অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকা শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন। তার নিকটাত্মীয়রা বলছেন, নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটানের মেমোরিয়াল স্লোন কেটেরিং ক্যান্সার সেন্টারে চিকিৎসাধীন খোকার শারীরিক অবস্থা পরিবর্তনের আশা ছেড়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
তাকে এখন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে উচ্চমাত্রার অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে। খোকার শেষ ইচ্ছে ছিল দেশে ফেরার, কিন্তু পাসপোর্ট না থাকার কারণে সেটিও সম্ভব হচ্ছে না বলেও জানিয়েছে পরিবারের সদস্যরা।
২০১৭ সালে খোকা ও তার সঙ্গে থাকা স্ত্রীর পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে। বাংলাদেশ কনস্যুলেটে তাদের পাসপোর্ট নবায়নের জন্য আবেদন করলেও নতুন করে আর পাসপোর্ট পাননি। এই অবস্থায় পাসপোর্ট না থাকায় দেশেও ফিরতে পারছেন না তারা।
এদিকে বিরোধী দলের রাজনীতি করলেও খোকার খোঁজ খবর নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জানা গেছে খোকার শেষ ইচ্ছার বিষয়ে অবহিত প্রধানমন্ত্রী। সাদেক হোসেন খোকার শেষ ইচ্ছানুযায়ী যদি তাকে বাংলাদেশে সমাহিত করতে হয় তাহলে সেভাবে যেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় সে বিষয়েও নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর এমন মনোভাবে পরই সাদেক হোসেন খোকার পরিবারকে দেশে আসার উপায় জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ শাহরিয়ার আলম। তিনি খোকার পরিবারকে ট্রাভেল পারমিটের আবেদনের পরামর্শ দিয়েছেন। প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, খোকা এবং তার স্ত্রীর কাছে বাংলাদেশি পাসপোর্ট নেই। তাই ট্রাভেল পারমিটই একমাত্র ব্যবস্থা।
রোববার দুপুরে ফেসবুকে নিজের ভেরিফাইড পেজে পররাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী এক পোস্টে বলেন, নিউইয়র্কে সাদেক হোসেন খোকার পরিবার ‘ট্রাভেল পারমিট’ এর জন্য আবেদন করলে আমাদের মিশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তিনি এবং তার স্ত্রীর যেহেতু পাসপোর্ট নেই সেহেতু আন্তর্জাতিক ভাবে অন্য দেশ থেকে নিজের দেশে ফিরার এটাই একমাত্র ব্যবস্থা।
তিনি আরও বলেন, তিনি (খোকা) এবং তার স্ত্রীর নামে মামলা আছে এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও থাকতে পারে (আমি নিশ্চিত নই) কিন্তু মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের সাথে কথা বলে যা জেনেছি, তাদের আগমনের পর বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হবে।
সেক্ষেত্রে খোকার পরিবার আবেদন করলে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ দূতাবাস প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি আমাদের নিউইয়র্কের কনসুলেটে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি।’
উল্লেখ্য, সাদেক হোসেন খোকা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বিএনপি করলেও আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক ছিল।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা যখন দেশ পরিচালনায় আসেন তখন ঢাকার মেয়র ছিলেন সাদেক হোসেন খোকা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তাকে সেই পদ থেকে অপসারণ করেননি। বরং দীর্ঘ ২ বছর তাকে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিয়েছিলেন।