ন জেলায় নানা পরিচয়ে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে বিয়ে করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়াই তার ব্যবসা। বিপত্তি ঘটে নেত্রকোণার পূর্বধলা গ্রামের ৬০ তম বিয়ে করার সময়।
মাস্টার্স পড়ুয়া ৬০ তম স্ত্রী রোজী খানম ধরে ফেলেন তার প্রতারণা। অবশেষে তার দায়ের করা মামলায় শনিবার রাতে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার গোয়ালের চর ইউনিয়নের সভারচর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে ইসলামপুর থানা পুলিশের সহায়তায় প্রতারক আবু বক্কর(৪৫) কে গ্রেফতার করে পূর্বধলা থানা পুলিশ। তাকে আটকের পর বেরিয়ে আসে প্রতারক বক্করের আসল রূপ। সে সভারচর গ্রামের বাদশা মিয়ার পুত্র।
পূর্বধলা থানায় আবু বক্করের ৬০ তম স্ত্রী রোজী বেগমের দায়ের করা মামলায় জানা যায়, আবু বক্কর (৪৫) রোজী বেগমের আত্মীয়রে সাথে পূর্ব পরিচিত হওয়ায় ওই এলাকায় যাতায়াত করতো বক্কর। সে একটি ওষুধ কোম্পানির জেলা এরিয়া ম্যানেজার পরিচয় দিত।
অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে গত আগস্ট মাসে নাম শাহিন আলম, পিতা আক্রাম, গ্রাম-কুতুবেরচর, সাধুরপাড়া, বকসীগঞ্জ ঠিকানা ব্যবহার করে রোজিকে বিয়ে করে। সেই থেকে রোজীর বাড়িতে বসবাস করে বক্কর।
এ সময় রোজী পরিবারের যৌতুকের ২ লাখ টাকা দাবি করে। এতে রোজীর পরিবার অপারগতা প্রকাশ করে। পরে চিটার বক্কর কৌশলে শ্যালককে ঔষধ কোম্পানিতে চাকরি দেওয়ার কথা বলে শশুরের নিকট ৮০ হাজার টাকা নিয়ে চম্পট দেয়।
কয়েকদিন পর থেকেই তাদের সাথে সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে স্ত্রী রোজীর পরিবার খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে বিয়ের নামে প্রতারণা করেছে বক্কর।
প্রতারক আবু বক্কর জানায়, সে ৬০টি বিয়ে করলেও ৭ সন্তানের জনক। শুধু টাকার লোভে বিয়ে করতো। টাকা পেলেই ফেলে আসে বিবাহিত স্ত্রীদের। বক্কর পেশায় ব্যবসা কোথাও রিপেজেন্টেটিভ, অবিবাহিত, বৌ মারা গেছে এসব কথা বলে বিভিন্ন নাম ঠিকানা ব্যবহার করে বিয়ে করতো। নিজ উপজেলা ইসলামপুরের ঠিকানা সে কখনই ব্যবহার করতো না।
বর্তমানে নিজ বাড়িতে প্রথম স্ত্রী সাজেদা বেগমসহ দুই স্ত্রী ও সাত সন্তান রয়েছে।
ইসলামপুর থানা ওসি তদন্ত আনছার আলী জানান, প্রতারণা করে বক্কর প্রায় ৬০টি বিয়ে করেছে। সে নিজের দোষ স্বীকার করেছে। এলাকায় তাকে চিটার বক্কর বলে চিনে। পূর্বধলা থানায় স্ত্রী রোজি খানমের মামলায় ইসলামপুর থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে আটক করে পুর্বধলা থানায় পাঠানো হয়েছে।