Home > জাতীয় > সারাদেশ > দুই বছরের ছেলেকে হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন মা

দুই বছরের ছেলেকে হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন মা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় দুই বছরের সন্তান মো. রাফিরকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করলেন মা। ৩০ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার রূপসদী ইউনিয়নের মধ্যপাড়া এলাকার একটি বিল থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আটক হওয়ার পর সন্তানকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন মা সানোয়ারা বেগম (২৭)।

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আনিসুর রহমান নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান, স্বামী মো. ফারুক মিয়া সৌদি আরব যাওয়ার সময় স্বজনদের কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই টাকা শোধ দিতে না পারায় দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে ‘হতাশাগ্রস্ত’ হয়ে পড়েন সানোয়ারা বেগম। আর সেই হতাশা থেকেই ছোট ছেলে রাফিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে এসপি আনিসুর রহমান জানান, প্রায় ১০ বছর আগে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ভেলানগর গ্রামের আশরাফ জালালীর ছেলে মো. ফারুক মিয়ার সঙ্গে একই উপজেলার মধ্যপাড়ার সাগর মিয়ার মেয়ে সানোয়ারা বেগমের বিয়ে হয়। এর কিছুদিন পর ফারুক মিয়া একটি ম্যাচ ফ্যাক্টরিতে চাকরির সুবাদে ঢাকায় চলে যান। এরপর সেই চাকরি ছেড়ে সৌদি আরব পাড়ি জমান। অপরদিকে শ্বশুরবাড়িতে স্থান সংকুলান না হওয়ায় সানোয়ারা বাবার বাড়ি এসে বড় চাচার ঘরে বসবাস শুরু করেন।

তিনি আরও জানান, রাফি একটি বিরল রোগে আক্রান্ত ছিল। শরীরের কোথাও আঘাত পেলে রক্ত জমাট বাঁধার পাশাপাশি সামান্য কেটে গেলে ক্ষতস্থান থেকে রক্ত পড়া বন্ধের জন্য হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো লাগতো। স্বামী বিদেশে যাওয়ার প্রায় তিন বছর হতে চললেও রাফির বিরল রোগের চিকিৎসা ও সাংসারিক খরচের পর ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ‘হাতাশাগ্রস্ত’ হয়ে পড়েন সানোয়ারা।

এ থেকেই গত ৩০ অক্টোবর ভোরে রাফিকে প্রশ্রাব করার জন্য ঘরের বাইরে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তিনি। এরপর বাড়ির পাশে একটি বিলের কচুরিপনার ওপর রাফির মরদেহ ছুড়ে ফেলে দেন। পরে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

হত্যকাণ্ডের ঘটনায় রাফির দাদা আশরাফ জালালী ওই দিনই বাঞ্ছারামপুর মডেল থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ ‘সন্দেহজনক আচরণ’ দেখে সানোয়ারাকে আটক করে। পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদে ছেলে হত্যার দায় স্বীকার করেন তিনি।