চূড়ান্ত উত্তেজনার মধ্যেই বিভক্ত করা যাচ্ছে ভূস্বর্গ খ্যাত ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর (জম্মু-কাশ্মীর)। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে অঞ্চলটিকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। অঞ্চলটির সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থ বিবেচনা করেই সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে বলে দাবি ভারতীয় কেন্দ্র সরকারের।
সূত্রের বরাতে ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘বিবিসি নিউজ’ জানায়, দিল্লি সরকার কিছুক্ষণ আগে এক বিবৃতির মাধ্যমে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখকে আনুষ্ঠানিকভাবে দুই ভাগে বিভক্ত করে। নতুন ব্যবস্থায় এখন থেকে জম্মু-কাশ্মীর একটি অঞ্চল এবং চীনের সীমান্তবর্তী লাদাখ পৃথক অঞ্চল হিসেবে পরিচিতি পাবে।
মূলত এর মাধ্যমে দুটি নতুন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে সরাসরি রাজধানী দিল্লি থেকে শাসন করা হবে। যা কাশ্মীর ইস্যুতে গত আগস্টে ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন বিজেপির নেওয়া বিতর্কিত পদক্ষেপের অংশ বলে দাবি বিশ্লেষকদের।
কাশ্মীরকে দুই ভাগ করার এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ইস্যুতে এরই মধ্যে অঞ্চলটিতে এক চূড়ান্ত উত্তেজনা বিরাজ করছে। যার অংশ হিসেবে গত কয়েকদিন যাবত অঞ্চলটিতে নিয়মিত হামলা চলছে। গত এক সপ্তাহে কাশ্মীরে হামলায় ভারতীয় সেনাসহ প্রাণ হারিয়েছিলেন অন্তত ১২ জন।
এর আগে গত ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করেছিল ক্ষমতাসীন মোদী সরকার। যার প্রেক্ষিতে পরবর্তীকালে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে বিতর্কিত লাদাখ ও জম্মু-কাশ্মীর সৃষ্টির প্রস্তাবেও সমর্থন জানানো হয়।
জম্মু-কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিলের পর থেকেই অঞ্চলটিতে প্রায় ১০ লাখ সেনা মোতায়েন করে ভারত। বন্ধ করে দেওয়া হয় মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সেবা। এর মধ্যে সেখানে মোবাইল ফোন সেবা চালু হলেও ইন্টারনেট সেবা এখনো স্বাভাবিক হয়নি।
এসবের মধ্যেই চলমান কাশ্মীর ইস্যুতে পাক-ভারত মধ্যকার সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে একে একে ভারত সরকারের সঙ্গে বাণিজ্য, যোগাযোগসহ সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিয়েছে প্রতিবেশী পাকিস্তান। যদিও এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে ভারত পাশে পেয়েছে রাশিয়াকে এবং পাক সরকারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশ ইরান ও এশিয়ার পরাশক্তি চীন।