Home > বিউটি টিপস > ‘তারুণ্য’ ধরে রাখবেন যেভাবে

‘তারুণ্য’ ধরে রাখবেন যেভাবে

হাসতে গেলে হঠাৎ করে ঠোঁটের কিনারা কুঁচকে যাচ্ছে! বয়সের ছাপ পড়ে যাচ্ছে কেমন নিজের অজান্তেই!নিজেকে একটু বেশিই খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছেন কি? দ্রুত বুড়িয়ে যাচ্ছেন?

বার্ধক্য একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। তবে দেখা গেছে কেউ কেউ তুলনামূলক দ্রুত বুড়িয়ে যান। আবার কারও চেহারা দেখে বয়স বোঝার উপায় থাকে না। বয়সের তুলনায় চেহারায় তারুণ্যের ছাপ দেখা যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চেষ্টা করলে অর্থাৎ কিছু নিয়ম মেনে চললে নিজের তারুণ্য ধরে রাখা যায়। সব বয়সেই সুন্দর থাকতে চাইলে, তারুণ্য ধরে রাখতে চাইলে কিছু নিয়ম কিছু মেনে চলতেই হবে।

নিয়মিত চেকআপ

আগেই বলেছি বয়সকে অস্বীকার করে লাভ নেই। চল্লিশের পর থেকে যত রোগবালাইয়ের আক্রমণ শুরু। কে কখন শরীরে বাসা বাঁধে ঠিক নেই। তাই বলে আমরা শরীরকে পর্যুদস্ত করতে দেব কেন? তাই প্রতিবছর অন্তত একবার নিজের চেকআপ করিয়ে নিন। রক্তে শর্করা, লিপিড প্রোফাইল, হিমোগ্লোবিন, থাইরয়েড হরমোন, রক্তচাপ ইত্যাদি পরীক্ষা করা চাই। চাই চোখ ও দাঁতের পরীক্ষা। শরীরটাকে ভালোবাসুন। এর যত্ন নিন। যত্ন নিন ত্বকের, চুলের, পায়ের, চোখের—সবকিছুর। কোনো সমস্যা ধরা পড়লে তাকে গ্রহণ করে নিন, আর সঠিক বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা নিন। রোগবালাই তো থাকবেই, এর সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে চলতে হবে জীবনে।

পুষ্টিকর খাবার

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খাওয়ার ব্যাপারেও সচেতন হতে হবে। অ্যান্টি অক্সিডেন্টযুক্ত খাবার খেতে হবে। ভিটামিন ‘এ’, ভিটামিন ‘সি’ ও ভিটামিন ‘ই’ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এজন্য প্রচুর পরিমাণে রঙ্গিন ফলমূল ও সবুজ শাকসবজি খেতে হবে। খাবারের পাতে মাংসের পরিবর্তে মাছ বেশি করে খান।

বিশ্রাম ও ঘুম

পরিণত বয়সে দায়িত্ব বাড়ে। কর্মক্ষেত্রে বা বাড়িতে ব্যস্ততাও বাড়ে। বাড়ে চাপ—স্ট্রেস। চারদিক সামলে চলতে হয় মেয়েদের। তারপরও দিনে অন্তত ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা বিশ্রাম বা ঘুম দরকার। যত কাজের চাপই থাকুক, রাতের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাবেন না। গবেষণা বলছে রাত জাগার সঙ্গে ঝুঁকি বাড়ে স্থূলতা, হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপসহ নানা রোগের। রাত জাগলে আপনার কর্মস্পৃহা যাবে কমে, কাজে মনোনিবেশ করতে পারবেন না। রাত দশটার মধ্যে বিছানায় যান, ভোর থাকতে উঠে কাজ শুরু করুন। ঘুমের সময় কম্পিউটার, মুঠোফোন, টেলিভিশন বা কোনো ধরনের স্ক্রিন ব্যবহার করবেন না।

ত্বকের প্রতি খেয়াল

ত্বক নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে। হাত ও পায়েরও যত্ন নিতে হবে ঠিকমত কারণ ত্বকের যত্নে ক্ষেত্রে আমরা এদের কথা সাধারণত ভুলে যাই। রোদে বের হলে অবশ্যই সান্সক্রিম ব্যবহার করতে হবে অথবা সঙ্গে রাখতে হবে ছাতা।

শরীরচর্চা

নিয়মিত শরীরচর্চা ও হাঁটাচলা শরীরকে রাখে উপযুক্ত, মনেও আনে প্রশান্তি। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও শরীরচর্চার কোনো বিকল্প নেই। সুনিদ্রা সুস্বাস্থ্যের বড় বন্ধু। নিয়মিত শরীরচর্চা সুনিদ্রার সহায়ক। শারীরিক ও মানসিক অবসাদ দূরীকরণে এর কোনো বিকল্প নেই।

শরীর সুস্থ থাকলে মনও ভালো থাকে। কিন্তু মাঝ বয়সে এসে বেশির ভাগ নারীই আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন। চামড়ায় ভাঁজ পড়ে গেছে, চুল পড়ে যাচ্ছে, সাজগোজ করে আর কি হবে? ভালো থাকার চেষ্টা করে কি হবে?- এমন ধারণা মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে। তাই বয়স বেড়ে চলেছে—এ চিন্তাকে উড়িয়ে দিয়ে জীবনটা উপভোগ করুন। বাঁচার মতো করে বাঁচুন সুন্দরভাবে।

নিজেকে সময় দিন

মানসিক চাপ ও স্ট্রেস কমাতে নিজেকে সময় দিন। হয়তো চাকরি-বাকরি, ব্যবসা, অফিস, সংসার, ছেলেমেয়ে নিয়ে হাঁসফাঁস অবস্থা, তবু নিজের জন্য আনন্দময় সময় বের করুন। বন্ধুদের ভুলে যাবেন না। পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে এক সন্ধের আড্ডা সারা মাসের ক্লান্তি ধুয়ে মুছে দেবে।